January 16, 2025, 8:04 pm

সংবাদ শিরোনাম
শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ টেকনাফ ২ বিজিবি”র অভিযানে আটক-৬ লক্ষ্মীপুরে তিন পুলিশ সদস্যকে পেটালেন সিএনজি চালকরা মধুপুরে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত বেনাপোলে বিজিপি বিএসএফ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হারিয়ে যাওয়া মায়ের খোঁজে দিশেহারা সন্তানরা ভিসা জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে পরিবহন ব্যাবসার ধ্বস তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি প্রজেক্টরে ভেসে উঠায় স্থানীয় জনতার প্রতিবাদ

জাহানারা-সালমা শেষ বলের আগে যা বলেছিলেন

জাহানারা-সালমা শেষ বলের আগে যা বলেছিলেন

ডিটেকটিভ স্পোর্টস ডেস্ক

‘আপু যাই ঘটুক, আপনি শুধু দুই রানের জন্য দৌড়াবেন’ জাহানারা আলম বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন নন স্ট্রাইকার সালমা খাতুনকে। আর অধিনায়ক জাহানারাকে মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন, ‘যাই করিস না কেন, বলে শুধু ব্যাটটা লাগাস’। দুই জনের কথা রেখেছেন দুই জনে। তাতেই ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়ে মহিলা এশিয়া কাপের শিরোপা ঘরে তোলে বাংলাদেশ।

ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৯ রান। প্রথম ৩ বলে ৬ রান তুলে নিয়ে জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে যায় তারা। কিন্তু পরের ২ বলে ১ রান যোগ করতে হারায় দুই থিতু ব্যাটারকে।

জয়ের জন্য শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। ক্রিজে ছিলেন জাহানারা ও সালমা। ভারতীয় অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউরের বল জাহানারা ডিপ মিডউইকেটে খেলার সঙ্গে সঙ্গে দুই জনে পড়িমরি করে দৌড়ে নেন দুটি রান।

এশিয়া কাপের শিরোপা জিতে সোমবার ঢাকায় ফেরার পর জাহানারা জানান, শেষ বলটি তিনি দেখেছিলেন নিজেকে প্রমাণের বড় সুযোগ হিসেবে।

“আপানারা জানেন, ২০১৪ সালের ইনচন এশিয়ান গেমসের ফাইনালে ৪২ বলে ৪৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে শেষ ওভারে উইকেটের পর উইকেট পড়ে যাচ্ছিল। আমার সেদিনের কথা হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল। তখন ভাবলাম, এই বলেই আমাকে কিছু করতে হবে। আমাকে আজকে ফিনিশ করতেই হবে, তা যেভাবেই হোক। কারণ, এরচেয়ে বড় সুযোগ আমি আর পাব না।”

সেই ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৪৩ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ৭ রান। ৩ উইকেট হারিয়ে সেই ওভারে মাত্র ২ রান নেওয়া বাংলাদেশ হেরে যায় ৪ রানে।

পঞ্চম বলে রুমানা আহমেদ রান আউট হয়ে গেলে স্ট্রাইক পান জাহানারা। নন স্ট্রাইকার প্রান্তে আসেন সালমা। দুই জনই নিজেদের মনে করিয়ে দেন তাদের ওপর থাকা দায়িত্বের কথা।

“রুমানা আউট হয়ে যাওয়ার পর দ্বাদশ ব্যক্তি এল। ও আমাকে জানাতে এসেছিল যে, বলটা ব্যাটে লাগাতে হবে। আমি ওকে একরকম জোর করে পাঠিয়ে দিলাম যে, আমাকে কিছু বলতে হবে না। আমি জানি, কি করতে হবে। আমাকে এই সময়ে মাথা ঠা-া রাখতে হবে।”

“সালমা আপুকে আমি সেভাবেই বললাম, ‘সালমা আপু আপনি শুধু দৌড়াবেন’। উনি আমাকে একই কথা বললেন, ‘আগে ব্যাটে বলটা লাগা’। আমি উনাকে বললাম, ‘আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। আপনি শুধু দৌড়াবেন’। পরে যা হল তা তো আপনারা সবাই দেখেছেন।”

সতীর্থরা ব্যাটিং করার সময়ে জাহানারা খেয়াল করেছিলেন, ভারতের স্পিনাররা বেশ ঝুলিয়ে বল করছে। তেমন কিছু হলে কি করবেন ঠিক করা ছিল অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের।

“আমি হারমানপ্রিতের বোলিং পরিকল্পনাটা নষ্ট করে দিই। ও একটা পরিকল্পনা নিয়ে এসেছিল, আমাকে কি করে বিট করবে। ওর পরিকল্পনা নষ্ট করে আমি আমার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছি। আমার লক্ষ্য ছিল, যদি বল একটু ঝুলিয়ে দেয় আমি স্ট্রেইটে খেলবো, তাতে দুই বা বাউন্ডারি কিংবা ওভার বাউন্ডারি যাই আসে, আসবে। আরেকটা পরিকল্পনা ছিল, বল অনুযায়ী খেলে দৌড়ে দুই রান নেওয়ার চেষ্টা করব।”

কদিন আগেও ভারতের রাজ্য দলগুলোর কাছে হারত বাংলাদেশ। এবার এক টুর্নামেন্টেই এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী দলকে হারিয়ে দিল দুইবার। জাহানারার কাছে এটা পুরো দেশের জন্যই বড় একটি অর্জন।

“আমরা প্রথম যখন ভারত দলকে হারাই সেটা ছিল আমাদের মেয়েদের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় অর্জন। ১৪১ রান তাড়া করে ওদের হারাই। আর যখন ফাইনালে ওদের বিপক্ষে খেলি আমাদের একটা আত্মবিশ্বাস ছিল।”

“আরেকটা ব্যাপার ছিল, ওদের বিপক্ষে আমাদের হারানোর কিছু ছিল না। সম্পূর্ণটাই আমাদের জন্য বোনাস। ওরা ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন, ওদের হারানোর অনেক কিছু ছিল। ওদের মতো দলকে হারিয়ে আমরা বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, এর মধ্য দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে আমরা নিজেদের চিনিয়েছি। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া। এটা বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য অনেক বড় অর্জন।”

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর