July 27, 2024, 8:33 am

সংবাদ শিরোনাম
বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশের অভিযানে ১০ হাজার ইয়াবাসহ যুবক আটক পার্বতীপুরে নব-নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ভাই চেয়ারম্যানদ্বয়ের সংবর্ধনা রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা হতে জাল সার্টিফিকেট ও জাল সার্টিফিকেট তৈরীর সরঞ্জামাদিসহ ০২ জন’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ র‌্যাব-১০ এর অভিযানে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং এলাকা হতে ইয়াবাসহ ০১ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টিপাত পাহাড় ধ্বসে নারী-শিশু নিহত পীরগঞ্জে মসজিদের দোহাই সরকারি খাস জমির গাছ কর্তন পার্বতীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক হোসেন এর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন দারুসসালাম লাফনাউট মাদ্রাসার দস্তারবন্দী নিবন্ধন ফরম বিতরণ শুরু পীরগঞ্জে নিখোঁজের একদিন পর শিশু’র লাশ উদ্ধার মাদক মামলায় ১৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামী আলাউদ্দিন’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০

বাড়তেই আছে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য ঘাটতি

বাড়তেই আছে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য ঘাটতি

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ৬০০ কোটি ডলারেরও বেশি। অথচ এতে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় মাত্র ৬৭ কোটি ডলার। এ বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি কিছুতেই যেন কমছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৩ হাজার ৯৯৮ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ভারত থেকে ৫২২ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন ডলার রফতানির বিপরীতে আমদানি হয় ৪ হাজার ৫২১ মিলিয়ন ডলার। ফলে এত বিশাল পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি দেখা যায়। এদিকে, চলতি (২০১৭-১৮) অর্থবছরে শুধুু ভারত নয়, বিশ্বের ৭১টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি চীনের সঙ্গে। যার পরিমাণ ৬ হাজার ৮৮১ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরে চীনে ৭৩৬ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন ডলার রফতানির বিপরীতে আমদানি হয়েছে ৭ হাজার ৬১৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার। তবে ভারতের সঙ্গে ক্রমেই বাংলাদেশের প্রতিকূলে যাচ্ছে বাণিজ্যিক ভারসাম্য। বাংলাদেশ-ভারত পণ্য বাণিজ্য তালিকা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছে ১৮৪ কোটি ৮৭ লাখ ডলার সমমূল্যের, যার বিপরীতে বাংলাদেশ রফতানি করেছে মাত্র ২৪ কোটি ২১ লাখ ডলারের। ওই অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ১৬০ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। ২০০৬-০৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ আমদানি করে ২২২ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য, যার বিপরীতে রফতানি করে ২৮ কোটি ৯৪ লাখ ডলার সমমূল্যের পণ্য। এ সময় বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ১৫৩ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ আমদানি করে ৩৩৮ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের পণ্য, যার বিপরীতে রফতানি করে ৩৫ কোটি ৮০ লাখ ডলারের পণ্য। ওই বছর বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ৩০২ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ আমদানি করে ২৮৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের পণ্য, যার বিপরীতে রফতানি করে ২৭ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের পণ্য। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ২৫৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার। ২০০৯-১০ অর্থবছরে বাংলাদেশ আমদানি করে ৩২১ কোটি ৪৬ লাখ ডলার সমমূল্যের পণ্য। সেই বছরে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২৯০ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। ২০১০-২০১১ অর্থবছরে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক বৈষম্য এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ পৌঁছে ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ২০১০-২০১১ সালে বাংলাদেশ আমদানি করে ৪৫৭ কোটি ডলার মূল্যের পণ্যসামগ্রী এবং ভারতে রফতানি করে মাত্র ৫০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য। বিদায়ী অর্থবছরে বাংলাদেশ আমদানি করে ৬৫২ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য আর ভারতে রফতানি করে ৫৫ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য। এই বছরে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়াল ৫৯৭ কোটি ডলার, যা টাকার অঙ্কে প্রায় সাড়ে ৪৫ হাজার কোটি। এদিকে, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১০ সাল থেকে গত সাত বছরে ভারতে রপ্তানি আয় ক্রমান্বয়ে কিছুটা বাড়তে থাকলেও গত অর্থবছরে আবার তা ধাক্কা খেয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৬৮ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। এ আয় সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে কমে হয়েছে ৬৭ কোটি ২৪ লাখ ডলার। এ ছাড়া ২০১০-১১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে পণ্য রপ্তানি করেছে ৫১ কোটি ২৫ লাখ ডলারের, ২০১১-১২ অর্থবছরে আয় হয়েছে ৪৯ কোটি ডলার, ২০১২-১৩ অর্থবছরে আয় হয় ৫৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে হয়েছে ৪৫ কোটি ৬৬ লাখ ডলার এবং ২০১৪-১৫তে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫২ কোটি ৭১ লাখ ডলার। প্রতিবছর এমন বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করেন তা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনা সম্ভব। এজন্য দরকার সদিচ্ছা ও সমতাভিত্তিক বাণিজ্যনীতির। অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের মতে, বিভিন্ন ধরনের অশুল্ক প্রতিবন্ধকতা অব্যাহত থাকায় প্রতিবেশী দেশটির সাথে বাংলাদেশের রফতানি-বাণিজ্য স্তিমিত হয়ে পড়েছে। ভারতে যেসব কারণে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি ব্যাহত হয় তার মধ্যে রয়েছেÑ প্রতিটি চালানের ল্যাবরেটরি পরীা, পরীার ফল পেতে বিলম্ব, বিভিন্ন রাজ্যের নিজস্ব শুল্ক, এন্টি ডাম্পিং, কাউন্টারভেইলিং ডিউটি ইত্যাদি। এর বাইরে রয়েছে স্থলপথে পণ্য রফতানির বাধা যেমন গুদামব্যবস্থার অপ্রতুলতা, রাস্তাঘাটের দুরবস্থা, ভারতীয় কাস্টমসের স্বেচ্ছাচারিতা, পণ্যবাহী যানবাহনের পার্কিংয়ে অসুবিধা, ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডের অপ্রতুল ইত্যাদি। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীদের মতে, এই বাণিজ্য বৈষম্য দূর করতে হলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপিত অ্যান্টিডাম্পিং ও কাউন্টার ভেইলিং, মানসনদ, অশুল্ক বাধার মতো মাঝপথের এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। এজন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে পাশ কাটিয়ে দুই দেশের রাজনৈতিক সদিচ্ছাকে কাজে লাগাতে হবে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা মতে, অবকাঠামো, শুল্ক ও বন্দরসংক্রান্ত অসুবিধাগুলো, অশুল্ক বাধা এবং ঝামেলাপূর্ণ রপ্তানি প্রক্রিয়ার কারণে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো যাচ্ছে না। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রায় ২০ শতাংশ রপ্তানি আয় হয় পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রতি টন পাটে ভারত সরকার ১৯ থেকে ৩৫২ ডলার পর্যন্ত অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে। ফলে গত কয়েক বছরেও ভারতে ১০০ কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি বাংলাদেশ।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর