December 22, 2024, 8:29 pm

সংবাদ শিরোনাম
দিনাজপুরে “গমের জাত উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তায় স্পীড ব্রীডিং-এর ভুমিকা” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়, পুলিশ ও জনগণ একে অন্যের পরিপূরক-রেজাউল করিম মল্লিক দলের পরিবর্তন হয়েছে চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি শায়খে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম আপনারা শান্তিতে থাকুন আমরা চাই,আমাদেরকেও আপনারা শান্তিতে থাকতে দিন- ডা. শফিকুর রহমান যশোরে গাছের সাথে বাসের ধাক্কায় নিহত ১ পার্বতীপুরে ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা ২০২৪ অনুষ্ঠিত বাংলাভিশন ডিজিটালের নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে নাবিলের অপপ্রচারের প্রতিবাদ হিলিতে বিজিবি দিবসে বিএসএফকে মিষ্টি উপহার বিজিবির কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে আওয়ামী লীগের নেতা গ্রেপ্তার পটুয়াখালীতে বাড়ির সীমানা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত-৬

ভোলায় হাঁসপালনে বদলেছে বহু মানুষের ভাগ্য

লাভজনক হওয়ায় ভোলায় বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে পাঁচ শতাধিক হাঁসের খামার। এসব খামারের আয়ে বদলেছে খামারীদের ভাগ্য। স্বাবলম্বী হয়েছেন বহু মানুষ। হাঁসপালনে খামারিদের সুদিন ফেরায় এই পেশায় ঝুঁকেছেন আরও অনেকেই। তবে জেলায় সরকারি হেচারি বন্ধ থাকায় অন্য জেলার থেকে হাঁসের বাচ্চা এনে বিপাকে পড়েছেন অনেক খামারি।

জানা যায়, জেলার গ্রামে গ্রামে মাংস ও ডিমের চাহিদা মেটাতে যুগ যুগ ধরে পারিবারিকভাবে হাঁস পালন হয়ে আসছে। বিশেষ করে শীত মৌসুমে স্থানীয়ভাবে মাংসের প্রচুর চাহিদা থাকায় দিন দিন বাণিজ্যিকভাবে হাঁসের খামার গড়ে উঠতে শুরু করে। বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলগুলোতে প্রচুর বিলাঞ্চল ও সমতল জমি থাকায় হাঁস প্রতিপালন অনেকটাই সহজ। চারদিকে নদী-খাল-বিল থাকায় প্রচুর শামুকসহ প্রাকৃতিক খাবার পাওয়া যায় এখানে। যা হাঁেসর প্রধান খাদ্য। চরের মাঠে-ঘাটে দল বেঁধে ছুটে চলে শত শত হাঁস।

এর মাধ্যমে দারিদ্র্যতাকে জয় করে স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে বহু পরিবার। চরগুলোতে সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে শত শত হাঁসের খামার। এসব খামারে উৎপাদিত ডিম গ্রামের হাট-বাজার হয়ে চলে যায় শহুরে দোকানগুলোতে। এছাড়া হাঁসের ডিম দেয়া শেষ হলে মাংসের জন্য বিক্রি হয় বিভিন্ন বাজারে। এসময় হাঁসের মাংসের কেজি ৪’শ থেকে সাড়ে ৪’শ টাকায় বিক্রি হয়।

সরেজমিনে উপজেলা সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল চটকিমারায় গিয়ে দেখা যায়, ধান ক্ষেত থেকে শুরু করে নদী-খাল-নালা-ডোবায় শত শত হাঁস ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরা মূলত প্রাকৃতিক খাবার বেশি খায়। মাঝে মাঝে খামারিরা ধান ছিটিয়ে দিচ্ছে। কথা হয় স্থানীয় খামারি ইউছুফ ফরাজী ও ছাদেক আলীর সাথে। তারা জানান, ৫ বছর আগে ২’শ হাঁস দিয়ে খামার শুরু করেন তারা। এরপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি তাদের। বর্তমানে প্রায় ৮’শ হাঁস রয়েছে তাদের খামারে। দৈনিক সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে ৩ হাজার টাকার বেশি লাভ থাকে ডিম বিক্রি করে।

হাঁস খামারী মো: আলাউদ্দিন মিয়া জানান, ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হাঁস পালন করে আসছেন। বসত ঘরের পাশের জমিতে গড়ে তুলেছেন হাঁসের খামার। প্রথমে ১’শ হাঁস দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে তার প্রায় ৬’শ হাঁস রয়েছে। দৈনিক প্রায় ৪’শ ডিম হয় তার খামারে। ১’শ ডিম ১ হাজার টাকা মূল্য হারে তার ৪হাজার টাকার ডিম বিক্রি হয় দৈনিক। অন্যান্য ব্যয় বাদ দিয়ে তার ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা লাভ হয়।
শুধু চর চটকিমারা নয়, ভেলুমিয়া চর, কাচিয়া ইউনিয়নের মাঝের চর, ভেদুরীয়ার চর গাজী, ধনীয়া, রাজাপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চরে হাঁস পালন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। হাঁসের খামারে কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অংশ গ্রহণ করছে।

মাঝের চরের খামারি জোছনা বেগম জানান, তার স্বামী কৃষি কাজ করেন। তার খামারে ৫’শ হাঁস রয়েছে। তিনি ছেলেকে নিয়ে খামার পরিচালনা করেন। হাঁস পালনে তেমন পরিশ্রম হয়না জানিয়ে বলেন, সকালে এসব হাঁস তার ছেলে বিল ও নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে দলবদ্ধ ভাবে শামুক, ছোটমাছসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক খামার খায় তারা। সন্ধ্যার আগে আবার খামারে নিয়ে আসা হয়। তারপরেও দিনে ২বার করে তাদের খাবার হিসেবে ধান দিতে হয়।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল বাসস’কে জানান, জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ১৫ হাজারের অধিক খামারে ২৪ লক্ষ ৪১ হাজার হাঁস রয়েছে। একটি উন্নত জাতের হাঁস বছরে আড়াই’শ থেকে পৌনে ৩’শ ডিম দেয়। এসব খামারিদের সাথে উঠোন বৈঠক, সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও প্রচার পত্র বিলি ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের দক্ষ করে তোলা হচ্ছে। বহু যুবক হাঁস পালনের মাধ্যমে তাদের বেকারত্ব দূর করছে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর