চিকিৎসার খরচ বা হাসপাতালের বিল পরিশোধে অক্ষম কোনো রোগীর লাশ আটকে রাখা যাবে না বলে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট। দরিদ্র ও দুস্থ রোগীদের আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতার জন্য একটি তহবিল গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে পাঁচ বছর আগে দেওয়া এক রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসাইন এবং বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ রায় দেয়। রায়ের পর রিটকারীপক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ২০১২ সালে জুন মাসে একজন গরিব পরিবার তাদের শিশু সন্তানকে মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে ভর্তি করায় এবং ১৫ হাজার টাকা জমা দেয়। কয়েকদিন চিকিৎসার পর শিশুটির মৃত্যু হলে চিকিৎসার ব্যয় বাবদ আরও ২৬ হাজার টাকা দাবি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বকেয়া বিল পরিশোধ করতে না পারলে শিশুটির লাশ দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়। ২০১২ সালের ৮ জুন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ওই খবর প্রকাশিত হলে তা যুক্ত করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল সোমবার রায় এল। রায়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে-
১. চিকিৎসার খরচ পরিশোধের অক্ষমতার কারণে কোনো ক্লিনিক বা হাসপাতাল মৃত ব্যাক্তির লাশ জিম্মি করে রাখতে পারবে না।
২. . বিল পরিশোধে অক্ষম গরিব রোগীদের চিকিৎসার খরচ পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তহবিল গঠণ করতে হবে।
৩. ১ নাম্বার নির্দেশনা উল্লেখ করে অবিলম্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে একটি সার্কুলার জারি করতে হবে এবং দেশের লাইসেন্সকৃত সকল ক্লিনিক-হাসপাতালে যে সেই সার্কুলার পৌছায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. ৮ জুন ২০১২ তারিখে সিটি হাসপাতালে সেই নবজাতকের লাশ হস্তান্তর না করায় এবং অভিভাকরা সন্তানের লাশ নিতে ব্যার্থ হওয়ায় বিষয়টি অমানবিক ও মানবাধিকারের লংঘন হয়েছে। এই কারণে ওই হাসপাতালকে পাঁচ হাজার টাকা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে দান করতে হবে।