January 12, 2025, 8:01 am

রাজাপুরে মৌলিক স্বাক্ষরতার কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগ

 

ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির রাজাপুরে ছয় মাস মেয়াদী মৌলিক স্বাক্ষরতা
কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই প্রকল্পে চুক্তিভিত্তিক ছয় মাস
মেয়াদী শিক্ষকদের অনেকেই সম্মানি ভতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ
পেয়েছেন সম্মানির কিছু অংশ মাত্র ।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, ২০১৯ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ধীন
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আওতায় ৬৪ জেলায় ছয় মাস মেয়াদী মৌলিক স্বাক্ষরতা
প্রকল্প চালু হয়। যে প্রকল্প বাস্তবায়নের দ্বায়িত্ব পান ভিলেজ এন্ড সিটি
ডেভলপমেন্ট সোসাইটি নামে একটি এনজিও । উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
এই প্রকল্পের সভাপতি। বাস্তবায়নকারী সংস্থা ভিলেজ এন্ড সিটি ডেভলপমেন্ট
সোসাইটি (ভিসিডিএস) এর প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান ও প্রোগ্রাম
অফিসার এনজিও প্রতিনিধি মনিরউজ্জামান রেজোয়ান রাজাপুর উপজেলার দায়িত্ব
পালন করেন। সেই সময়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হাওলাদার
উপজেলার ছয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিয়ে তিন’শ কেন্দ্রে মোট ছয়’শ জন
শিক্ষক-শিক্ষিকা ও বিশ জন সুপারভাইজার নিয়োগ দেন। এরপর কোভিট-১৯ শুরু হলে
প্রকল্পের সকল কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। কোভিট-১৯ নিয়ন্ত্রনে আসলে ৮
ডিসেম্বর আঙ্গায়িার একটি কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে প্রকল্পের কার্যক্রম
পুরুরায় শুরু হয়। এই প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম গত ৭ জুলাই শেষ হয়।
প্রকল্পের একাধিক শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, প্রথম ধাপে তাদের দুই মাসের
সম্মানি একসাথে ৪ হাজার ৮ শত টাকা থেকে ৫’ শত টাকা কেটে নেয়া হয়।
যারা এলাকায় থাকে না তারা অনেকেই পেয়েছেন অর্ধেক টাকা। অনেক শিক্ষককে
সম্মানি না দিয়ে তাদের পরিবর্তে প্রকল্পের স্থানীয় প্রতিনিধিদের লোক দাঁড়
করিয়ে কৌশলে হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। ইউএনও নুসরাত জাহান খাঁন
এর সময়ে তাকে না জানিয়ে ঈদুল আজহার কয়েকদিন আগে কিছু শিক্ষকদের চার
মাসের সম্মানি থেকে ৪ হাজার ৬ শত টাকা কেটে রেখে ৫ হাজার,কারো কাছ
থেকে ৬ হাজার ৬শত টাকা কেটে রেখে ৩ হাজার টাকা দেয় প্রকল্পের স্থানীয়
প্রতিনিধিরা। গালুয়া ইউনিয়নের শিক্ষক মো. সুমন, হাবিবা আক্তার,মরিয়ম
আক্তার জানায়, ছয় মাসের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও তারা এখন পর্যন্ত সম্মানির এক
টাকাও পায়নি।
প্রকল্পের শুক্তাগড় ইউনিয়ন সুপারভাইজার মো. রবিউল ইসলাম জানায়, শেষের চার
মাসে প্রত্যেক শিক্ষককে পাঁচ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। যদিও ৪ মাসের
সম্মানি ৯ হাজার ৬ শত টাকা।
ভিসিডিএস এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুল গফফার খান বলেন, রাজাপুর উপজেলায়
আমাদের প্রতিনিধি মাহমুদ হাসান ও প্রোগ্রাম অফিসার এনজিও
প্রতিনিধি মনিরউজ্জামান রেজোয়ান রয়েছে। ওখানে সবকিছু তারা পরিচালনা
করে। টাকা-পয়সা নিয়ে এদিক-সেদিক করার কোন সুযোগ নেই। তারপরেও যদি
হয়ে থাকে তার দায়ভার তাদের। প্রকল্পের মোট ব্যয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি
তা এড়িয়ে যান।
ভিসিডিএস এর উপজেলা প্রতিনিধি মো. মাহমুদ হাসান বলেন, ছয় মাসের
প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ছয়’শ শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে পাঁচ’শ জনকে

সম্মানি ভাতা দেয়া হয়েছে। বাকি এক’শ জনের সম্মানি ভাতা পর্যাক্রমে দেয়া
হবে। সম্মানি ভাতা কেটে রাখার বিষয় জানতে চাইলে সে কলটি কেটে দেয়। পরে
একধিকবার ফোন দিলেও সে আর রিসিব করে না।
ঝালকাঠি উপ আপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো সহকারি পরিচালক মো. জান-ই আলম
হাওলাদার বলেন, অভিযোগের বিষয় জানতে পেরে ইউএনওকে ফোন দিয়ে ছিলাম এখনও
তার কাছে অভিযোগ জমা পড়েনি। বিষটি তদন্ত করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্পের সভাপতি নুসরাত জাহান খান বলেন,
বিষটি আমি শুনেছি অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্তা নেয়া হবে।

 

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর