বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়া ২শ’র বেশি রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে: আইজিপি
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়া ২০০ এর বেশি রোহিঙ্গাকে আটক করে কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরির্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক। গতকাল সোমবার দুপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা জানান পুলিশ প্রধান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য পুলিশ-র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনী চেকপোস্ট স্থাপন করেছে। এ পর্যন্ত দুইশর বেশি রোহিঙ্গাকে এসব চেকপোস্ট থেকে আটক করে আবার ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সেনা অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে গত তিন সপ্তাহে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। দেশটিতে নাগরিকত্বের অধিকার বঞ্চিত চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আগে থেকেই কক্সবাজারে রয়েছে। নতুন আসা রোহিঙ্গাদের অনেকেই পরিবারসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে। একদেশের নাগরিকদের এভাবে অন্যদেশে ঢুকে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়া পড়া অবৈধ জানিয়ে আইজিপি শহীদুল বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাদের গ্রেফতার করা উচিত ছিল। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের আবার ক্যাম্পে ফেরত পাঠিয়েছি। কোনো প্রতারক চক্রের মাধ্যমে যাতে রোহিঙ্গারা দেশের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে সেবিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে। কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াতের নেতাকর্মীদেরও ত্রাণ দিতে দেখা যায়। এতে রোহিঙ্গাদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, আমরা এখানে কাউকে জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে দিতে দেব না। ত্রাণ দিতে হলে সেখানকার জেলা প্রশাসককে জানিয়ে দিতে হয়। যে কেউ গিয়ে এভাবে ত্রাণ দিতে পারবে না। দুর্গাপূজা ও আশুরা উপলক্ষে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা মাথায় রেখে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান শহীদুল হক। দুই সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি যেন না হয়, সেজন্য দুই সম্প্রদায়ের নেতাদেরকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে। এবার তাজিয়া মিছিলের নিশানার লাঠি ১২ ফুটের বেশি হতে পারবে না। এ ছাড়া ব্যাগ, পোটলা, ছুরি, কাঁচি এসব মিছিলে নিয়ে যাওয়া যাবে না। যে কেউ মিছিল নিয়ে হোসনি দালান এলাকায় ঢুকতে পারবে না বলে জানান পুলিশের মহাপরিদর্শক। এদিকে, বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করতে কেউ চাল মজুদ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি মজুদদারদের বিরুদ্ধে এই হুঁশিয়ারি দেন। সরকারের চালের মজুদ কমে আসায় নানা দেশ থেকে আমদানি বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে চাল মজুদ করে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির চক্রান্ত চলছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। চালের বর্তমান দর বৃদ্ধির জন্য এই বাজারে কারসাজিকে দায়ী করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল বলেন, মজুদদারির বিরুদ্ধে আইনই আছে। কেউ যদি মজুদ করে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে, নিচের লেভেলে নির্দেশনা দেওয়া আছে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে। চালের দর বৃদ্ধিতে কারসাজির সন্দেহ প্রকাশের পর বাংলাদেশ চালকল মলিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদের কুষ্টিয়ার চালকলে গত রোববার অভিযান চালায় স্থানীয় প্রশাসন।