মার্কিন সিনেটরদের কাছে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তুলে ধরেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত
ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখতে ১৮ ও ১৯ নভেম্বও মার্কিন সিনেটর অ্যাড মার্কেই-এর নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করছে। এ সফরের আগে রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে চাপ দিতে মার্কিন সিনেটরদের প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। শীর্ষস্থানীয় মার্কিন সিনেটরদের সঙ্গে সাক্ষাতে তাদের প্রতি এমন আহ্বান জানিয়েছেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন। সাক্ষাৎকালে তিনি সিনেটরদের কাছে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তুলে ধরেন। গত বৃহস্পতিবার সিনেটর টিম কেইন এবং অ্যাড মার্কেই-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন। গত শুক্রবার তিনি দেখা করেন সিনেটর জেফ মার্কলে’র সঙ্গে। তিনজনই যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির থেকে নির্বাচিত সিনেটর। তবে তারা প্রত্যেকেই খুবই প্রভাবশালী সিনেটর। এদের মধ্যে সিনেটর টিম কেইন’কে ২০১৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে দলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মনোনীত করা হয়েছিল। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন সিনেটর রিচার্ড ডারবিন, কংগ্রেসম্যান বেটি ম্যাককুলাম, জ্যান স্ক্যাকুস্কি ও ডেভিড সিসিলিন। সফরকালে প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও উত্তর রাখাইন প্রদেশ পরিদর্শন করবে। টিম কেইন এবং অ্যাড মার্কেই-এর সঙ্গে সাক্ষাতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর টেকসই উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে চাপ অব্যাহত রাখতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখার উপর জোর দেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। এ সময় তিন সিনেটরই এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সাক্ষাতে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের অবস্থান ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার ধরন জানতে চান সিনেটর কেইন। তিনি রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতি ও ক্যাম্পগুলোতে তাদের স্বাস্থ্য, বাসস্থান, খাদ্য নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নেওয়া উদ্যোগ সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। সিনেটর অ্যাড মার্কেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার আগে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নির্যাতনের ভয়াবতার ব্যাপারে জানতে চান। চিহ্নিত কিছু সন্ত্রাসীকে নির্মূলের নামে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের ব্যাপারে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সিনেটর মার্কেই বাংলাদেশের মানবিক উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে এত বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে তা বিশ্বের যে কোনও দেশের জন্যই কঠিন। এড মার্কেই বলেন, মার্কিন আইনপ্রণেতারা সহিংসতা বন্ধ করতে ও কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন তাদের জানান, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে হবে যাতে ওই অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার নেওয়া নানা উদ্যোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন। সাক্ষাতকালে রাষ্ট্রদূত সহিংসতা বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে মানবিক অধিকার নিশ্চিত করতে দেশটির সরকারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেন। তিনি এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ নিতে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান।