April 27, 2025, 8:29 pm

সংবাদ শিরোনাম
ভারতে কারাভোগের শেষে বেনাপোল স্হল পথে দেশে ফিরলো ৭ বাংলাদেশি যুবক নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা সীমান্তে চোরাইপণ্য আনতে গিয়ে স্থলমাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশীর পা বিচ্ছিন্ন চলন্ত ট্রেনে মোবাইল ছিনতাই গুরুতরভাবে আহত ছিনতাইকারী আটক বেনাপোলে ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে ৬ নারী আটক বড়দরগা হাইওয়ে থানা কর্তৃক ৩০ বোতল ফেনসিডিল সহ একজন গ্রেফতার শেরপুর আবাসিক এলাকায় দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার -১ সিলেটে আখড়ার সম্পত্তি বিক্রি মন্দির কমিটির নেতাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যশোরে মাদক কারবারিদের পক্ষ নেয়ায় বৈষম্যবিরোধী নেতা সুজনকে গণধোলাই রানা ঝড়-মিরাজ ঘূর্ণিতে টেস্ট জয়ের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো বাংলাদেশ টেকনাফে রোহিঙ্গা মানব পাচারকারী আবদুল্লাহর নানান অপকর্ম থেকে নেই? মিথ্যা আশ্রয় নিয়ে প্রতি পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা

ফুলছড়া চা বাগান মাঠে গারোদের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান ওয়ানগালা উৎসব পালিত

ডিটেকটিভ ডেক্স:

মৌলভীবাজারের শ্রীমেঙ্গলে চা বাগানের ভেতর প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর পালিত হয়েছে গারো সম্প্রদায়দের ওয়ানগালা নবান্ন উৎসব। গারো জাতিগোষ্ঠীর বিশ্বাস, ‘মিশি সালজং’ বা শস্যদেবতার ওপর ভরসা রাখলে ফসলের ভালো ফলন হয়। দেবতাকে নতুন ফসলের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এবং নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতি চেয়ে তারা পালন করেন এই উৎসব। এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য আগামী বছরে যেন ফসল ভালো হয়। তাদের সন্তান ও পরিবার-পরিজনরা যেন ভালো থাকে।

পাহাড়ে বসবাসকারী উপজাতি নৃ-গোষ্ঠি গারোদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ও কৃষ্টির অন্যতম উৎসব হলো নবান্ন বা ওয়ানগালা উৎসব।

১ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১১ টায় গারো যুব সংগঠনের আয়োজনে শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া চা বাগান মাঠে থক্কা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ওয়ানগালা অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। গারো সমপ্রদায়ের নারীরা নাচে-গেয়ে অতিথিদের বরণ করে নিয়ে আসেন উৎসব স্থলে।

উৎসবের প্রথম পর্বে ক্রুশচত্বরে বাণী পাঠ, থক্কা প্রদান, জনগণকে থক্কা দেয়া, পবিত্র খ্রীষ্টযাগ, দান সংগ্রহ, আলোচনা সভা ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। মূলত এ অনুষ্ঠানটি গারোদের হলেও খৃষ্ঠান ধর্মাবলম্বীরা সেখানে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানাদি পরিচালনা করেন।

গারোদের মূল ধর্ম ছিল সাংসারেক এখন খৃষ্ঠানদের সাথে মিশে গেছে। ‘ওয়ানা’ শব্দের অর্থ দেবদেবীর দানের দ্রব্যসামগ্রী আর ‘গালা’ অর্থ উৎসর্গ করা। দেবদেবীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও মনোবাসনার নানা নিবেদন হয় এ উৎসবে। সাধারণত বর্ষার শেষে ও শীতের আগে, নতুন ফসল তোলার পর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এর আগে নতুন খাদ্যশস্য খাওয়া নিষেধ থাকে এ সম্প্রদায়ের জন্য। তাই অনেকেই একে নবান্ন বা ধন্যবাদের উৎসবও বলে থাকেন।

ওয়ানগালা উদযাপন কমিটির আহবায়ক পার্থ হাজং, শিক্ষার্থী সালছিনা, থাং সুয়া, কিলি আশকরা, বেবিনা রং দি সহ অনেকেই বলেন দেবতার সন্তুষ্টির পাশাপাশি এই আয়োজনের উদ্দেশ্য আমাদের ভাষা-সংস্কৃতিকে জাগ্রত রাখা। নতুন প্রজন্মকে এ সম্পর্কে জানানো আর এই সাথে সবার একই স্থানে এইকই উদ্দেশ্যে মিলিত হয়ে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করা। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদি ছাড়াও আয়োজন করা হয় তাদের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা।

আলোচনা পর্বে শ্রীমঙ্গল ক্যাথলিক মিশনের প্রধান পুরোহিত ফাদার ড. জেমস শ্যামল গমেজ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইসলাম উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য প্রীতম দাশ, ফিনলের উপ-মহা ব্যবস্থাপক (ডিনস্টন ডিভিশন) হুমায়ুন কবির মজুমদার, মাজদিহি চাবাগানের ব্যবস্থাপক মো: শাহরিয়ার পারভেজ, হরিণছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক বিকাশ সিনহা প্রমুখ।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গারো কিশোরীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী গান ‘ওয়ানগালা ওয়ানগালা’ গানের সাথে নৃত্য করে। এছাড়াও বিভিন্ন গারো লাইন থেকে আসা কিশোরীরা একেরপর এক নৃত্য পরিবেশন করে।

ফুলছড়া চা বাগান মাঠে ওয়ানগালাটি মিলন মেলায় পরিণত হয়। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও ভাল ফসল লাভের আশায় পালন করা হয় এই ওয়ানগালা। তিনদিনব্যাপী উৎসবকে নিয়ে ছিল নানা বর্ণিল আয়োজন। এবছর তাদের আয়োজন ছিল ৭ম বারে মতো। শেষে গারো সম্প্রদায়দের বিভিন্ন সফল কর্মে জড়িত ও অতিথিদের দেয়া হয় সম্মাননা।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর