বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরসহ দুই শিক্ষকের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমের বেঞ্চ সোমবার এ রুল জারি করে।
এক সপ্তাহের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ সচিব জিন্নাত রেহানাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম মঞ্জুর আলম।
১৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ সচিব জিন্নাত রেহানা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ এর ১১ (১) ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. ফারজানা ইসলামকে ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ প্রদান করেছেন।’এ নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করেন শরীফ এনামুল কবির ও নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ড. লুতফর রহমান।
রিট আবেদনের পক্ষের আইনজীবী এম মঞ্জুর আলম সাংবাদিকদের বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ এর ১১ (১) ধারা অনুযায়ী ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগের জন্য তিন সদস্যদের প্যানেল মনোনয়ন করতে হবে। কিন্তু এ ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে সেটা করা হয়নি। তাই দুই শিক্ষকের রিটের প্রেক্ষিতে আদালত এক সপ্তাহের রুল জারি করেছে। বিশেষ বার্তা বাহকের মাধ্যমে এ আদেশ বিবাদীদের কাছে পাঠাতে বলেছে আদালত।”]
আন্দোলনের মুখে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন পদত্যাগ করলে ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সিনেটে ভোটাভুটির মধ্য দিয়ে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, অধ্যাপক আবুল হোসেন এবং অধ্যাপক আমির হোসেনের প্যানেল গঠিত হয়।
পরে ২ মার্চ ভিসি প্যানেলে নির্বাচিত হয়ে দেশের প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেন অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। আগামী ২ মার্চ তার দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তার আগেই ১৮ ফেব্রুয়ারি তাকে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ড. ফারজানা ইসলাম ১৯৫৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে ধানমণ্ডি সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি, ১৯৭৫ সালে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাস করেন।
১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি বিএসএস (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে এমএসএস (স্নাতকোত্তর) পরীক্ষায়ও প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন তিনি।
১৯৮২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন। ১৯৮৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেওয়ার পর ২০০৬ সালে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান।