টাঙ্গাইলে রূপা ধর্ষণ–হত্যা মামলার অভিযোগপত্র ট্রাইব্যুনালে
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ‘ল’ কলেজের শিক্ষার্থী রূপা খাতুনকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার অভিযোগপত্র বিচারিক হাকিম আদালত থেকে গতকাল সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে। এর আগে তদন্ত শেষে গত রোববার সন্ধ্যায় মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পুলিশ। টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গতকাল সোমবার এ মামলার অভিযোগপত্র জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম গোলাম কিবরিয়ার আদালতে উপস্থাপন করা হয়। বিচারক মামলাটি বিচারিক আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেন। মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখে ওই আদালতে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে। এদিকে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রূপা খাতুনের ভাই হাফিজুল ইসলাম। তিনি অভিযুক্ত আসামিদের বিচার দ্রুত শেষ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চান। ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপা খাতুনকে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকরা ধর্ষণ করে। পরে তাকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ওই রাতেই তার লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। রূপার ভাই ২৮ আগস্ট মধুপুর থানায় এসে মরদেহের ছবি দেখে রূপাকে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর (৪৫), সুপারভাইজার সফর আলী (৫৫), সহকারী শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীরকে (১৯) গ্রেফতার করে। পুলিশের কাছে তারা রূপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে। ২৯ আগস্ট বাসের তিন সহকারী শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর এবং ৩০ আগস্ট চালক হাবিবুর এবং সুপারভাইজার সফর আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তারা সবাই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছে। ৩১ আগস্ট রূপার লাশ উত্তোলন করে তার ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়। ১২ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সাইফুর রহমান খান ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জমা দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন মাথায় আঘাত জনিত কারণে রূপার মৃত্যু হয় এবং মৃত্যুর আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুপুরের অরনখোলা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক কাইয়ুম খান সিদ্দিকী গত রোববার সন্ধ্যায় আদালতে গ্রেফতারকৃত পাঁচ পরিবহন শ্রমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।