রোমাঞ্চিত আবু জায়েদ
ডিটেকটিভ স্পোর্টস ডেস্ক
সংবাদ সম্মেলন কক্ষে ঢুকে একটু দ্বিধায় পড়ে গেলেন আবু জায়েদ চৌধুরী। কোন পথ দিয়ে উঠবেন মঞ্চে? একটু ভুলও করে ফেলেছিলেন পথ। এই কক্ষটি নতুন নয়। তবে এখানে তিনি নতুন অতিথি। এখানে তো সচরাচর তার আসা হয় না!
এমনিতে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি নিয়মিত পারফরমার। বিরুদ্ধ কন্ডিশন ও প্রতিকূল উইকেটেও গত জাতীয় লিগে পেস-স্পিন মিলিয়েই হয়েছিলেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৭১ উইকেট, বাংলাদেশের একজন পেসারের বিবেচনায় অনেক। কিন্তু জাতীয় লিগ বা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে অসাধারণ পারফর্ম করলেও সংবাদ সম্মেলন কক্ষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা থাকে না; যেটি থাকে বিপিএলে।
রোববার সুযোগটি নিজেই করে নিলেন আবু জায়েদ। চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে খুলনা টাইটানসের জয়ের নায়ক তিনি। ৪ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
ক্রিকেটীয় মানে অবস্থান যেমনই থাকুক, আবু জায়েদ ঠিকই জানেন গ্ল্যামার আর আলোর ঝলকানিতে বিপিএলই ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে এগিয়ে। ম্যাচ শেষে তাই রাখঢাক না রেখেই তার কণ্ঠে সরল স্বীকারোক্তি। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে পেরে তার ভালো লাগার কথা শোনালেন অকপট কণ্ঠে।
“অবশ্যই ভালো লাগছে, জাতীয় লিগে পারফর্ম করি কিন্তু মিডিয়া কাভারেজ একটু কম। এখানে পারফর্ম করলে সব মিডিয়ায় আসে। ফেইসবুক থেকে শুরু করে সব সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা হয়। তাই ভালো লাগে বেশি।”
অভিজ্ঞতাটি তার জন্য নতুন বলেই এখনও পেশাদারিত্বের খোলসে ঢাকা পড়েনি মনের কথা। খুলনার হয়ে বিপিএলে খেললেও আসলে তিনি সিলেটের সন্তান। কিন্তু বিপিএলে এবার ঘরের মাঠে ভালো করতে পারেননি। সেটির ব্যাখ্যাও দিলেন নিজের মত সরল করে।
“ঘরের মাঠে একটু চাপ ছিল। তার উপর টিকেটের জন্য অনেক বেশি চাপ ছিল। আউট অব ক্রিকেট ছিলাম। হয়ত বা এজন্য…।”
চিটাগংয়ের সবচেয়ে বড় শক্তি, তাদের বিস্ফোরক উদ্বোধনী জুটিকে এদিন প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন আবু জায়েদ। পরপর দুই বলে আউট করেন বিপজ্জনক লুক রনকি ও সৌম্য সরকারকে। জানালেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করেই মিলেছে সাফল্য।
“আমাদের পরিকল্পনা ছিল জায়গায় বোলিং করা। আর যদি সুইং করে, তবে সুইং করানো। একটা জায়গায় বোলিং করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী করতে পেরেছি তাই সাফল্য পেয়েছি।”
এদিন ৩৫ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন আবু জায়েদ।
টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথমবার পেলেন ৪ উইকেট। তবু তার মনে বিধছে অস্বস্তির কাঁটা।
“আমার কাছে মনে হয়েছে একটু ব্যয়বহুল ছিলাম। তবে ঠিক আছে, চারটি উইকেট, বেশ ভালো। একটু ব্যায়বহুল ছিলাম, তবে ম্যাচ জিতেছি, ভালো লাগছে।”
পারফর্ম করেও যদি আরও ভালোর এই তৃষ্ণা ধরে রাখতে পারেন, আবু জায়েদ হয়ত এগিয়ে যাবেন অনেক দূর।