আন্তর্জাতিক ডেস্কঃঃ
সেনা শাসনে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে মিয়ানমার। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি এমন মন্তব্য করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান মিশেল ব্রেসলেট। তিনি বলেন, দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সেনা বাহিনী ও গেরিলাদের সংঘর্ষে নতুন করে বাড়ছে প্রাণহানি ও বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা।
পরিস্থিতি নাগালের বাইরে যাওয়ার আগেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। না হলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে বলেও সতর্ক করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান।
এদিকে ভারত সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের শিন প্রদেশে সেনা বাহিনীর সঙ্গে মিলিশিয়াদের সংঘর্ষ চলছে। প্রাণ বাঁচাতে প্রতিবেশী ভারতে পালিয়ে গেছে ৫ হাজারের বেশি মানুষ। বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের সীমান্তসংলগ্ন মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় শিন রাজ্যের থান্টলাং শহরে কয়েক দিন ধরে স্থানীয় মিলিশিয়া ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘাত চলছে। সেনা-মিলিশিয়া সংঘর্ষে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। সেনাদের গুলিতে শহরটিতে একজন খ্রিষ্টান যাজকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ওই সময় তিনি যে ভবনে অবস্থান করছিলেন, সেটায় আগুন দেওয়া হয়। জ্বলন্ত ভবনটি থেকে বের হওয়ার পরপরই ওই যাজককে গুলি করে সেনারা।
এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে থান্টলাংয়ের বাসিন্দারা। প্রাণ ভয়ে তারা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ছুটছে। স্থানীয় বাস্তুচ্যুতদের সহায়তা করে থান্টলাং প্লেসমেন্ট অ্যাফেয়ার্স কমিটি নামের একটি সংগঠন। এই সংগঠনের মুখপাত্র সালাই লিয়ান বিবিসিকে বলেন, ‘শহরে সেনারা নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে। বসতবাড়িতে আগুন দেওয়া হচ্ছে। এসব কারণে প্রাণ বাঁচাতে শহরবাসী বাড়ি ছেড়ে উদ্বাস্তু হতে শুরু করেছে।’
রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে গত এক ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই অস্থিতিশীল মিয়ানমার। অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং। তবে গত আগস্টে নিজেকে মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে ২০২৩ সালের আগস্টের মধ্যে দেশটিতে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন মিন অং হ্লাইং। এর মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে সেনাশাসনের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
//ইয়াসিন//