রোবটের মাধ্যমে পুনরায় হাঁটছেন পক্ষাঘাতগ্রস্থ রোগী
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রিত রোবটের মাধ্যমে পুনরায় হাঁটতে পারছেন পক্ষাঘাতগ্রস্থ এক রোগী। কাঁধ থেকে শরীরের নিচের অংশটা নড়াচড়া করতে পারতেন না ২৮ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি।
ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোগীর মস্তিষ্কের কাছে বসানো সেন্সরের মাধ্যমে পুনরায় তিনি শরীরের চারটি অঙ্গই নাড়াতে পারছেন। দুই বছর ধরে পুরো শরীরে লাগানো এই বহিঃকঙ্কাল রোবটটি নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন গবেষকরা।
বৃহস্পতিবার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে দ্য ল্যানসেট নিউরোলজি জার্নাল। গবেষক দলটির প্রধান বলেন, একদিন হয়তো রোগী তার মস্তিষ্কের সিগনাল দিয়ে নিজেই কম্পিউটার চালাতে পারবেন।
এই প্রকল্প রোগীদেরকে সহায়তার ক্ষেত্রে ডাক্তারদেরকে আরেক ধাপ সামনে এগিয়ে নেবে বলে দাবি করলেও গবেকরা বলছেন, “এখন পর্যন্ত বহিঃকঙ্কালটি শুধুই একটি পরীক্ষামূলক প্রোটোটাইপ মাত্র এবং কিনিকাল অ্যাপ্লিকেশনের থেকে এখনও অনেক দূরে।”
গবেষক দলটির সহকারী প্রধান ফ্রান্সের ইউনিভার্সিটি অফ গ্রনব্ল-এর অধ্যাপক এবং নিউরোসার্জন আলিম-লুয়ি বেনাবিদ বলেন, “এটিই প্রথম সেমি-ইনভেসিভ তারবিহীন মস্তিষ্ক-কম্পিউটার ব্যবস্থা, যা চারটি অঙ্গই সক্রিয় করতে পারে।”
এর আগে মস্তিষ্ক-কম্পিউটার প্রযুক্তিগুলোতে মস্তিষ্কে ইনভেসিভ সেন্সর বসানো হয়েছে, যা ‘বিপজ্জনক’ হতে পারে এবং প্রায়ই কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নতুন রোবটের আগের সংস্করণটিও তার দিয়ে যুক্ত ছিল এবং শুধু একটি অঙ্গ নাড়াতে পারতো।
এবারের পরীক্ষায় রোগীর মাথার দুই পাশে মস্তিষ্ক ও চামড়ার মাঝামাঝি দুইটি রেকর্ডিং ডিভাইস বসানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রতিটি রেকর্ডারে ৬৪টি ইলেক্ট্রোড রয়েছে, যা মস্তিষ্কের সিগনাল সংগ্রহ করে এবং একটি ডিকোডিং অ্যালগরিদমের কাছে পাঠায়।
রোগী যে ধরনের নড়াচড়ার কথা ভাবছেন কম্পিউটার ব্যবস্থাটি তা অনুবাদ করে কমান্ড বহিঃকঙ্কালে পাঠায়।
২৪ মাস ধরে রোগীকে বিভিন্ন ধরনের মানসিক কাজ দেওয়া হয়েছে যাতে অ্যালগরিদমকে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় এবং এটি রোগীর চিন্তাভাবনা বুঝতে পারে।
পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক টম শেকসপিয়ার বলেন, “এটি স্বাগত জানানোর মতো এবং দারুন উন্নতি।” তবে “কিনিকে ব্যবহারের সম্ভাবনা থেকে এখনও অনেক দূরে।”
“এই খাতে সবসময় ঝুঁকি থাকে। যদিও এটি কার্যকর হয়, দামের কারণে এই উচ্চ প্রযুক্তিগুলো বিশ্বের বেশিরভাগ রোগীর নাগালের বাইরে থাকবে,” যোগ করেন শেকসপিয়ার।