ধানের শীষ বিএনপির নয়, জাতির মার্কা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, রাস্তায় পোস্টার থাকুক আর না থাকুক, জনগণের মার্কাতেই জনগণ ভোট দেবে। আর সেই মার্কাটা হচ্ছে ধানের শীষ। ধানের শীষ বিএনপির মার্কা নয়, আজকে এটা জাতির মার্কা, ধানের শীষ গণতন্ত্রের মার্কা। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে যেমন জয় বাংলা ছিল আমাদের স্লোগান, তেমনি ধানের শীষ জাতির আকাক্সক্ষার প্রতীক, পরিবর্তনের মার্কা। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের আয়োজনে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাবনা ও শঙ্কা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আগামীকাল থেকে সেনারা নামবেন। জনগণ আমাদের সেনাবাহিনীকে বিশ্বাস করে। তাদের প্রতি মানুষের এতটুকু আস্থা আছে। কারণ, তারা কোনও অনৈতিক কাজকে সমর্থন করবে না।’
তিনি বলেন, ‘জনগণ তাদের মন স্থির করে রেখেছে। এবারের খেলাটা ভিন্নভাবে হবে। হাজারে হাজারে, লাখে লাখে মানুষ ভোট দিতে আসবে। ভোট দেবে যাকে পছন্দ, তাকে। ভারতীয় এজেন্টদের ভোট দেবে না তারা।’ প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘যে দেশে প্রধানমন্ত্রী কথা রাখেন না, সে দেশে নির্বাচন কমিশন কথা রাখবেন, তা আশা করা যায় না। প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা-চেতনার রিফ্লেকশন হচ্ছে নির্বাচন কমিশন।’ তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত তিনি (প্রধানমন্ত্রী) প্রতিবারই কথা ভঙ্গ করেছেন। তিনি বলেছিলেনÑ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন চান না, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চান। জনগণ যাকে ইচ্ছে ভোট দেবে, জনগণ যদি চায় তাহলেই তিনি নির্বাচিত হবেন। কোনোভাবে নির্বাচনকে প্রভাবিত করবেন না।’ কিন্তু তিনি কথা রাখেননি।’
জাফরুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন বলে আসছেনÑ‘নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে না’। কেননা, তাদের ওই প্রভাবিত হাইকোর্টের রায়ে একটা ভালো পদ্ধতি বাতিল হয়ে গেছে। খয়ের খাঁ বিচারপতি খাইরুল হক সাহেব রায় লিখলেন। ১৬ মাস পর রায় প্রকাশ হলো। কথা ছিল আরও দুইবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে। সবাই এই রায় গ্রহণ করবেন। হাইকোর্টের এই ধরনের রায়ের পরে তারা তড়িঘড়ি করে বাতিল করে দিলেন। বাতিলকালে তিনি বলেছিলেন, নির্বাচন তার অধীনেই হবে। তবে ছোট আকারে নির্বাচনকালীন সরকার হবে। তিনি সংলাপে বলেছিলেন, ঘোষণার পর আর কাউকে গ্রেফতার করা হবে না। গায়েবি মামলা হবে না। বিএনপিপন্থী এই বুদ্ধিজীবী আরও বলেন, ‘২১ শতকে বিশ্বে এখন আর নিরক্ষরতা কোনও সমস্যা না। কিন্তু, বাংলাদেশে দুই-তৃতীয়াংশ এখনও নিরক্ষর। ২৩ শতাংশ মানুষ এখনও দরিদ্র, যার অর্ধেক চরম দরিদ্র। আমাদের দেশের উন্নয়ন যা হয়েছে, তা ২০০৪-৫ সালের দিকে হয়েছে। বিশ্বে তখন বাংলাদেশকে ইমার্জিং টাইগার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।’ আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এমাজউদ্দীন আহমদ, নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। ড. এমাজউদ্দীন বলেন, ‘৩০ তারিখ শুধু নির্বাচন নয়, আন্দোলনও বটে। এদিনই মহীয়সী নারী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। যাকে খুশি তাকে ভোট দেবেন। কিন্তু তারপরও ভোটকেন্দ্রে যাবেন। ভোট দেওয়ার মানসিকতায় ভোট কেন্দ্রে যান। ১৬ তারিখের (বিজয় দিবসের) চেতনা নিয়ে যেতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমতায় যারা আছেন তারা চক্রান্ত করছে, তাদের মোকাবিলা করতে হবে। আমি শেখ মুজিবকে পছন্দ করতাম। কিন্তু, তার হাত ধরেই গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে। বাকশাল না হলে হয়তো এমন হতো না। হ্যাঁ, শেখ হাসিনার অধীনে উন্নয়ন হয়েছে। তবে তা কিছু লোকের উন্নয়ন হয়েছে। যাদের উন্নয়ন হয়েছে, তারা বিদেশে বাড়ি তৈরি করেছে আরাম-আয়েশে থাকার জন্য।’