জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে পাইলগাঁও ইউনিয়নে অবৈধভাবে গঠিত পিআইসি কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে পাউবো কর্তৃক হাওর রক্ষা বেড়িবাধের মাটি ভরাট কাজের গঠিত পিআইসি কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।বাধেঁর কাজ নিয়ে শংকায় কৃষকেরা।
জানা যায়, গত বৃহ:বার পাইলগাঁও ইউনিয়নের প্রতিবাদী কৃষকদের পক্ষে জালালপুর গ্রামের মৃত আব্দুল নুরের ছেলে মো. সিরাজুল হক,আলীপুর গ্রামের মৃত আশরাফ খাঁনের ছেলে মো. সেলিম খাঁন, খানপুর গ্রামের লোকমান খাঁনের ছেলে মহসিন খাঁন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। অভিযোগে বলা হয়, পাইলগাঁও ইউনিয়নে বাঁধের কাজের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করা হইয়াছে সেগুলো কাবিটা নীতিমালা ২০১৭ ইং এর অনুচ্ছেদ নং ৬.৩ এর পরিপস্থী। নীতিমালা অনুযায়ী বাধেঁর সন্নিকটবর্তী ভুমি মালিকগনের সমম্বয়ে কমিটি গঠনের কথা বলা হইয়াছে, কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো. মখলুছ মিয়া ও পরিষদ সদস্য বৃন্দ বাধেঁর সন্নিকটবর্তী ভুমি মালিকগন কে বাদ দিয়ে বে-আইনি ভাবে তাহার নিজের আতœীয় স্বজন ব্যক্তিগত সহযোগী নিজ গ্রাম এবং প্রতিবেশীগনের সমম্বয়ে কমিটি গুলো গঠন করিয়াছেন। ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক ভুমি মালিকগনকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করায় ভুমি মালিকগণ বাধেঁর কাজ নিয়ে শংকার মধ্যে আছেন। কমিটির সদস্য বৃন্দ বাধেঁর কাজ আন্তরিকতার সহিত করবে কিনা, নাকি বিগত বৎসরের ন্যায় আগাম বন্যায় হাওয়ের ফসল সমূহ তলিয়ে যাবে, তানিয়ে আমরা ভুমি মালিক কৃষকগন এক অজানা আশংকায় দিন কাটাইতেছি। তাছাড়া বাধঁ নির্মানে গঠিত কমিটি, কাজের পরিমান, বরাদ্ধের পরিমান, নিয়ে এত গোপনীয়তা রক্ষা করা হইতেছে যে, দীর্ঘ ০৩(তিন) মাস বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করিয়া কোন তথ্য উদঘাটন করিতেই পারি নাই। বাধঁ সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি সদস্য বৃন্দের সাথে যোগাযোগ করিলে তাহারা বলেন আমরা এ ব্যাপারে কিছুই জানিনা।
এদিকে বাধেঁর কাজ সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জগন্নাথপুরের কুশিয়ারা নদীর পাশে থাকা ভাংগা বাড়ীর বাঁধ দিয়ে গত বছর আগাম বন্যায় হাওয়ের ফসল সমূহ তলিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সে বাঁধের কাজ ও ধীরগতিতে চলছে। স্থানীয় অলইতলী গ্রামের কৃষক আজমল হোসেন বাবুল জানান, ধীর গতিতে কাজ করায় কুশিয়ারা পাড়ের মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে। তাদের মতে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কাজ না হলে। আগাম বন্যায় গত বছরের ন্যায় এবারও ফসল তলিয়ে নিয়ে যাবে। স্থানীয় কৃষক মো.সিরাজুল হক জানান, বাধেঁর কাজের প্রকল্প এলাকায় তথ্য বোর্ডে থাকার কথা, কিন্তু কোথাও কোন তথ্য নাই। আমার মনে হয় ইউপি সচিব তথ্য গোপন করার চেষ্টা করিতেছেন। যদি ইউপি সচিব ইচ্ছাকৃত ভাবে তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেন, তাহলে তথ্য গোপনের দায়ে তাহার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা করা উচিত। আরও উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো: মখলুছ মিয়ার বাড়ী ০৪নং ওয়ার্ডে গোতগাঁও গ্রামে, উক্ত গোতগাঁও গ্রামে কোন বাধঁ/প্রকল্প নাই, অথচ কমিটি গুলোর ৫০% (পঞ্চাশ) ভাগ লোক গোতগাঁও গ্রামের বাসিন্দা, ইউপি চেয়ারম্যানের আতœীয় স্বজন ও প্রতিবেশীরা, এমনকি তিনি নিজে ও ইউনিয়নের ০৮নং ওয়ার্ডের ভাংগা বাড়ী বাধঁ নির্মান প্রকল্পের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মনোনিত হইয়াছেন। যেখানে তাহার নিজ মালিকানাধীন কোন ভুমি নাই। উল্লেখিত কমিটি গুলো নিয়ে প্রতিটি বাধঁ এলাকার ভুমি মালিক ও কৃষকগনের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হইয়াছে। যা নিয়ে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।এই সব অবস্থা বিবেচনায় পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক কাবিটা নীতিমালা ২০১৭ইং এর আলোকে কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
কৃষক মো. সিরাজুল হক, মো. সেলিম খাঁন, মহসিন খাঁন জানান, অনুলিপি সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকোশলী, জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রদান করা হয় বলে তারা জানিয়েছেন।
বাঁধের কাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো. মখলুছ মিয়া জানান, আগামী এক সাপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ হবে। দুই-তিন দিন হল কাজ পেয়েছি। অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি তো কোন অবৈধ কমিটি করি নাই। আমার জানামতে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয় নাই।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/রুহুল আমিন