-
- জেলা সংবাদ
- কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ঝুঁকিপূর্ণ মহাসড়কে সন্তান প্রসব!
- আপডেট সময় August, 8, 2022, 1:48 pm
- 116 বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
খানাখন্দে ভরা মহাসড়ক। সামান্য বৃষ্টি হলে হাটু পানি কিংবা কাধায় পরিণত হয় সড়কটি। যান চলাচলে অনুপযোগী দীর্ঘদিন ধরে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে পরিবহন যাত্রী ও পথচারীদের। এতে প্রায়ই ঘটছে নানান দূর্ঘটনা। এমন এক দূর্ঘটনার শিকার হয়েছেন শেফালী খাতুন (২৮) নামের এক প্রসূতি।
শনিবার রাতে ওই প্রসূতির প্রসব ব্যাথা উঠে। পরে ভ্যানে করে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন স্বজনরা। খানাখন্দে ভরা সড়কে গাড়ির ঝাঁকিতে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি।
শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে জামালপুর (নন্দীবাজার)-ধানুয়া কামালপুর-রৌমারী-দাঁতভাঙ্গা সড়কের কুড়িগ্রাম অংশের রৌমারী উপজেলা শহরের ইসলামী ব্যাংকের সামনে পৌঁছলে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটির সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ বন্ধ থাকলেও নজরদারি নেই কারও। প্রসূতি শেফালী খাতুন ফরিজল হকের স্ত্রী। তাঁর বাড়ি রৌমারী সদর ইউনিয়নের রৌমারী উত্তরপাড়া গ্রামে।
শেফালী খাতুনের শ্বশুর আজিমুদ্দিন জানান, প্রসব ব্যাথা উঠলে শেফালী খাতুনকে অটোভ্যানে করে হাসপাতালে নেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হয়। উপজেলা শহরের ইসলামী ব্যাংকের সামনে সড়ক ভাঙাচুড়া হওয়ায় গাড়িতে প্রচন্ড ঝাঁকি লাগে। এসময় একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন শেফালী খাতুন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও কারো নজর নেই। সড়কটি ভালো থাকলে আজ আমার নাতির জন্ম সড়কে হতো না। আমার ছেলের বউ অসুস্থ্য।
রৌমারী উপজেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি সেলিম মিয়া বলেন, ২০১৮সালে সাড়ে ৩১কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য সরকার ৩৩২কোটি ১০লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও জনগণ এখনো এর কোনো সুফল পাচ্ছে না। দূর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে। বিশেষ করে উপজেলা পরিষদ গেইট থেকে থানা মোড় পর্যন্ত এই সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। বেহাল এ সড়কে গাড়ি চলাতো দূরের কথা, পায়ে হেটে চলাই মুশকিল। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নজরে একাধিকবার আনলেও কোনো ফল নেই।
সড়কটির পাশে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটি কাদা আর পানিতে তলিয়ে যায়। আবার বৃষ্টি না হলে ধুলাবালিতে ভরে যায় পুরো শহর। এসময় যানবাহনের ছিঁটা কাদা এসে দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। এতে অনেক ক্ষতি হয়।
অটোভ্যান চালক আব্দুল খালেক বলেন, ‘এ রাস্তায় গাড়ি চালাবার গেলেই প্রত্যেক দিন গাড়ি নষ্ট হয়। দিনে যা আয় হয়, গাড়ি হারতেই (মেরামত) তা শ্যাষ হয়। আমরা গরিব মানুষ। রাস্তা ভালো না। বাঁচুম কিবা কইরা।’
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও- ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, রাস্তার মাঝে সন্তান প্রসবের বিষয়টি জেনেছি। এতে তিনি দু:খ প্রকাশ করেন। সড়কের বেহাল দশার বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সহ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে জানানো হয়েছে। এছাড়াও কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলীকেও অনেকবার বলা হয়েছে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, মাটি না পাওয়ার কারনে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, চলতিমাসের (আগষ্ট) ১৫ তারিখ থেকে কাজ শুরু করবেন।
এ জাতীয় আরো খবর