September 19, 2024, 10:44 am

এপ্রিল পর্যন্ত রেমিটেন্স এসেছে সাড়ে ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার: মুহিত

এপ্রিল পর্যন্ত রেমিটেন্স এসেছে সাড়ে ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার: মুহিত

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক             

 

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রেরিত রেমিটেন্সের পরিমাণ ৪ হাজার ৫৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। গতকাল মঙ্গলবার সংসদে সরকারি দলের সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সরকারি দলের নিজাম উদ্দিন হাজারীর অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকা-ে গতিশীলতা সৃষ্টি এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বিগত বছরগুলোতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। মুহিত বলেন, ২০১৫-২০১৬ এবং ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে বেসরকারিখাতে ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে যথাক্রমে ১৬ দশমিক ৮ এবং ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর শেষে বেসরকারি খাতে ঋণেরপ্রবাহ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৮ লাখ ১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। এর ফলে উৎপাদনমুখী উদ্যাগসমূহ বাস্তবায়ন এবং কাক্সিক্ষত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সরকারি দলের সদস্য এম আবদুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনার জন্য ন্যুনতম ১০ টাকা জমায় ব্যাংক হিসেবের সংখ্যা ১৭০ লাখের বেশি। এ একাউন্টে সঞ্চয়ের পরিমাণ ১৩শ কোটি টাকা। সরকারি দলের মোস্তাফিজুর রহমানের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে কার্যরত বেসরকারি ব্যাংকের সংখ্যা ৪৯টি। চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো কৃষকদের মধ্যে ২ হাজার ৭৬০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে। সরকারি দলের সদস্য মমতাজ বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা ও নির্দেশনার আলোকে আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সরকারের নানামুখী সংস্কার কার্যক্রমের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং তথা আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা রক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধি, আধুনিকায়ন, সুশাসন, শৃংখলা আনয়ন এবং আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান ও নীতিমালা প্রণয়নসহ সুপারভিশন ও মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করে। মুহিত বলেন, ব্যাংকিং খাতে আন্তর্জাতিক মানদন্ড প্রতিষ্ঠা ও ব্যাংক কোম্পানি আইনকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ সংশোধন, পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করা হয়েছে। আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ওই আইনের আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গঠন, নতুন পরিচালক নিয়োগ, পরিচালনা পর্ষদের গঠন, নতুন পরিচালক নিয়োগ, পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা, ঋণ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন, আর্থিক ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নীতিমালা জারি করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকগুলোতে অটোমেশন ব্যবস্থা দ্রুত ও সমন্বিতভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ২০১৬ সালে নভেম্বর গাইডলাইনস ফর কোর ব্যাংকিং সলিউশন জারি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো শতভাগ অটোমেশনের আওতায় এসেছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকেও শতভাগ অটোমেশনের আওতায় আনার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আর্থিক খাতের সার্বিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য ২০১২ সালের ২৯ মে বাংলাদেশ ব্যাংকে ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি ডিপার্টমেন্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ বিভাগ আর্থিক খাতের সিস্টেমিক ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ ও প্রশমনের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিতভাবে বার্ষিক ও ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে। মুহিত বলেন, আর্থিক খাতের ঝুঁকির আগাম সতর্কতা সংকেত হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েকটি টুলস, ইন্টার-ব্যাংক ট্রানজেকশন্স ম্যাট্রিক্স, ব্যাংক হেলথ ইনডেক্স এবং হিট ম্যাপ, বাংলাদেশ সিস্টেমিক রিস্ক ড্যাশবোর্ড ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করেছে। তিনি বলেন, এছাড়াও, বাংলাদেশ ব্যাংক টেকসই অর্থায়ন নিশ্চিত করার তাগিদে ইতোমধ্যে বৃহৎ কর্পোরেট গ্রুপের ঋণমান তদারকি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর