দারুণ সাড়া প্রথম ৪ দিনেই
ডিটেটিভ বিনোদন ডেস্ক
দর্শকপ্রিয় অভিনেতা জিতু আহসান। ছোট পর্দায় অভিনয় করছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। অনেকবার বড় পর্দার জন্য কাজের প্রস্তাব পেলেও মনের মতো স্ক্রিপ্ট বা চরিত্র না পাওয়ার কারণে রূপালী পর্দায় কাজ করা হয়ে ওঠেনি তার। অবশেষে বদরুল আনাম সৌদের পরিচালনায় ‘গহীন বালুচর’ ছবিতে তিনি কাজ করেছেন। তাও আবার নেতিবাচক চরিত্রে। এ ছবিতে তার চরিত্রের নাম হানিফ শিকদার।
শুক্রবার ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। আর নিজের অভিনীত প্রথম এ ছবি মুক্তির প্রথম চার দিনেই দারুণ সাড়া পেয়েছেন এই অভিনেতা। ছবিটি নিয়ে জিতু আহসান বলেন, এর আগে ১৯৮৪ সালে আবদুল লতিফ বাচ্চুর পরিচালনায় ‘লাল বেলুন’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলাম। বলা যায়, এটা আমার শিশুবেলায় করেছিলাম। তবে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অনেকবারই অভিনয় করার প্রস্তাব পেলেও মনের মতো চরিত্র না পাওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত করা হয়নি। অবশেষে এ ছবির কাহিনি ও চরিত্রটি আমার ভালো লেগেছে। নিজের অভিনয় ক্যারিয়ারে প্রথম ছবিতে নেতিবাচক চরিত্র কেন বেছে নিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে জিতু আহসান বলেন, এর আগে সৌদের পরিচালনায় বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছি। তাই সম্পর্কের বোঝাপড়ার কারণে তিনি কোনো নাটকের জন্য তারিখ চাইলে এখন আর স্ক্রিপ্টটা দেখতে চাই না। অন্যান্যের বিষয়ে আমি বেশ খুঁতখুঁতে স্বভাবের। কেউ কোনো কাজের কথা বললে প্রথমেই আমি স্ক্রিপ্টটা দেখতে চাই। কিন্তু সৌদের ‘গহীন বালুচর’-এর সময়ে তিনি আমাকে একদিন ফোন করে জানালেন যে, আমি একটি ছবির কাহিনি লেখা শুরু করেছি। আর এখানে মূল ভিলেনের চরিত্রটা সবে লেখা শুরু করেছি। এটা শেষ করার পর যদি মনে হয় আপনাকে স্ক্রিপ্টটা পাঠানো যায় অর্থাৎ যদি লেখা শেষে মনে হয় চরিত্রটি সেভাবে দাঁড়িয়েছে, আমি কি আপনাকে পাঠাবো? তখন আমি জবাবে বললাম, হ্যাঁ, অবশ্যই পাঠান। এরপর বেশ কয়েকদিন বাদে সৌদ স্ক্রিপ্টটা পাঠানোর পর আমার মনে হলো এই চরিত্রটা আমি করতে চাই। আমার মাথায় এটা আসেনি যে, আমি নায়কের চরিত্রে করতে চাই। কাজটা করতে রাজি হয়ে গেলাম। এরপর তো কাজ শুরু। ছবির লোকেশন ছিল বরিশাল বিভাগের দপদপিয়া গ্রাম, কীর্তনখোলাসহ বেশ কিছু জায়গায়। এখানে কাজ করতে গিয়ে অভিজ্ঞতা কেমন ছিল জানতে চাইলে জিতু বলেন, এটা নতুন একটা জায়গা। সাধারণত আমরা পুবাইল বা উত্তরায় যেভাবে কাজ করি, সে অনুযায়ী সেখানকার পরিবেশ ও মানুষজন সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। সেখানকার মানুষ শুটিংয়ের সঙ্গে পরিচিত না। তবে জায়গাটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল। কারণ পরিচিত কোনো লোকেশন ছিল না এটা। টুকটাক সমস্যা হলেও আমি পুরো শুটিং সময়টা বেশ এনজয় করেছি। ছবি মুক্তির পর কেমন সাড়া পাচ্ছেন অভিনেতা জিতু আহসান? উত্তরে বলেন, বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমিসহ ছবির পুরো টিম প্রথম দিন কয়েকটা সিনেমা হলে গিয়েছিলাম। যাওয়ার পর দুই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে। একটা হচ্ছে, মানুষ ছবি দেখে বের হওয়ার পর খুব উল্লসিত, আনন্দিত। বের হয়ে আমার সঙ্গে ছবি তুলতে চাইছে, দর্শক বলছে যে চরিত্রটা তারা পছন্দ করেছে। আর একটা হচ্ছে, সিনেমা হলে দর্শকের পাশে বসে যখন সিনেমা দেখছিলাম তখন অনেকে আমাকে দেখেনি। তবে যখন সিনেমায় আমার একটি দৃশ্যে আমাকে পেটানো হচ্ছে তখন দর্শক গালি দিচ্ছে, তালি দিচ্ছে, চিৎকার করে বলছে ‘মার’। অন্য রকম একটা ক্রাউড। সিনেমা হলে বসে দর্শক সাড়া খুব ভালো পেয়েছি আমি। আর এটা বেশ এনজয়ও করেছি। সবশেষে জিতু বলেন, ‘গহীন বালুচর’ ছবির গল্পটি পড়ে আমার মনে হয়েছিল আমি যদি বড় পর্দায় আসি তবে এই চরিত্রটির মাধ্যমে আসতে চাই। কারণ হানিফ শিকদারের চরিত্রটা আমাকে খুব টেনেছে, এজন্যই আমি ছবিতে কাজ করেছি। পরে এ ধরনের চরিত্রের প্রস্তাব পেলে এবং আমার চরিত্র পছন্দ হলে অবশ্যই চলচ্চিত্রে কাজ করবো। সেটা ভিলেন হোক বা সেন্ট্রাল কোনো চরিত্র হোক।