খন্দকার সোহেল রানা সৈকত
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে পুলিশ পরিচয়ে মাদক তল্লাশির নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে ঘরের লেপ-তোশক উল্টাপাল্টা ও আসবাবপত্র তছনছ করে ৭০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার আওলাই ইউনিয়নের গুড়নী গ্রামের শ্রী সুবত মালি (২৮) নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলযোগে তিন ব্যক্তি গুড়নী গ্রামের শ্রী সুবতের বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। তাদের কাছে হ্যান্ডকাফ ও কোমরে ওয়াকি-টকি ছিল। তারা পুলিশ পরিচয় দিয়ে সুবতের বাড়িতে ঢুকে দুটি ঘরের তালা ভেঙে লেপ-তোশক উল্টাপাল্টা ও ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে।
এসময় সুবতের বাড়িতে তার বৃদ্ধা দাদি ছিলেন শুধু। সেই বৃদ্ধা পুলিশ পরিচয়দানকারীদের বাঁধা দিলে তারা তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে ঘরের ভেতরে থাকা ৭০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। গ্রামবাসী বুঝে ওঠার আগেই তারা টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। পরে গ্রামবাসী জানতে পারে তারা আসল পুলিশ নয়, প্রতারক।
সুবতের প্রতিবেশী প্রত্যক্ষদর্শী রাধা রাণী ও নূপুর জানান, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে তিন ব্যক্তি সাদা পোশাকে সুবতের বাড়ির সামনে এসে জিজ্ঞেস করে সুবতের বাড়ি কোনটা। এরপর বাড়ি দেখিয়ে দিলে তারা আর কোনো কথা না বলেই সুবতের বাড়ির ভেতরে দুজন ঢুকে পড়ে। তাদের একজনের হাতে হ্যান্ডকাফ ও অন্যজনের কোমরে ওয়াকি-টকি ছিল। তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়েছে। আমরাও তাদের হাতে হ্যান্ডকাফ ও ওয়াকি-টকি দেখে তাদের পুলিশ ভেবেছি। তখন সুবতের বাড়িতে কেউ ছিল না। শুধু তার বৃদ্ধা দাদি ছিল। তাকেও তারা ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে ঘরের তালা ভেঙে টাকা নিয়ে দ্রুত উধাও হয়ে যায়।
সুবতের স্ত্রী কাজলী বলেন, আমি বাইরে কাজ করছিলাম। খবর পেয়ে এসে দেখি তারা আমার ঘরের তালা ভেঙে আসবাব পত্র তছনছ করে ফেলেছে। তারা আমাকে বলে, তোমার ঘরে মাদক আছে আমরা তল্লাশি করছি, আমরা পুলিশের লোক। এসময় আমার ঘরের ভেতরে জমি ফেরত নেওয়ার জন্য ৭০ হাজার টাকা ছিল, তারা সেই টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। পরে জানতে পারলাম তারা আসল পুলিশ নয়, প্রতারক ছিল।
সুবত মালি দৈনিক প্রাইভেট ডিটেকটিভ’কে বলেন, আমি মাঠে কাজ করছিলাম। দিনের বেলায় প্রকাশ্যে দিবালোকে পুলিশ পরিচয়ে আমার ঘরের তালা ভেঙে ৭০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছে তারা। আমি গবিব মানুষ, জমি ফেরত নেওয়ার ওই টাকা ঘরে রেখেছিলাম। আমি এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কীভাবে চলব। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
আওলাই ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাম্মদ আলী দৈনিক প্রাইভেট ডিটেকটিভ’কে বলেন, আমরা শুনছি দেখছি জানছি যে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বর্তমানে পুলিশ পরিচয় দিয়ে যেখানে সেখানে চুরি ছিনতাই হচ্ছে। সুতরাং আমি একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে নিশ্চয়ই এমন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনগত ভাবে বিচারের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
পাঁচবিবি থানার ওসি মো. কাওসার আলী দৈনিক প্রাইভেট ডিটেকটিভ’কে জানান, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।