স্তন ক্যান্সারে এআই
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে স্তনে পাওয়া কোনো ক্ষত পরবর্তীতে ক্যান্সেরের রূপ নেবে কিনা তা অনুমান করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা।
এই মেশিন লার্নিং ব্যবস্থায় ৩৩৫টি উচ্চ ঝুঁকির ক্ষত পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় ব্যবস্থাটি ৯৭ শতাংশ ক্ষেত্রে সঠিকভাবে ক্ষতগুলোকে মারাত্মক হিসেবে শনাক্ত করেছে বলে বিবিসি’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হসপিটাল (এমজিএস), ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)-এর ম্যাসাচুসেটস কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স ল্যাব এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল-এর বিজ্ঞানীরা এই গবেষণা চালিয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এটি দরকার ছাড়া অস্ত্রোপচারের সংখ্যা ৩০ শতাংশেরও বেশি কমিয়ে দিয়েছে। এই গবেষণাকে ‘উপকারি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন একজন স্তন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ।
মেশিন লার্নিং ব্যবস্থাটিকে এ ধরনের ক্ষত নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এটি পারিবারিক ইতিহাস, পরীক্ষার জন্য দেহ থেকে কেটে নেওয়া অংশ, প্যাথলজি প্রতিবেদনের মতো বিভিন্ন ধরনের ডেটা ব্যবহার করে ফলাফল দিয়ে থাকে।
এমআইটি’র তড়িৎ প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের ডেল্টা ইলেকট্রনিকস অধ্যাপক রেজিনা বারজিলে বলেন, “রোগ নির্ণয়ের টুলগুলোর দেওয়া ফল এতোটাই অনিশ্চিত থাকে যে, স্তন ক্যান্সারের জন্য বারবার পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার একটি প্রবণতা চিকিৎসকদের মধ্যে আছে।”
নিজেই স্তন ক্যান্সার থেকে বেঁচে আসা অধ্যাপক বারজিলে বলেন, “ডেটা নিয়ে যখন প্রচুর অনিশ্চয়তা রয়েছে, তখন মেশিন লার্নিং ঠিক এমন একটি টুল যা রোগ নির্ণয়ে আর প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা দিতে আমাদের দরকার।”
শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতি বছর ৪০ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে মারা যান। কিন্তু এই ক্যান্সার দ্রুত শনাক্ত করা গেলে তাদেরকে অধিকাংশ সময় সুস্থ করা সম্ভব হয়।
ম্যামোগ্রাম এ ধরনের ক্যান্সার শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও মাঝেমধ্যে এই পদ্ধতিতেও রোগের নমুনা পাওয়া গেছে বলে ভুল ফলাফল দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে সার্জারির পর এ ধরনের অনেক ক্ষতই আরও বেশি ক্ষতিকর হয়ে উঠে।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল-এর অধ্যাপক ও এমজিএইচ-এর রেডিওলজি বিভাগের ব্রেস্ট ইমেজিং ডিভিশন-এর প্রধান কনস্ট্যান্স লেইম্যান বলেন, “আমাদের জানামতে, উচ্চ ঝুঁকির ক্ষতগুলোর মধ্যে কোনোগুলোর সার্জারি দরকার আর কোনগুলোর নয় তা নির্ণয়ে মেশিন লার্নিং ব্যবহার করতে এটিই প্রথম গবেষণা।”
“আমরা বিশ্বাস করি এটি নারীদেরকে তাদের চিকিৎসা নিয়ে আরও তথ্যসমৃদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে। আর আমরা সাধারণভাবে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে আরও নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে আগাতে পারব।”