January 15, 2025, 7:48 pm

সংবাদ শিরোনাম
ভিসা জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে পরিবহন ব্যাবসার ধ্বস তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি প্রজেক্টরে ভেসে উঠায় স্থানীয় জনতার প্রতিবাদ ঢাকায় দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করলেন সন্ত্রাসীরা: বেনাপোলে ভারতীয় ভয়ঙ্কর ট্যাপেন্টাডোল জব্দ মধুপুর উপজেলা মেম্বার ফোরামের উদ্যোগে তিন শতাধিক কম্বল বিতরণ লামায়-আলীকদম অনুপ্রবেশকালে ৫৮ মিয়ানমার নাগরিকসহ ৫ দালাল আটক শিবচরে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের লিফলেট বিতরন মধুপুর উপজেলা মেম্বার ফোরামের উদ্যোগে তিন শতাধিক কম্বল বিতরণ সেনাবাহিনীর অভিযানে নবীগঞ্জ থেকে দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

আধুনিক চিকিৎসা অ্যাজমার

আধুনিক চিকিৎসা অ্যাজমার

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

সারাবিশ্বের বছরে প্রায় ১০ কোটি লোক শ্বাসনালির সচরাচর সমস্যা অ্যাজমায় আক্রান্ত্ম হয়। তাদের ৯০%-এরও বেশি অত্যাধুনিক চিকিৎসা পায় না এবং অনেক রোগী মারা যায়। যদিও এ মৃত্যুর ৮০% প্রতিরোধ করা সম্ভব, যদি আধুনিক চিকিৎসা ও ডাক্তারের তদারকির মাধ্যমে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণের শিক্ষা দেয়া যায়।

 

অ্যাজমা কী?

অ্যাজমা বা হাঁপানি আসলে শ্বাসনালির অসুখ। যদি কোনো কারণে শ্বাসনালিগুলো অতিমাত্রায় সংবেদনশীল (হাইপারসেনসিটিভ) হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের উত্তেজনায় উদ্দীপ্ত হয় তখন বাতাস চলাচলের পথে বাধার সৃষ্টি হয়, ফলে শ্বাস নিতে বা ফেলতে কষ্ট হয়।

 

কেন হয়?

জেনেটিক পরিবেশগত কারণে কারো কারো বেশি হয়ে থাকে। ঘরবাড়ির ধুলা-ময়লায় মাইট জীবাণু, ফুলের বা ঘাসের পরাগরেণু, পাখির পালক, জীবজন্তুর পশম, ছত্রাক, কিছুকিছু খাবার, কিছুকিছু ওষুধ, নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি থেকে অ্যালার্জিজনিত অ্যাজমা হয়ে থাকে।

অ্যাজমায় কেন এ শ্বাসকষ্ট?

আমাদের শ্বাসনালিগুলো খুবই ক্ষুদ্র। ২ মিলিমিটার থেকে ৫ মিলিমিটার ব্যাসবিশিষ্ট। চারদিকে মাংসপেশি পরিবেষ্টিত। এ ক্ষুদ্র শ্বাসনালির ভেতর দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় খুব সহজেই বাতাস আসা-যাওয়া করতে পারে। যদি কখনো অ্যালার্জিক বা উত্তেজক কোনো জিনিস শরীরে প্রবেশ করে তখন শ্বাসনালির মাংসপেশিগুলো সংকুচিত হয়। ফলে শ্বাসনালি সরম্ন হয়ে যায়। তা ছাড়া উত্তেজক জিনিসের প্রভাবে শ্বাসনালির গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় আঠালো মিউপাস জাতীয় কফ, আর ইনফেকশনের কারণে শ্বাসনালির ভেতরের দিককার মিউকাস আরবণী আঠালো কফ উঠিয়ে ফেলার লক্ষ্যে অনবরত কাশি হয়ে থাকে। কখনো কখনো এ শ্বাসনালি এত সরম্ন হয় যে বাতাস বায়ুথলিতে পৌঁছায় না, তখন শরীরে অক্সিজেনের অভাব হয়। এটা খুবই মারাত্মক অবস্থা। এ অবস্থা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলে অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারে।

 

বংশগতভাবে অ্যাজমার ঝুঁকি কতটা?

মাতৃকুলে হাঁপানি থাকলে তিন গুণ বেশি রিস্ক আর পিতৃকুলে হাঁপানি থাকলে অনেকটা কম রিস্ক। মায়ের হাঁপানি থাকলে মোটামুটিভাবে বলা হয় তিন সন্ত্মানের মধ্যে একটির হাঁপানি, একটির আপাত সুস্বাস্থ্য এবং একটির অস্বাভাবিক শ্বাসনালির সংকোচন থাকতে পারে। শেষেরটির হাঁপানি না হয়ে সর্দি-কাশির প্রবণতা থাকতে পারে।

 

কীভাবে এ রোগ চিহ্নিত করা যায়

অ্যাজমা রোগের প্রধান উপসর্গ বা লক্ষণগুলো হলো-

০ বুকের ভেতর বাঁশির মতো সাঁই সাঁই আওয়াজ।

০ শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট।

০ দম খাটো অর্থাৎ ফুসফুস ভরে দম নিতে না পারা।

০ ঘন ঘন কাশি।

০ বুকে আঁটসাঁট বা দমবন্ধ ভাব।

০ রাতে ঘুম থেকে উঠে বসে থাকা।

আপনার হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে বুঝবেন কীভাবে? উপশমকারী ওষুধের পরিমাণ বাড়তে থাকা এবং ইনহেলার দ্বারা উপশম তিন-চার ঘণ্টার বেশি না থাকা। রাতে শ্বাসকষ্টে ঘুম ভেঙে যাওয়া, স্বাভাবিক কাজকর্মে শ্বাসকষ্ট হওয়া। পিক ফ্লো ধীরে ধীরে কমা। এসব উপসর্গের উপস্থিতি মানে আপনার হাঁপানি আর নিয়ন্ত্রণে নেই।

 

মারাত্মকভাবে আক্রান্ত্ম কি না

বুঝবেন কীভাবে?

যখন উপমশকারী ইনহেলার ব্যবহার করে ৫-১০ মিনিটের ভেতর শ্বাসকষ্ট লাঘব হচ্ছে না তখন বুঝতে হবে আপনার হাঁপানি মারাত্মক অবস্থা ধারণ করতে যাচ্ছে।

রোগীর সঠিক পর্যবেক্ষণ গুরম্নত্বপূর্ণ কারণ অ্যাজমার উপসর্গ ও তীব্রতা পরিবর্তিত হয়, ফলে চিকিৎসা পরিবর্তন হতে পারে। অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হতে পারে। নতুন সংযোজন, পুনঃপরীক্ষণ এবং তাগিদের দরকার হতে পারে।

 

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা কী?

০ রক্ত পরীক্ষা : বিশেষত রক্তে ইয়োসিনোফিলের মাত্রা বেশি আছে কি না তা দেখা

০ সিরাম আইজিইর মাত্রা : সাধারণত অ্যালার্জি রোগীদের ক্ষেত্রে আইজিইর মাত্রা বেশি থাকে

০ স্কিন প্রিক টেস্ট : এ পরীক্ষায় রোগীর চামড়ার ওপর বিভিন্ন অ্যালার্জেন দিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং এ পরীক্ষায় কোন কোন জিনিসে রোগীর অ্যালার্জি আছে তা ধরা পড়ে

০ প্যাস টেস্ট : এ পরীক্ষা রোগীর ত্বকের ওপর করা হয়

০ বুকের এক্স-রে : হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরম্নর আগে অবশ্যই বুকের এক্স-রে করে নেয়া দরকার যে অন্য কোনো কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কি-না

০ স্পাইরোমেট্রি বা ফুসফুসের ক্ষমতা দেখা : এ পরীক্ষা করে রোগীর ফুসফুসের অবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারণা করা যায়

 

অ্যাজমার জরম্নরি প্রাথমিক চিকিৎসা?

উপশমকারী ওষুধ ৫-১০ মিনিট পর আবার নিতে হবে। নিজেকে শান্ত্ম রাখুন, স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে চেষ্টা করম্নন। যেভাবে বসলে আরাম লাগে সেভাবে বসুন। আপনার হাত হাঁটুর ওপরে রাখুন, যাতে সোজা হয়ে বসে থাকতে পারে। শ্বাস তাড়াহুড়া করে নেবেন না, তাড়াহুড়া করে শ্বাস নিলে অবসাদগ্রস্ত্ম হয়ে যাবেন। যত দ্রম্নত সম্ভব ডাক্তার বা সাহায্যকারীর শরণাপন্ন হোন।

 

সমন্বিতভাবে অ্যালার্জির চিকিৎসা-

০ অ্যালার্জেন পরিহার : হাঁপানির হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে সহজ পন্থা হলো যে জিনিসে অ্যালার্জি তা যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলা। তাই অ্যাজমা রোগীদের প্রথমেই অ্যালার্জি টেস্ট করে জানা দরকার তার কিসে কিসে অ্যালার্জি হয়।

০ ওষুধ প্রয়োগ : নানা ধরনের হাঁপানির ওষুধ আছে। প্রয়োজনমতো ওষুধ ব্যবহার করে রোগী সুস্থ থাকতে পারেন। সাধারণ দুই ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

ক. শ্বাসনালির সংকোচন প্রসারিত করতে ওষুধ ব্যবহার করা ব্রঙ্কোডাইলেটর যেমন- সালবিউটামল, থিউফইলিন, ব্যামবুটারসন। এ ওষুধগুলো ট্যাবলেট, সিরাপ, ইনজেকশন, ইনহেলার হিসেবে পাওয়া যায়।

খ. প্রদাহ নিরাময়ের ওষুধ যেমন- কর্টিকোস্টেরয়েড (বেকলোমেথাসন, ট্রাইঅ্যামসিনোলোন, ফ্লোটিকাসন) এগুলো ইনহেলার রোটাহেলার ইত্যাদি ব্যবহৃত হয় এবং লিউকোট্রাইন নিয়ন্ত্রক- মন্টিলুকাস্ট, জাফিরলুকাস্ট ব্যবহার করা।

 

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর