ঘুষ ও অবৈধ সম্পদ অর্জন: পিডিবির সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ঘুষের মাধ্যমে অর্জিত সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা পাচার এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মু শহীদুল আলমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদকের উপ-পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ বাদী হয়ে গতকাল বুধবার রাজধানীর কলাবাগান ও রমনা থানায় মামলা দুটি দায়ের করেন। শহীদুলের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে করা মামলায় ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৪৫০ টাকা ‘অস্বাভাবিক লেনেদেন এবং স্থানান্তরের’ অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, দুদকের অনুসন্ধানে ওই টাকার কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। ওই টাকা তিনটি ব্যাংকে জমা করে তিনি পরে উত্তোলন করেন। এখন ওই টাকার কোনো হদিস মিলছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, ওই টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। শহীদুল আলম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে সহকারী প্রকৌশলী থেকে প্রধান প্রকৌশলী পর্যন্ত বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। ওই সময়ের মধ্যে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি কয়েক কোটি টাকা অর্জন করেছেন বলে অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে দুদক। মামলার এজাহারে বলা হয়, শহীদুল আলম অবৈধ টাকার উৎস গোপন করতে ঢাকায় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে তার নামে সঞ্চয়ী হিসাব খুলে ২০০২ সালের ৯ জুলাই থেকে ২০০৫ সালের ২০ মার্চ সময়ের মধ্যে এক কোটি পাঁচ লাখ ৩৮ হাজার টাকা জমা করে পরে তুলে নেন। এ ছাড়া যমুনা ব্যাংকের সোনারগাঁ রোড শাখায় সঞ্চয়ী হিসাবে ২০০৪ সালের ২৩ মার্চ থেকে ২০০৪ সালের ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত এক কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমার তথ্যও পেয়েছে দুদক। একই শাখাতে এসটিডি হিসাবে ২০০৪ সালের ১৯ অক্টোবর থেকে ২০০৭ সালের ১৭ জুন পযন্ত এক কোটি ২০ লাখ টাকা ভুয়া ব্যক্তি সাজিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৪টি এফডিআরের মাধ্যমে ওই অর্থ কৌশলে পাচার করেন। অন্যদিকে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের নিউ ইস্কাটন শাখায় শহীদুল আলম নিজের সরকারি কর্মকর্তার পরিচয় গোপন করে ‘প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ার’ পরিচয়ে সঞ্চয়ী হিসাব খুলে ২০০৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পযন্ত এক কোটি ৭৯ লাখ ১৬ হাজার ৪৫০ টাকা জমা করেন বলে এজাহারে বলা হয়েছে। পরবর্তীতে এক কোটি ৭০ লাখ টাকা নগদ উত্তোলন করেন তিনি। নিজ নামে এবং ভুয়া ব্যক্তি সাজিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১২টি এফডিআরের মাধ্যমে তিনি ওই অর্থ স্থানান্তর করেন। রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় শহীদুলের বিরুদ্ধে ২৪ লাখ ৪২ হাজার ৪৯৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সালের ১৪ জানুয়ারি কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ২৪ লাখ ৪২ হাজার ৪৯৫ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন শহীদুল আলম, যা তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ।