ভারতকে হারাল নিউ জিল্যান্ড
ডিটেকটিভ স্পোর্টস ডেস্ক
ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে রান খরা কাটালেন কলিন মানরো। দলের প্রয়োজনের সময় ফিরলেন ছন্দে। তার দারুণ সেঞ্চুরির পর ট্রেন্ট বোল্টের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে সহজেই ভারতকে হারাল নিউ জিল্যান্ড।
৪০ রানে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা এনেছে কেন উইলিয়ামসের দল।
নিউ জিল্যান্ডের ২ উইকেটে ১৯৬ রান তাড়ায় ভারত ৭ উইকেটে করে ১৫৬ রান।
গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান মানরো। ১০১ রানের সেই ইনিংসের পরের তিন টি-টোয়েন্টির দুটিতে রানের খাতা খুলতে পারেননি। অন্যটিতে করেন ৭ রান। ওয়ানডেতও সময়টা ভালো কাটেনি। ৯ ম্যাচে চারবার ফিরেন এক অঙ্কের ঘরে। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র একটি ফিফটি।
বাঁহাতি পেসার বোল্ট দিল্লিতে আগের ম্যাচে করেছিলেন নিজের সবচেয়ে খরুচে বোলিং। ঘুরে দাঁড়িয়ে এবার প্রথমবারের মতো নিলেন ৪ উইকেট।
রাজকোটের সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে শনিবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দলকে দারুণ সূচনা এনে দেন মার্টিন গাপটিল ও মানরো। সফরে প্রথমবারের মতো শতরানের উদ্বোধনী জুটিতে নিউ জিল্যান্ড পায় বড় সংগ্রহের ভিত।
১১.১ ওভার স্থায়ী ১০৫ রানের জুটিতে অগ্রণী ছিলেন ২৬ বলে ফিফটি করা মানরো। তিনটি করে ছক্কা-চারে ৪১ বলে ৪৫ রান করা মার্টিন গাপটিলকে বিদায় করে জুটি ভাঙেন যুজবেন্দ্র চাহাল।
অধিনায়ক উইলিয়ামসন বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেন মানরোকে। তবে মসৃণ গতিতে দলকে এগিয়ে নেন বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেটে টম ব্রুসের সঙ্গে গড়েন ৫৬ রানের জুটি।
৫৪ বলে সেঞ্চুরি পাওয়া মানরো অপরাজিত থাকেন ১০৯ রানে। তার ৫৮ বলের ইনিংসটি গড়া ৭টি করে চার-ছক্কা। ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও এভিন লুইসের পর চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে একাধিক সেঞ্চুরির মালিক হলেন তিনি। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে একই বছর দুটি সেঞ্চুরি করলেন মানরো।
মানরোর ঝড় তোলার দিনে অভিষেকে বিবর্ণ মোহাম্মদ সিরাজ। ডানহাতি এই পেসার ৪ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে নেন উইলিয়ামসনের উইকেট।
ফ্লাড লাইট বিভ্রাটে ভারতের লক্ষ্য তাড়ায় অনাকাক্সিক্ষত দেরি হয়। তবে আগের ম্যাচে মার খাওয়ার প্রতিশোধ তুলতে মোটেও দেরি করেননি বোল্ট। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফিরিয়ে দেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানকে।
শ্রেয়াস আয়ারকে ফিরিয়ে তার সঙ্গে জমে উঠা বিরাট কোহলির ৫৪ রানের জুটি ভাঙেন ম্যাচ সেরা মানরো। ঝড় তোলার আগেই হার্দিক পান্ডিয়াকে বোল্ড করে দেন ইশ সোধি।
প্রায় দুইশ রান তাড়ায় যে ব্যাটিং দরকার ছিল কোহলি ছাড়া আর কেউই তা করতে পারেননি। ৪২ বলে ৬৫ রান করা অধিনায়ককে ফিরিয়ে ভারতকে বড় একটা ধাক্কা দেন মিচেল স্যান্টনার।
কোহলির বিদায়ের পর একটু চড়াও হন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তাতে কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমেছে। নিজের শেষ দুই ওভারে অক্ষর প্যাটেল ও ধোনির উইকেট তুলে নেন বোল্ট। ৩৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তিনিই দলের সেরা বোলার। বল হাতেও আছে মানরোর অবদান। ২৩ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট।
মানরো, বোল্টের ক্যারিয়ার সেরা পারফরম্যান্সের দিনে ম্লান দেখাল আগের ম্যাচে ৫৩ রানে জেতা ভারতকে। আগামি মঙ্গলবার সিরিজ নিজেদের করে নিতে লড়বে দল দুটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৯৬/২ (গাপটিল ৪৫, মানরো ১০৯*, উইলিয়ামসন ১২, ব্রুস ১৮*; ভুবনেশ্বর ০/২৯, সিরাজ ১/৫৩, বুমরাহ ০/২৩, চাহাল ১/৩৬, প্যাটেল ০/৩৯, পান্ডিয়া ০/১৪)
ভারত: ২০ ওভারে ১৫৬/৭ (রোহিত ৫, ধাওয়ান ১, আয়ার ২৩, কোহলি ৬৫, পান্ডিয়া ১, ধোনি ৪৯, প্যাটেল ৫, ভুবনেশ্বর ২*, বুমরাহ ১*; মিল্ন ০/৩০, বোল্ট ৪/৩৪, গ্র্যান্ডহোম ০/১০, স্যান্টনার ১/৩১, সোধি ১/২৫, মানরো ১/২৩)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৪০ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কলিন মানরো