July 27, 2024, 1:08 pm

সংবাদ শিরোনাম
বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশের অভিযানে ১০ হাজার ইয়াবাসহ যুবক আটক পার্বতীপুরে নব-নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ভাই চেয়ারম্যানদ্বয়ের সংবর্ধনা রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা হতে জাল সার্টিফিকেট ও জাল সার্টিফিকেট তৈরীর সরঞ্জামাদিসহ ০২ জন’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ র‌্যাব-১০ এর অভিযানে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং এলাকা হতে ইয়াবাসহ ০১ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টিপাত পাহাড় ধ্বসে নারী-শিশু নিহত পীরগঞ্জে মসজিদের দোহাই সরকারি খাস জমির গাছ কর্তন পার্বতীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক হোসেন এর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন দারুসসালাম লাফনাউট মাদ্রাসার দস্তারবন্দী নিবন্ধন ফরম বিতরণ শুরু পীরগঞ্জে নিখোঁজের একদিন পর শিশু’র লাশ উদ্ধার মাদক মামলায় ১৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামী আলাউদ্দিন’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০

পুলিশ স্বামীর প্রতারণার বিচার চান প্রতারিত এক ফাতেমা

পুলিশ স্বামীর প্রতারণার বিচার চান প্রতারিত এক ফাতেমা

মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার

স্বামী, সন্তান, অর্থ সব হারিয়ে নি:স্ব শ্রীমঙ্গলের এক ফাতেমা রেলপুলিশ স্বামী ফারুকের প্রতারণার বিচার চান।

জানা যায়-  মৌলভীবাজারস্থ স্বামীগৃহ হতে চট্টগ্রামস্থ পিত্রালয়ে যাবার উদ্দেশ্যে গত ২০১৪ সালের ১২ মার্চ  শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে ষ্টেশনে পৌছেন চট্টগ্রামের আকবরশাহ উপজেলার কর্নহাট গ্রমের মৃত: আলী আহমদের কন্যা ফাতেমা আক্তার (৪০)। এসময় ষ্টেশনে ডিউটিরত শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার কনেস্টবল বরিশাল জেলাসদরের দক্ষিণ আড়াইকান্দা গ্রামের মৃত: সোনা মিয়ার পুত্র ফারুক হোসেন ফাতেমার সাথে কথা বলেন এবং টিকিট করার ব্যাপারে সহায়তা করেন। ফাতেমা ট্রেনে আরোহণের সময় তার মোবাইল ফোন নম্বরটিও চেয়ে নেন ফারুক। পরে ফারুক তার ০১৭৭৮-৭৫৭০১২ নম্বরযুক্ত মোবাইল ফোন থেকে ফাতেমার সাথে যোগাযোগ করে বলেন ‘ফিরে এসে আমার সাথে দেখা করো, জরুরী কথা আছে’। ফাতেমা চট্টগ্রাম থেকে ফেরার ১০ দিন পর শ্রীমঙ্গল ষ্টেশনে দেখা করলে, চট্টগ্রাম যাবার কারণ জানতে চান ফারুক।

ফাতেমা জানান- বাবার বাড়ীর ফরাইজের অংশ বিক্রির ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা আনতে গিয়েছিলেন। এসময় ফারুক বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে ফাতেমাকে বলেন- ‘রেল পুলিশের চাকরী করে লাভ নাই’। রাত দিন ডিউটি করে কি লাভ হলো ? ভাত পাইনা খেতে। এর উপর ‘বউটাও মরে গেছে’ কয়েকবছর আগে। আমি তোমাকে বউ হিসাবে পেতে চাই। তোমার ওই টাকা হতে ৫ লাখ টাকা আমাকে দিয়ে দেবে এবং তোমার স্বামীকে তালাক দিয়ে আমার কাছে চলে আসবে। তারপর দুজন অন্য দেশে পালিয়ে যাব। ‘তোমার জন্য আমি জীবন দিতে প্রস্তুত আছি’।

এসব নানা প্রলোভন ও মিষ্টি কথায় ভুলে ফারুকের প্রেমে পাগল হয়ে ফাতেমা তার স্বামীকে তালাক দিয়ে স্বামী সন্তানদেরকে ত্যাগ করে বিগত ০৯/১২/২০১৫ইং নোটারি পাবলিক অফিসে এফিডেভিট ও রেজিষ্ট্রিকৃত কাবিনমূলে ফারুককে বিয়ে করে শ্রীমঙ্গল ষ্টেশন সংলগ্ন রেলবেড়ি আউটারে সত্তার মিয়ার বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে নতুন সংসার শুরু করেন। পরবর্তীতে বাবার বাড়ির ফরাইজ বিক্রির টাকা হতে ৩ বারে ৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা তুলে দেন স্বামী রেল পুলিশ ফারুকের হাতে। এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই ভরণ পোষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে ফাতেমার সাথে ফারুক নানা টালবাহানা শুরু করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে শুরু হয় দাম্পত্য বিরোধ।

একপর্যায়ে বিগত ২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে ফারুক ডিউটি শেষে বাসায় এসে ফাতেমাকে বেধড়ক মারপিট শুরু করে। ফাতেমার শোর-চিৎকারে বাসার মালিক সত্তার মিয়া ও মানিক মিয়াসহ কয়েকজন প্রতিবেশী এসে তাকে উদ্ধার করেন এবং বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নেন। কিন্তু তা অগ্রাহ্য করে ফারুক কাপড়-চোপড় নিয়ে সিলেটে যাবার জন্য শ্রীমঙ্গল রেলষ্টেশনে চলে যান। বিষয়টি টের পেয়ে ফাতেমা সব মান-অভিমান ভুলে রেলষ্টেশনে ছুটে গিয়ে ফারুককে জড়িয়ে ধরে বাসায় ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। উপস্থিত যাত্রীরাও তাকে বাসায় ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে ট্রেন ছাড়ার মুহুর্তে ফারুক তাকে লাথি দিয়ে ফেলে ট্রেনে উঠে যায়। কিছুদিন পর ফারুক বাসায় ফিরে স্বাভাবিকভাবে দাম্পত্য জীবন কাটাতে থাকেন।

একপর্যায়ে ফাতেমা গত ০৩/০৫/২০১৭ইং বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা তুলে আনলে ফারুক আবারও নানা প্রলোভন দিয়ে ওই টাকাগুলো নিতে চান। ফাতেমা তাতে অপারগতা প্রকাশ করলে উভয়ের মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে ফাতেমাকে বেধড়ক মারপিট করে জোরপূর্বক টাকাগুলি নিয়ে চলে যান। এরপর থেকে তিনি ফাতেমার সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ ছিন্ন করেন। ফাতেমা ফোন করলে মা-বাবা তুলে জঘন্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকীসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ফাতেমা স্বামী রেল পুলিশ ফারুকের এহেন প্রতারণা ও আতœসাতের প্রতিকার চেয়ে একাধিকবার বিভিন্ন থানায় জিডি, রেলওয়ে বিভাগের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ, পুলিশ সুপার ও ডিআইজি বরাবর আবেদন নিবেদন করলেও, কেউ তা আমলেই নিচ্ছেননা। সর্বশেষ গত ২২ অক্টোবর আইজিপি বরাবর অভিযোগপত্র নিয়ে ঢাকায় গেলে তাকে আইজিপি’র অফিসে ঢুকতেই দেননি সংশ্লিষ্টরা। ফলে, ব্যর্থ হয়ে ফাতেমা শ্রীমঙ্গলে ফিরে আসেন। এদিন রাতে ফারুক ফোন করে ফাতেমাকে বলে- তুই যার কাছেই অভিযোগ করিসনা কেন, কেউই আমাকে কিছু করতে পারবেনা। কাজেই এসব বাদ দিয়ে আল্লাহ আল্লাহ কর। নইলে তোর কপালে খুব খারাপি আছে।

এভাবেই স্বামী, সন্তান, অর্থ সব হারিয়ে নি:স্ব ফাতেমার এখন সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে আর্তি- যে লোকটি আমার সাথে মহা প্রতারণা করলো, আমার সব অর্থ আতœসাৎ করলো, আমাকে সর্বশান্ত করলো, তার বিরুদ্ধে প্রতিকার পাবার অধিকার কি আমার নেই ? আমি রাষ্ট্রের কাছে রেলপুলিশ স্বামী ফারুকের প্রতারণার বিচার চাই।

এ ব্যপারে এ প্রতিবেদক রেল পুলিশ ফারুকের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন- স্ত্রী ফাতেমার বুঝার ভুল। সে আমার সাথে ও আমার অফিসারদের সাথে খারাপ আচরন করেছে। আমার নামে বিভিন্ন জায়গায় জিডি করেছে। তার কোন টাকা আমি আতœসাৎ করিনি। সকল টাকার তার মেয়ের জামাইর ব্যাংক একাউন্টে রয়েছে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর