বাড়ছে খুনখারাবি
১২ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে রাজধানীতে মা-ছেলে ও বাবা-মেয়ে খুনের ঘটনার পর দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব ঘটনা ঘটছে তা থেকে এটা স্পষ্ট যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে শুরু করেছে।
এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে আগামি দিনে পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে যাবে। এটাও ঠিক যে সমাজের কিছু মানুষ দিন দিন অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে দেশের সচেতন মানুষ যে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবে, এটাই স্বাভাবিক। খুনের ঘটনার পাশাপাশি সামাজিক অপরাধপ্রবণতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। খুনখারাবির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। বন্ধ হচ্ছে না নৃশংসতা ও অমানবিকতা।
দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করার পর থেকে আইন-শৃৎঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর দৃষ্টি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেদিকে নিবদ্ধ। এই সুযোগে দুর্বৃত্তরা নতুন করে সংগঠিত হয়ে মাঠে নামতে শুরু করেছে, এটাই স্বাভাবিক। অবাক হওয়ার বিষয় হচ্ছে, রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে একটি বাড়িতে কী করে দুটি খুনের ঘটনা ঘটতে পারে।
এমন একটি জায়গায়, মা ও ছেলেকে খুন করে খুনিরা নির্বিঘেœ পালিয়ে যাওয়ার পথ পায় কী করে? তাহলে কি তারা অনেক আগে থেকেই খুনের পরিকল্পনা করেছে? গৃহকর্তা, বাড়ির দারোয়ান ও গৃহকর্মীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পাঁচতলা বাড়িতে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটবে অথচ আশপাশের কেউ জানতে বা বুঝতে পারবে না, এটা তো হতে পারে না। এ ঘটনার পর আইন-শৃৎঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে গেছে। তদন্ত সম্পন্ন হলে পুরো বিষয়টি হয়তো জানা যাবে। কিন্তু ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে এমন জোড়া খুনের ঘটনার পর সাধারণ মানুষ কি আতঙ্কমুক্ত থাকতে পারবে? বাড্ডার ঘটনার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। বাবা ও মেয়ের খুনের পেছনের রহস্য কী হতে পারে? গাড়িচালক জামিল শেখ ও তাঁর তৃতীয় শ্রেণিতে পড়া মেয়েটিকে খুন করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রীকে নেওয়া হয়েছে পুলিশ হেফাজতে।
এ দুটি হত্যাকা- শুধু নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন যেসব ঘটনা ঘটছে, তা অশুভ ইঙ্গিতই বহন করছে। এ কথা ঠিক যে আমাদের সামাজিক অবক্ষয় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেখা দিয়েছে আচরণগত সমস্যা। কিন্তু প্রতিদিনের খুনের ঘটনাগুলো কি মেনে নেওয়া যায়?
এ অবস্থা থেকে মুক্ত হতে না পারলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি অসম্ভব। আমরা চাই, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক। স্বস্তি ফিরুক জনজীবনে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আন্তরিক তৎপরতায় ঢাকার দুই জোড়া খুনের রহস্যসহ সব অপরাধমূলক ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।