October 6, 2024, 9:36 am

সংবাদ শিরোনাম
স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪) ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে গড়তে হলে সংস্কার প্রয়োজন=== বৈষম্য বিরোধী অভিভাব ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে অদ্ভুতুরে কাণ্ডকীর্তি ভোলা বোরহানউদ্দিনে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকগণের ১০ম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন শারদীয় দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষে বগুড়ায় বিএনপির মতবিনিময় সভা! লক্ষ্মীপুরে কুমিরের আতঙ্কে এলাকাবাসী সাংবাদিক পুত্র আবির হোসেন অনন্ত’র জন্মদিন আজ বিল্লাল হুসাইন

মালয়েশিয়া যেতে সেই ‘দুষ্টচক্রের’ ফাঁদে শ্রমিকরা!

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে কেন শুধু ২৫টি সংস্থাকেই অনুমোদন দেয়া হয়েছে–মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রীর কাছে সেই ব্যাখ্যা দাবি করেছে সেখানকার অভিবাসী শ্রমিক অধিকার গোষ্ঠীগুলো। তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই দাবি তুলেছেন দেশটির সেলাঙ্গর প্রদেশের ক্লাংয়ের পার্লামেন্ট সদস্য চার্লস সান্টিয়াগো।

তাদের শঙ্কা, এতে একটি চক্র শ্রমিকদের কাছ থেকে ধাপে ধাপে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ পাবে। সহায়-সম্বল বিক্রি করে অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য বিদেশে পাড়ি জমানো শ্রমিকদের ঋণের বোঝা আরও অসহনীয় হয়ে উঠবে।

এমন প্রেক্ষাপটে অভিবাসী শ্রমিক শোষণ ও নিপীড়ন সমস্যার সমাধানে মালয়েশিয়া কীভাবে সহায়তা করবে, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার (১২ জুন) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চার্লস সান্টিয়াগো এসব তথ্য দিয়েছেন।

কর্মী পাঠাতে কেবল ২৫টি সংস্থাকে অনুমোদন দেয়ায় মালয়েশিয়ায় যেতে আগ্রহী বাংলাদেশিরা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়তে পারে। সিন্ডিকেটের ফাঁদে পড়ে অনেক বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হবে তাদের। এতে আর্থিক খেসারত ছাড়াও ভোগান্তির শেষ থাকবে না শ্রমিকদের।

তবে এখন পর্যন্ত অনুমোদিত সংস্থাগুলোর নাম প্রকাশ করেনি মালয়েশিয়া সরকার। জানা গেছে, এসব সংস্থা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমিনুল ইসলাম বিন আব্দুল নূর নামের এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে। মালয়েশিয়ায় তিনি ‘দাতু আমিন’ নামে পরিচিত। এর আগেও হাজার হাজার শ্রমিককে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তিনি বেস্টিনেট কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা।

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ফরেন ওয়ার্কার্স সেন্ট্রালাইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (এফডব্লিউসিএমএস) মাধ্যমে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এতে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে দাতু আমিন নামের এই আদম ব্যবসায়ীর। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে শ্রমিকদের কাছ থেকে ধাপে ধাপে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পথ তৈরি করা হয়েছে।

২০১৮ সালে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে একচেটিয়া আধিপত্য থাকা একটি সিন্ডিকেটের নেপথ্যে ছিলেন তিনি। শ্রমিকদের দুর্ভোগের কারণে ইতোমধ্যে এফডব্লিউসিএমএস-কে মেয়াদোত্তীর্ণ, বিতর্কিত ও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থা আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি তোলা হয়েছে।

গত বছর ঢাকায় ‘বায়রা সিন্ডিকেট নির্মূল ঐক্যজোট’ নামের একটি সংগঠন অভিযোগ করেছিল, এফডব্লিউসিএমএস-কে ব্যবহার করে দাতু আমিন বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। শূন্য খরচের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এফডব্লিউসিএমএস ও এসপিপিএ-র ফাঁদে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা খুইয়ে বিদেশ পাড়ি দিতে হয়েছিল শ্রমিকদের। যার নেপথ্যে দাতু আমিনের বেস্টিনেট কোম্পানি।

এদিকে মালয়েশিয়ার বিয়ন্ড বর্ডারসের সভাপতি মাহি রামকৃষ্ণন বলেন, কীভাবে ২৫টি সংস্থাকে বাছাই করা হয়েছে, মানবসম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভাননকে সেই ব্যাখ্যা দিতে হবে। সাধারণ মানুষ তার কাছ থেকে এসব তথ্য জানতে চাচ্ছে। সেখানে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল আছে কি না? এসব এজেন্টের কাছ থেকে কেউ বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে কি না, তা-ও জানা দরকার।

বছর তিনেক আগে বেস্টিনেটের বিরুদ্ধে সাড়ে ১৮ কোটি রিঙ্গিত দুর্নীতির অভিযোগ তোলে নেপাল সরকার। পরে দেশটিতে এ কোম্পানির সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়।

এফডব্লিউসিএমএসের ফাঁদে ফেলে মেডিকেল ও নিরাপত্তা ছাড়পত্রের আড়ালে কোটি কোটি টাকা লুটে নেয় বেস্টিনেট। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে কলিং ভিসার আবেদন করার প্রক্রিয়ার তদন্তে উঠে আসে বিস্ময়কর সব তথ্য। কর্মীর মেডিকেল ও আইএসসি বাবদ ৩০৫ রিঙ্গিত নিয়োগকর্তা সিনারফ্লাক্সের ব্যাংক হিসাবে জমা পড়লেও সেই তথ্য গোপন করে আবারও বায়োমেডিকেল ও আইএসসি ফিঙ্গারপ্রিন্টের নামে জোরপূর্বক হাতিয়ে নিত অতিরিক্ত অর্থ।

এর আগে সারাভানান নিজেও বলেছেন যে দেশ ত্যাগের আগে বাংলাদেশি এজেন্টদের অর্থ সংগ্রহ করা বন্ধ করার ক্ষমতা তার নেই। এতেই বোঝা যাচ্ছে, বিদেশে রিক্রুটিং এজেন্টরা শ্রমিকদের কাছ থেকে হাজার হাজার রিঙ্গিত ফি আকারে লুটপাট করছে। এসব ফি পরিশোধ করার পরই কাজের জন্য অনুমতি পান শ্রমিকরা।

প্রশ্ন রেখে মাহি রামকৃষ্ণন বলেন, ‘আমাদের দেশে লাখ লাখ শরণার্থী এবং অভিবাসীকে বৈধতা না দিয়ে আবার কেন শ্রমিক আনতে হবে?’ তার এ প্রশ্নের জবাব সরকারের কাছ থেকে মেলেনি।

গেল এপ্রিলে মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা ফেডারেশন একটি বিবৃতি জারি করে সরকারকে শরণার্থী এবং কাগজপত্রহীন অভিবাসী শ্রমিকদের বৈধভাবে কাজ করার অনুমতি দিতে অনুরোধ জানিয়েছিল। যদিও তাদের আবেদনে কান দেয়নি মালয়েশিয়া সরকার।

শ্রমিক সংকটে মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলো বিদেশি ক্রয়াদেশ নিতে পারছে না। উৎপাদন কমে যাওয়ায় ক্রেতাদের ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে তারা। এতে কোটি কোটি ডলার হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে কোম্পানিগুলোর। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ১০ লাখের বেশি শ্রমিক সংকট রয়েছে। এতে তাদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার চেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর