নিউজ ডেস্ক: সারা দেশের মতো নওগাঁর রাণীনগরেও চলছে সপ্তাহব্যাপী করোনার বুস্টার ডোজ প্রদান কার্যক্রম। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২.৩০টা পর্যন্ত দীর্ঘলাইনে দাড়িয়ে শত শত সেবাগ্রহিতাদের বুস্টার নিতে দেখা গেছে। এদিকে ইতিমধ্যেই উপজেলা ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআর) মো: মশিউর রহমান জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী করোনার টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে গত শনিবার (৪জুন) যা চলবে আগামী শুক্রবার (১০ জুন) পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই আমরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি মানুষকে টিকা প্রদান করেছি। মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি হওয়ার কারণেই বুস্টার ডোজ নিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন উপজেলার মানুষরা। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বয়স্ক থেকে শুরু করে যাদের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের পর তৃতীয় ডোজ গ্রহণের সময় হয়েছে তারা সকলেই হাসপাতালে এসে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে বুস্টার ডোজ নিচ্ছেন। এছাড়াও বুস্টার সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার এই দুই দিন উপজেলার ওয়ার্ড পর্যায়ে মর্ডানা ও এ্যাস্টোজেনিকার তৈরি ডোজের টিকাদান কার্যক্রম ইতিমধ্যেই শেষ করেছি। বুস্টার ডোজের সপ্তাহে পুরো উপজেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে লক্ষ্যমাত্রা প্রদান করা হয়েছে ২৪হাজার ৯শত। আর মাঠ পর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১৪হাজার ৪শত। সেখানে মর্ডানার টিকা প্রদান করা হয়েছে ৭হাজার ও এ্যাস্টোজেনিকার টিকা প্রদান করা হয়েছে ১১হাজার ৯শত ১০জনকে।
এছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন হাসপাতালের তিনটি বুথ থেকে ফাইজারের তৈরি বুস্টার ডোজের টিকা প্রদান করা হচ্ছে। যেসব শিক্ষার্থীরা পূর্বে গ্রহণ করেনি তাদেরকেও প্রদান করা হচ্ছে। যারা বুস্টার ডোজ গ্রহণের এসএমএস পেয়েছেন এবং যারা এসএমএস না পেলেও তৃতীয় ডোজ গ্রহণের সময় হয়েছে তাদেরকেও বুস্টার ডোজের টিকা প্রদান করা হচ্ছে। বুধবার (০৮জুন) পর্যন্ত পুরো উপজেলায় বুস্টার ডোজের টিকা গ্রহণ করেছে ২৫হাজার ৫শত ২২জন। এছাড়াও চলমান এই সপ্তাহের আরো দুই দিন বাকি রয়েছে। যদি সময় মতো টিকার সরবরাহ আরো বেশি হতো তাহলে আরো কয়েক হাজার মানুষকে আমরা বেশি টিকা প্রদান করতে পারতাম। অনেক সময় হাসপাতালে টিকা আসতে বিলম্ব হওয়ার কারণে অনেক মানুষকেই পরের দিন এসে টিকা গ্রহণের পরামর্শ দিতে হচ্ছে। তবে আমরা আশা করছি পুরো সপ্তাহজুড়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বেধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সুন্দর ভাবে দ্বিগুন মানুষকে বুস্টার ডোজের টিকা প্রদান করতে পারবো।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: কেএইচএম ইফতেখারুল আলম খাঁন অংকুর বলেন প্রতিদিন হাসপাতাল থেকে ফাইজারের তৈরি বুস্টার ডোজের টিকা ১হাজার ৫শত জনকে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও প্রতিদিন প্রায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি মানুষ টিকা গ্রহণ করছেন। শত শত মানুষ দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে বুস্টার ডোজের টিকা নিবে তা আমি কখনোই ভাবিনি। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা গ্রহণের প্রয়োজনতার উপর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে সকল শ্রেণির মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি হওয়ার কারণেই তারা হুমড়ি খেয়ে বুস্টার ডোজ গ্রহণ করছেন। হাসপাতাল প্রাঙ্গনে এমন ভাবে বুস্টার ডোজের টিকা গ্রহণের দৃশ্যই প্রমাণ করে যে সরকার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে যে মিশন ও ভিশন গ্রহণ করেছিলো তা সম্পন্ন সফল হয়েছে। আমি আশাবাদি পুরো সপ্তাহে আমরা সুন্দর, সুষ্ঠ ও সুচারু পরিবেশে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বুস্টার ডোজের টিকা প্রদান করতে সক্ষম হবো।
বিকাশ চন্দ্র প্রাং,