দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের পথ সৃষ্টি করে দিয়েছে সরকার: খন্দকার মোশাররফ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ভূ-রাজনৈতিক বাংলাদেশ একটি স্পর্শকাতর এলাকায় অবস্থিত উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এই বাংলাদেশের প্রতি অনেক দেশের নজর, কুনজর বা সুনজর আছে। শুধু আমরাই কিন্তু এখানে রাজনীতির খেলোয়াড় নই। এখানে অনেক দেশ জড়িত। এ ধরনের ঘটনা যে ঘটছে, এটা কিসের আলামত। ভালো করে বোঝা যাচ্ছে না। তবে ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং সেটা দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে হচ্ছে। আর এই ষড়যন্ত্রের পথ সৃষ্টি করে দিয়েছে আজকের এই অস্বাভাবিক সরকার। যেহেতু তারা বুঝতে পেরেছে, এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, এই সরকারের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে, সেজন্য আজ নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জিয়া পরিষদ আয়োজিত খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ড. মোশাররফ বলেন, রোহিঙ্গা একটা বিশাল সমস্যা। এটা অতীতে জিয়াউর রহমানের সময় হয়েছিল। তখন নিজের সুচিন্তিত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বৈদেশিক নীতিতে জিয়াউর রহমান যুদ্ধ ছাড়াই আপসে সমঝোতা করে তখন যে রোহিঙ্গারা এসেছিল, তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। আজকের সরকার কোথাও কোনো পাত্তা পাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কয়েকটি দেশে সফর শেষে এসে বলেছিলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চায় না। এমন উত্তর কী প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশা করা যায়? তিনি (প্রধানমন্ত্রী) প্রেস বিফিং করে জাতির সামনে অসহায়ত্ব তুলে ধরেছেন। কিন্তু আমি বলতে চাই সরকার ও প্রধানমন্ত্রী ব্যর্থ হয়েছেন। কেন ব্যর্থ, কারণ আপনার পেছনে কোনো জনসমর্থন নেই। বিশ্বের কোনো বড় শক্তি, মোড়ল কেউ আপনাকে পাত্তা দিচ্ছে না। মামলা বা বিচারে নয়, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে হীনস্বার্থ ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ্য করার জন্য খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এর কারণ একটাই খালেদা জিয়া এদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ভালো করে জানেন, যেদিন খালেদা জিয়া আসবেন, সেদিন এদেশে শেখ হাসিনার অস্তিত্ব থাকবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি বিএনপির এক নম্বর টার্গেট উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই স্বৈরাচারী সরকার কী খালেদা জিয়াকে এমনিতেই ছেড়ে দেবে? কোর্টে জামিন হয় না আমরা বলি, কিন্তু তাদের হাতে কী কোনো ক্ষমতা আছে। আজকের প্রধানমন্ত্রী এর আগের বার যে লন্ডনে গিয়েছিলেন, তখন প্রকাশ্যে বলেছেন যে, তারেক রহমানকে এই আন্দোলন বন্ধ করতে বলো, নইলে তার মা জীবনেও কারাগার থেকে মুক্তি পাবে না। তাহলে তাকে কারাগারে রাখছে কে, এটা কী হাইকোর্টের বিচারকরা রাখছেন? না-কি শেখ হাসিনা? তাই আমরা আশা করি না, শেখ হাসিনা ইচ্ছে করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবেন। সেজন্য আমি সবার সঙ্গে একমত যে, আন্দোলনই আমাদের একমাত্র পথ। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে প্রিয়া সাহার বক্তব্যের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র আছে দাবি করে তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্রের পেছনে সরকারেরও হাত থাকতে পারে। কেননা, প্রিয়া সাহা যে কথা বলেছিলেন, সেটা নিয়ে তিনি নিজে আবার লাইভে এসে ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রীর নাম বলেছেন। প্রিয়া সাহা বলেছেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীই এই বক্তব্য কত বছর আগে দিয়েছেন। কিছুদিন আগে জেলা প্রশাসকরা কনফারেন্স করে অনেক দাবি দাওয়া দিয়ে গেছেন উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, এতে বোঝা যায় সরকারের সঙ্গে প্রশাসনের অনেক দূরত্ব হয়ে গেছে। অথচ তাদের দিয়েই আগে অকাণ্ড করিয়েছে। আজকে যারা এই অকাণ্ড করেছে, তারা এদেশের মালিক মনে করছে। হাইকোর্ট এ নিয়ে বলেছিলেন, ওসি-ডিসিরা নিজেদের রাজা-বাদশা মনে করেন। জিয়া পরিষদের সভাপতি কবির মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. আবদুল কুদ্দুস, জিয়া পরিষদের মহাসচিব প্রফেসর ড. মো. এমতাজ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রবিউল ইসলাম, কল্যাণ পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শাহিদুর রহমান তামান্না, বিএনপি নেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট প্রমুখ।