January 21, 2025, 7:18 am

সংবাদ শিরোনাম

জিহাদের মৃত্যু: ক্ষতিপূরণ দিতে হাই কোর্টের রায় স্থগিতের আবেদনে সাড়া মেলেনি চেম্বার আদালতে

জিহাদের মৃত্যু: ক্ষতিপূরণ দিতে হাই কোর্টের রায় স্থগিতের আবেদনে সাড়া মেলেনি চেম্বার আদালতে

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

রাজধানীর শাহজাহানপুর রেল কলোনির নলকূপের পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হাই কোর্টের রায় স্থগিতের আবেদনে সাড়া দেয়নি চেম্বার আদালত। রায় স্থগিত চেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিলের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন রেখেছে। চেম্বার আদালতের এ আদেশের ফলে জিহাদের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাই কোর্টের রায় বহাল রয়েছে বলছেন আইনজীবীরা। আদালতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও মো. আবদুল হালিম। পরে আবদুল হালিম বলেন, গত ৯ অক্টোবর রায় প্রকাশের পর ২২ অক্টোবর বিবাদিপক্ষ তার সত্যায়িত অনুলিপি হাতে পায়। রায়ে বলা হয়েছে, রায় হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিসকে ১০ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। চেম্বার আদালত যেহেতু রায় স্থগিত করেনি তাই হাই কোর্টের রায়টি বহাল আছে। আগামি জানুয়ারি ৯০ দিন পূর্ণ হবে। এর মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে আমরা আদালত অবমননার আবেদন জানাব। ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শাহজাহানপুর রেল কলোনিতে কয়েকশ’ ফুট গভীর একটি খোলা নলকূপের পাইপে পড়ে যায় চার বছরের জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। পাইপে জিহাদের অস্তিত্বই নেই- এমন সন্দেহ রেখেই উদ্ধার অভিযান স্থগিত করার কয়েক মিনিটের মধ্যে কয়েকজন তরুণের তৎপরতায় তৈরি করা যন্ত্রে পাইপের নিচ থেকে তুলে আনা হয় অচেতন শিশুটিকে। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, শিশুটি বেঁচে নেই। ওই ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ওই ঘটনা সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করলে দুই দিন পর চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন হাই কোর্টে রিট আবেদন করে, যাতে জিহাদের মৃত্যুর জন্য ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়। জিহাদকে উদ্ধারে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মো. আবদুল হালিম রিট আবেদনটি করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট রুল জারি করে, যেখানে জিহাদের মৃত্যুর জন্য ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়। এছাড়া সংবিধানের ৩১, ৩২ ও ৩৬ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী হওয়ায় শিশুটির মৃত্যুতে ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা, রেলওয়ে ও সিটি করপোরেশনের অবহেলাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়। সারা দেশে অরক্ষিত ও উন্মুক্ত পাইপ, কূপ, টিউবওয়েল, স্যুয়ারেজ পাইপ, গর্ত এবং পানির ট্যাঙ্কের তালিকা তৈরি করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে। স্বরাষ্ট্র ও রেলওয়ে সচিব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক, রেলওয়ের মহাপরিচালক, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেনটেইনেন্স), ওয়াসা চেয়ারম্যান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার ও শাজাহানপুর থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। ওই রুলের ওপর শুনানি শেষে একবছর পর গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্ষতিপূরণের পক্ষে রায় দেয় আদালত। এরপর গত ৯ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে হাই কোর্টের রায়টি প্রকাশ পায়।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর