তথ্য কেলেঙ্কারিতে ফেইসবুকের জরিমানা পাঁচ লাখ পাউন্ড
ডিটেকটিভ প্রযুক্তি ডেস্ক
কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা তথ্য কেলেঙ্কারির ঘটনায় ফেইসবুককে পাঁচ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড জরিমানা করেছে যুক্তরাজ্যের তথ্য সুরক্ষা কার্যালয়।
দেশটির ইনফরমেশন কমিশনার’স অফিস (আইসিও)-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, ফেইসবুক ‘গুরুতরভাবে’ প্রযোজ্য আইন অমান্য করেছে।
চলতি বছরের মে মাসে নতুন জিডিপিআর বাস্তবায়ন হয় যুক্তরাজ্যে। এর আগে পুরানো তথ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী এটিই ছিল সর্বোচ্চ জরিমানা।
আইসিও জানায়, “স্পষ্ট সম্মতি ছাড়াই” ফেইসবুক অ্যাপ ডেভেলপারদেরকে গ্রাহকের তথ্য নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জুলাই মাসে আইসিও-এর পক্ষ ফেইসবুককে জানানো হয় যে প্রতিষ্ঠানটিকে সর্বোচ্চ জরিমানা গুণতে হতে পারে।
এবার জরিমানা নিশ্চিত করে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “২০০৭ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে গ্রাহকের কাছে বিষয়টি যথাযথভাবে স্পষ্ট না করে এবং সম্মতি না চেয়েই অ্যাপ ডেভেলপারদেরকে তাদের তথ্য নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে এবং ব্যক্তিগত তথ্য প্রক্রিয়াজাত করেছে। এমনকি গ্রাহক যদি অ্যাপ ডাউনলোড নাও করে থাকেন তার বন্ধুরা যারা অ্যাপটি ব্যবহার করছেন তাদের মাধ্যমে তথ্য নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “ফেইসবুক গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায়ও ব্যর্থ হয়েছে কারণ তাদের প্ল্যাটফর্মের অ্যাপ এবং ডেভেলারদের যথাযথভাবে যাচাই করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।”
এদিকে ফেইসবুকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা আইসিও’র সিদ্ধান্ত ‘পুনর্বিবেচনা’ করছে।
ফেইসবুকের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা সম্মানের সঙ্গেই তাদের পাওয়া কিছু তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি, আমরা বলেছি কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা এবং ২০১৫ সালে এর প্রভাব নিয়ে যে দাবিগুলো করা হয়েছে তা তদন্তে আমাদের আরও কিছু করা উচিত।”
ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য অপব্যবহারের অভিযোগে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে চলতি বছরই কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।
২০১৬ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করে লন্ডনভিত্তিক এ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি।
একটি অ্যাপের মাধ্যমে কয়েক কোটি ফেইসবুক গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের কৌশল নির্ধারণে কাজে লাগানো হয় বলে সম্প্রতি ফাঁস হয়।
ফেইসবুকের ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের আট কোটি ৭০ লাখ গ্রাহকের তথ্য নিয়েছিল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।
এই তথ্য ফাঁস হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের এই প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ফেইসবুকও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। ফেইসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গকে তলব করে ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি কমিটি।
সেখানে প্রতিনিধি পাঠিয়ে নিজের উপস্থিতি এড়িয়ে গেলেও পরে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে ঠিকই জবাবদিহি করতে হয় জাকারবার্গকে। ওই সময় ফেইসবুকের শেয়ারেরও ব্যাপক দরপতন হয়।