October 11, 2024, 4:34 am

সংবাদ শিরোনাম
শ্রীমঙ্গলের রিসোর্ট থেকে অতিরিক্ত সচিবের মৃতদেহ উদ্ধার রংপুরে দলীয় পরিচয়ে নিয়োগ পাওয়া টিসিবি ডিলারদের অনেকেই পলাতক থাকায়,পণ্য বিক্রয়ে অচলাবস্থা নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা সংশোধন করিতে হবে – পর্ব ৯ আসন্ন শারদীয়া দুর্গাপূজা শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রশাসন ও জনগণের প্রীতি আহ্বান – পর্ব ৮ প্রশাসন সংস্থা ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থা চলতে পারে না-পর্ব ৭ মাতৃভূমির এক ইঞ্চি জমি ছাড় দেওয়া হবে না, পর্ব ৬ স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪)

২১ আগস্ট হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড ছিল ভয়াবহ সমরাস্ত্র

২১ আগস্ট হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড ছিল ভয়াবহ সমরাস্ত্র

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট পরিচালিত হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেডগুলো ছিল ভয়াবহ সমরাস্ত্র। রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান গতকাল সোমবার ষষ্ঠ দিনের মতো যুক্ততর্ক শুনানিতে এ বক্তব্য পেশ ধরেন। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ অসমাপ্ত অবস্থায় মামলার কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মূলতবি করা হয়েছে। রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এ মামলার বিচার চলছে। যুক্ততর্কে সৈয়দ রেজাউর রহমান আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এলাকায় ২১ আগস্ট ৯টি স্থানে গ্রেনেডগুলো বিস্ফোরিত হয়। পরে অবিষ্ফোরিত ৪টি গ্রেনেড উদ্ধার হয়। যার ৩টি জব্দ করা হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে এ জাতীয় গ্রেনেড সমরাস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ গ্রেনেডগুলো পাকিস্তান ও অষ্ট্রিয়ায় তৈরি হয়। ২১ আগস্ট হামলার পর অবিস্ফোরিত অবস্থায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ’র বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার হওয়া গ্রেনেড বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা করানোর পর ভয়াবহ এ তথ্য পাওয়া যায়। যা মামলায় সাক্ষ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে যুক্তিতর্কে তা তুলে ধরেন সৈয়দ রেজাউর রহমান। তিনি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে যে সব অস্ত্র ব্যবহৃত হয় তা ২১ আগস্ট হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে যা ইতিহাসে নজিরবিহীন। প্রধান কৌঁসুলি বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী সাবেক বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ভয়াবহ নৃশংস ও বর্বরোচিত ওই হামলা চালানো হয়। বিএনপি নেতা তারেক রহমানের তৎকালীন রাজনৈতিক কার্যালয় হাওয়া ভবনসহ আটটি স্থানে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা ঘটনোর প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা করা হয়। সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ওই হামলার পর ভয়াবহ এ ঘটনার বিষয়ে ৭টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। যা এ মামলায় উল্লেখ রয়েছে। মামলাটি মোট ৬ জন কর্মকর্তা তদন্ত করেন। তদন্ত কর্মকর্তাদের এ মামলা তদন্তে কি কি ভূমিকা ছিল তা তিনি গতকাল সোমবার যুক্তিতর্কে তুলে ধরেন। মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার সঙ্গে যুক্ত থাকায় এর মধ্যে যারা যারা আসামি রয়েছেন তাদের বিষয় রাষ্ট্রপক্ষ উল্লেখ করেছেন। সৈয়দ রেজাউর বলেন, মামলায় ৬১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর রাষ্ট্রপক্ষের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটি তদন্তের ভার পান সিআইডির পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ। তিনি প্রায় এক বছর ১০ মাস তদন্ত করে ২০১১ সালের ৩ জুলাই বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম যুক্ত করে মোট ৫২ জনের নামে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। প্রথম অভিযোগপত্রে ২২জনকে আসামি করা হয়েছিল। প্রধান কোঁসুলিকে যুক্তিতর্ক পেশে আরো সহায়তা করছেন আইনজীবী মোশররফ হোসেন কাজল, খন্দকার আবদুল মান্নান, আকরাম উদ্দিন শ্যামল, ফারহানা রেজা, আমিনুর রহমান, আবুল হাসনাত ও আশরায় হোসেন। অপরদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী নজরুল ইসলাম, আবদুল সোবহান তরফদারসহ অন্যান্যরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নৃশংস, চাঞ্চল্যকর ও ভয়াবহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গত ২৩ অক্টোবর থেকে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু হয়েছে। স্পর্শকাতর ও আলোচিত এ মামলায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সিআইডির জ্যেষ্ঠ বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দসহ ২২৫ জনের সাক্ষ্য দিয়েছেন। এরপর আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য পেশ ও আসামীপক্ষ সাফাই সাক্ষ্য নেয়া হয়। বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের এক সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই নৃশংস হামলায় ২৪ জন নিহত ও নেতকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের পতœী আইভি রহমান। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচন্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এ ঘটনায় পরদিন মতিঝিল থানার তৎকালীন এসআই ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে থানা পুলিশ। পুলিশের তদন্তের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পায়। পরে মামলাটি যায় সিআইডিতে। ২০০৮ সালের ১১ জুন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ২০০৯ সালের ৩ অগাস্ট রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটির অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করে। মামলাটি তদন্তের ভার পান সিআইডির পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ। তিনি ২০১১ সালের ৩ জুলাই বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম যুক্ত করে মোট ৫২ জনের নামে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি অভিযোগপত্র দেন। অভিযুক্ত আসামীদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ফাঁসি হয়। মামলার আরেক আসামি মুফতি হান্নানের ফাঁসি হয়েছে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলার মামলায়। মামলার আসামি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু কারাগারে রয়েছে। এ মামলায় পুলিশের সাবেক আইজি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদাবক্স চৌধুরী এবং সাবেক তিন তদন্ত কর্মকর্তা- সিআইডি’র সাবেক এসপি রুহুল আমিন, সিআইডি’র সাবেক এএসপি আতিকুর রহমান ও আবদুর রশিদ জামিনে রয়েছে। তারেক রহমান, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৮ জন এখনো পলাতক।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর