October 9, 2024, 3:30 pm

সংবাদ শিরোনাম
আসন্ন শারদীয়া দুর্গাপূজা শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রশাসন ও জনগণের প্রীতি আহ্বান – পর্ব ৮ প্রশাসন সংস্থা ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থা চলতে পারে না-পর্ব ৭ মাতৃভূমির এক ইঞ্চি জমি ছাড় দেওয়া হবে না, পর্ব ৬ স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪) ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে গড়তে হলে সংস্কার প্রয়োজন=== বৈষম্য বিরোধী অভিভাব ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে অদ্ভুতুরে কাণ্ডকীর্তি ভোলা বোরহানউদ্দিনে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকগণের ১০ম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন

এম কে আনোয়ারকে বিএনপির শেষ শ্রদ্ধা, আজ কুমিল্লায় দাফন

এম কে আনোয়ারকে বিএনপির শেষ শ্রদ্ধা, আজ কুমিল্লায় দাফন

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ারের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টায় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রয়াত এই নেতার মরদেহ নিয়ে আসা হলে বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তার কফিন দলীয় পতাকায় ঢেকে দেন। পরে কফিনে ফুল দিয়ে নীরবে কিছুসময় দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা। বিগত চার দলীয় জোট সরকারের কৃষিমন্ত্রী এম কে আনোয়ার গত সোমবার রাত দেড়টার দিকে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কাঁটাবন মসজিদে এক দফা জানাজার পর এই বিএনপি নেতার কফিন নিয়ে যাওয়া হয় নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্বের আগে জানাজায় অংশ নেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, হাফিজউদ্দিন আহমেদ, শাহজাহান ওমর, মোহাম্মদ শাহজাহান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আজম খান, আবদুল হালিম, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবদুল কাইয়ুম, শাহজাদা মিয়া, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবুল হাই, রেজাউল করীম, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, ওবায়দুল ইসলাম, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, রফিক শিকদার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমসহ সহা¯্রাধিক নেতা-কর্মী ওই জানাজায় অংশ নেন। অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের মধ্যে ছিলেন সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, কাজী আবুল বাশার, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, ইয়াসীন আলী, আনোয়ার হোসেইন, নুরুল ইসলাম খান নাসিম, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, রাজীব আহসান, এম এ মালেক ও শাহ নেসারুল হক। এম কে আনোয়ারের বড় ছেলে মাহমুদ আনোয়ারও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের সময়ে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ও। জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের নির্যাতন এম কে আনোয়ারকে পিছু হটতে দেয়নি। তিনি গণতন্ত্রের যে আদর্শে বিশ্বাস করতেন, সেই আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য সব সময় ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং জনগণকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে তার এই চলে যাওয়া শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, আমাদের বিএনপির জন্য শুধু নয়, সমগ্র দেশের জন্য একটা অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে গেল। এরকম নির্ভিক, সৎ মানুষ আমাদের মাঝে আজকাল বিরল। এম কে আনোয়ারের মৃত্যুতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা একজন সৎ, নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদকে হারালাম। দেশবাসীকে অনুরোধ করব, তারা যেন এম কে আনোয়ারের জন্য দোয়া করেন। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ একজন সৎ, যোগ্য, নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ এবং একজন ভদ্রলোককে হারিয়েছে। এম কে আনোয়ারের মৃত্যুতে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করেন। কুমিল্লার হোমনা আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া এম কে আনোয়ারের মরদেহ দুপুরে বিএনপি অফিস থেকে নিয়ে যাওয়া হয় সংসদ ভবন দক্ষিণ প্লাজায়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ, বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল মান্নান, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ সাংসদের কর্মকর্তারা সেখানে জানাজায় অংশ নেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাতে এম কে আনোয়ারের কফিন রাখা হবে বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে। তার ছোট ছেলে মাসুদ আনোয়ার ও মেয়ে খাদিজা আনোয়ার আজ বুধবার ভোরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পর সড়ক পথে কফিন নিয়ে যাওয়া হবে এম কে আনোয়ারের নির্বাচনী এলাকা কুমিল্লার হোমনায়। পথে দাউদকান্দির তিতাসে বাদ জোহর এবং হোমনায় বাদ আসর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে এই রাজনীতিবিদকে দাফন করা হবে। এম কে আনোয়ারের মৃত্যুতে গতকাল মঙ্গলবার শোক পালন করেছে বিএনপি। সকাল থেকেই দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অধনমিত রাখা হয়। পাশাপাশি উত্তোলন করা হয় কালো পতাকা। স্থায়ী কমিটির প্রবীণ এই সদস্যের মৃত্যুতে বিএনপির পক্ষ থেকে একদিনের শোক পালন করার সিদ্ধান্তের কথা গতকাল মঙ্গলবার সকালে জানান দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে এই শোক পালন হচ্ছে। দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এম কে আনোয়ারের মৃত্যুতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শোক বইও খোলা হয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন, তার মৃত্যুতে দলের পূর্বঘোষিত সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে; এটি বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এমকে আনোয়ারের পুরো নাম মোহাম্মদ খোরশেদ আনোয়ার; ১৯৩৩ সালে কুমিল্লায় দেবীদ্বারে তার জন্ম। পাকিস্তান আমলে সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর স্বাধীন বাংলাদেশেও প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন এমকে আনোয়ার। সরকারের অর্থ সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্বও তিনি পালন করেন। ১৯৯০ সালে অবসরের পর এম কে আনোয়ার রাজনীতির মাঠে নামেন, যোগ দেন বিএনপিতে। কুমিল্লার হোমনা আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এম কে আনোয়ার খালেদা জিয়ার বিএনপি সরকারে দুই দফা মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। ২০০১-২০০৬ মেয়াদে তিনি কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে নাশকতা, সাম্প্রদায়িক উসকানিসহ বিভিন্ন অভিযোগে বহু মামলা হয় দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে। এম কে আনোয়ারও তার অনেকগুলোর আসামি।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর