ঝিনাইদহের মহেশপুরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ঝিনাইদহের মহেশপুরের সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ড.আব্দুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে গণশুনানী করা হয়েছে। শুনানী শেষে মহেশপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলামের অপসারনের দাবি জানিয়ে প্রতিবাদ সভা করেছে মহেশপুরে প্রায় ১শ’ ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা। সভায় মুক্তিযোদ্ধারা আগামি ১৬ই ডিসেম্বারের অনুষ্ঠান সহ ইউএনও’র ¡ সকল সরকারি অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষনা দেন। সম্প্রতি মহেশপুরে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শামছুল আলম উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগে করেন যে সাবেক উপজেলা কমান্ডার আবদুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে হাট বাজারের ৪% অর্থ থেকে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪শ ৪৭ টাকা সহ প্রায় ৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ঘটনায় ইউএনও তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিস্ট কমিটি গঠন করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের সামনে মাটিতে বসেই মহান মুক্তিযোদ্ধাদের গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়।শুনানীতে অংশ নেওয়া সকল মুক্তিযোদ্ধারা টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেন। ইউএনও অফিস সুত্রে জানা যায়, মহেশপুরের সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ড. আবদুল মালেক গাজীর বিবরুদ্ধে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সামছুল আলম ও মুক্তিযোদ্ধা আবু তালেব ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে হাটবাজারের অর্থ থেকে ৪% টাকা অসুস্থ দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধার সন্তাননদের লেখাপাড়া বাবদ ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪শ ৪৭ টাকা আত্ম¥সাতের লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনাটি তদন্ত করতে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম ৩ সদস্য বিশিস্ট কমিটি গঠন করে। কমিটির সদস্যরা হলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তাসলিমা আক্তার, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম ও সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান। এই কমিটির সামনে গত বৃহষ্পতিবার সকালে মালেক গাজীর বিরুদ্ধে অভিযোগেরগণ শুনানী হয়। গণশুনানীর পর কয়েকশ মুক্তিযোদ্ধা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ইউএনও অফিসের সামনে প্রতিবাদ সভা করে। এ সময় বক্তব্য রাখেন সাবেক জেলা কমান্ডার কামরুজ্জামান, সাবেক উপজেলা কমান্ডার ড. আবদুল মালেক গাজী, ডেপুটি কমান্ডা গোলাম মোস্তফা, পৌর কমান্ডার আবদুস সাত্তার,ডেপুটি কমান্ডার রবিউল আওয়াল, পৌর ডেপুটি কমান্ডার মহেন্দ্রনাথ। সভায় মুক্তিযোদ্ধারা আগামি ১৬ই ডিসেম্বারের অনুষ্ঠান সহ ইউএনও’র সকল সরকারি অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষনা দেন। আব্দুল মালেক গাজী জানান, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সম্পুর্ণ মিথ্যা। তিনি কোন মুক্তিযোদ্ধার টাকা আত্মসাৎ করেননি। তিনি ওই টাকা মুক্তিযোদ্ধা ভবন নির্মানের জন্য জমি ক্রয় কাজে খরচ করেছেন। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তার জনপ্রিয়তা রযেছে। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণেকাজ করেছেন যা মহেশপুরের মুক্তিযোদ্ধারা স্বীকার করেন। তিনি অভিযোগ করেন, মহেশপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম একটি ভুয়া অভিযোগ পেয়ে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ইউএনও তার সাথে কোন কথা বলেন নি। তারা এই কারণে গণশুনানী থেকে উঠে এসে ইউএনও অফিসের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন এবং ইউএনও’র নেতৃত্বে কোন সরকারি প্রোগ্রামে তারা অংশ নেবেন না বলে জানান। তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী কমিশনার (ভুমি) তাসলিমা আক্তার জানান, বৃহষ্পতিবার সকালে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল মালেক গাজীসহ অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আমরা কথা বলেছি,তদন্ত চলছে। বিস্তারিত তদন্ত শেষে জানানো হবে। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, তার কাছে ২জন মুক্তিযোদ্ধা টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বৃহষ্পতিবার তদন্তের গণশুনানী হয়েছে। শুনানীর ফলাফল এখনও আমার হাতে আসেনি। তিনি আরো বলেন,সরকারি কোন প্রোগ্রামে মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেবে না কেন তা আমিও বুঝতে পারছি না। মুক্তিযোদ্ধাদের মাটিতে বসতে দেওয়া হয়নি,তারা নিজেরাই মাটিতে বসে পড়ে।ফলে আমার অফিসারগনও মাটিতে বসে শুনানী করে।