দ্বিতীয় ভৈরব ও তিতাস সেতুর উদ্বোধন আজ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে মেঘনা নদীর উপর নির্মিত দ্বিতীয় ভৈরব রেলওয়ে সেতু ও তিতাস নদীর উপর নির্মিত তিতাস সেতু আজ বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করা হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের উপ-মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেতু দুটির উদ্বোধন করবেন। তিনি জানান, সেতু দুটি চালু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-নোয়াখালীসহ পূর্বাঞ্চলীয় জোনের মধ্যে চলাচলকারী ট্রেন ভৈরব ও আখাউড়া স্টেশনে ক্রসিং ছাড়াই চলাচল করতে পারবে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে রানিং টাইম কমে আসবে। বাড়ানো যাবে গাড়ির সংখ্যাও। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম যাতায়াত করা যাবে ৪ ঘণ্টা ৫০ মিনিটে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় জোনের জেনারেল ম্যানেজার ও প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুল হাই জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ডাবল লাইন নির্মাণের সুফল তুলতে দ্বিতীয় তিতাস ও দ্বিতীয় ভৈরব সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১০ সালের ৯ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। পুরনো ও নতুন দুটি সেতু দিয়েই ট্রেন চলাচল করবে। একটি দিয়ে ডাউন ট্রেন অপরটিতে আপ ট্রেন চলাচল করবে। সেতুগুলো যাতে ডুয়েল গেজ হিসেবে ব্যবহার করা যায় এজন্য সেতুর ওপর ডুয়েল রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। ডুয়েল গেজ ট্রেন এই সেতু দিয়ে ১শ’ কিলোমিটার ও ব্রডগেজ ট্রেন ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। ফলে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম ও বিভাগীয় শহর সিলেট থেকে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারবে। তিনি জানান, ২০১৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন-এফকন জেভির সঙ্গে দ্বিতীয় ভৈরব সেতু নির্মাণ প্রকল্পের চুক্তি হয়। একই বছরের ২৫ ডিসেম্বর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের অক্টোবরে সেতুর কাজ শেষ হয়। ৯৮৪ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭ মিটার চওড়া এই সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। অন্যদিকে ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় তিতাস সেতু নির্মাণ প্রকল্পের চুক্তি হয় ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যানন এফএলসিএল কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে। ২০১৪ সালের ২৭ জানুয়ারি প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং শেষ হয় চলতি বছরের অক্টোবর মাসে। ডাবল লাইন স্থাপনের লক্ষ্যে ২১৮ দশমিক ৭০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুটির প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। প্রকল্প পরিচালক জানান, সেতু দুটিতে ডুয়েলগেজ ও ব্রডগেজ দুটি লাইন থাকছে। আগের পুরনো সেতুতে কেবল মিটারগেজ লাইন রয়েছে। ১৯৩৭ সালে ব্রিটিশ সরকার রেলপথে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের সুবিধার্থে সেতুটি নির্মাণ করে। ডাবল লাইন না থাকায় ট্রেনগুলো যাতায়াতের সময় ক্রসিং করতে হয়। এতে ১০ থেকে ২০ মিনিট সময় নষ্ট হয়। সেতু দুটি ভারতীয় ঋণ সহায়তায় নির্মাণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। রেল মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা শরিফুল আলম জানান, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে টঙ্গী থেকে ভৈরববাজার স্টেশন পর্যন্ত ডাবল রেললাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ডাবল লাইন চালুর ফলে এই অংশে এখন প্রতিদিন আন্তঃনগর ট্রেনসহ ৮৪টি ট্রেন চলাচল করছে। দ্বিতীয় ভৈরব ও তিতাস সেতু দুটি উদ্বোধনের পর ঢাকা থেকে আখাউড়ার মধ্যে ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু করা সম্ভব হবে। পরবর্তীতে ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে পুরোপুরি ডাবল লাইন চালু হলে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।