অবসরপ্রাপ্ত সচিব, যুগ্ম সচিবসহ উচ্চপদস্থ ১২ কর্মকর্তা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের কাছে কয়েক কোটি টাকা খুইয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এই তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকও আছেন।
সংবাদমাধ্যেমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, প্রতারিত অনেকে তাঁদের অবসর ভাতার সব অর্থ সরল বিশ্বাসে তুলে দিয়েছেন এই প্রতারকদের হাতে। কেউ কেউ জমি বিক্রি করে টাকা দিয়েছেন। টাকা দেওয়ার কিছুদিন পরই সবার কাছে স্পষ্ট হয়, তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এই প্রতারকচক্রের কেউ ভারতীয় নাগরিক সেজে, কেউ ভুয়া প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেজে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন জানিয়েছে, এই প্রতারকচক্র প্রথমে জাতীয় দৈনিকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে লোভনীয় চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আকৃষ্ট করত। যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ার পর অনেককে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হওয়ার লোভনীয় প্রস্তাব দেওয়া হতো। অংশীদার হওয়ার জন্য অনেকেই তাঁদের অবসরকালীন পেনশনের সব টাকা তুলে দিয়েছেন এই চক্রের হাতে। এর কিছুদিন পরই দেখা গেছে, নির্ধারিত অফিসটি নেই। টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারকচক্র হাওয়া হয়ে গেছে; এমনকি তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ। এখন পর্যন্ত ১২ জন প্রতারিত হয়েছেন বলে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এসেছেন। এই তালিকা আরো বড় হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
প্রতারণার এই কৌশল অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। অবসর জীবনে সব মানুষই সক্রিয় থাকতে চান। বাংলাদেশে চাকরির বাজার সীমিত থাকায় এই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে প্রতারকচক্র। দেশে সমিতি করার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়া এনজিও বা বেসরকারি সংগঠন খুলে বেকার তরুণদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অতীতে অনেক ‘হায়-হায় কম্পানি’ উধাও হয়ে গেছে। রাজধানীতেও এমন অনেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান আছে, যাদের নির্দিষ্ট কোনো অফিস নেই। একেক সময় একেক জায়গায় অফিস খুলে বসে তারা মানুষের সর্বস্ব নিয়ে উধাও হয়েছে। একটি প্রতারকচক্রের পাঁচ সদস্যকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পেরেছে। কিন্তু এমন আরো অনেক চক্র এখনো সক্রিয়। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই।