ডাবের পানিতে মেশানো হতো অজ্ঞান হওয়ার ওষুধ!
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
অজ্ঞান পার্টির চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকলিয়া ও কোতোয়ালী থানার যৌথ অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। চারজনের একজন ডাব বিক্রেতা, একজন ক্রেতা ও বাকি দুইজন টার্গেটের আত্মীয় পরিচয় দেয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী সংবাদ সম্মেলনে তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি জানান। গ্রেফতার চারজন হলো- খুলনা জেলার রুপসা থানার বাগমারা এলাকার আবদুল ছমেদ হাওলাদারের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম (৩০), একই এলাকার জয়নাল সর্দারের ছেলে মো. বাবুল (৩৬), ফিরোজপুর জেলার মঠবাড়ি থানার হাসান আলীর ছেলে রতন মিয়া (৮৫) ও বরগুনা জেলার বামনা থানার মধ্য আমতলী এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে মো. হারুন (৩১)। মোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এসএম মেহেদী হাসান বলেন, অজ্ঞান পার্টির চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে মানু্ষরে ছিনিয়ে নেওয়া টাকা, ১০০টি ক্লোনোজেপাম ইপিট্রা ২ ট্যাবলেট, ৩২০টি ক্লোনোজেপাম লোনাজেপ ২ ট্যাবলেট ও ১৫টি সিরিঞ্জ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি জানান, এ চক্রে বৃদ্ধ সদস্য ডাব বিক্রেতা হিসেবে কাজ করেন। একই জায়গায় আরেকজন ডাব ক্রেতা হিসেবে অবস্থান করেন। টার্গেট নির্দিষ্ট করার পর বৃদ্ধ ডাব বিক্রেতা ওই লোককে অনুনয় করেন তার কাছ থেকে একটি ডাব কেনার জন্য। এরই বিশ্বাস জমানোর জন্য এ চক্রের অপর সদস্য একটি ডাব কিনেন বৃদ্ধের কাছ থেকে। সবার সামনে সেটি পান করে ফেলেন। টার্গেট হওয়া ব্যক্তি ফাঁদে পড়ে ডাব কেনার আগ্রহ প্রকাশ করলে তাকে অজ্ঞান হওয়ার ওষুধ মেশানো ডাবটি দেওয়া হয়। ‘ডাব খাওয়ার পর ওই লোক হাঁটা শুরু করলে তার পেছনে এই চক্রের দুই সদস্য হাঁটেন। যদি ওই ব্যক্তি গাড়িতে উঠেন তাহলে তারা দুইজনও গাড়িতে উঠে। টার্গেট হওয়া ব্যক্তি যদি অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে এ চক্রের সদস্যরা তাকে তাদের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলে সবার সামনে থেকে তুলে নিয়ে চলে যান। পরে সুবিধামত জায়গায় সব ছিনিয়ে নিয়ে তাকে ফেলে যান। বলেন এস এম মেহেদী হাসান। বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, সোমবার নতুন ব্রিজ এলাকায় মো. মামুনুর রশিদ নামে এক ফল বিক্রেতাকে অজ্ঞান করে তার কাছ থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকা ছিনিয়ে নেন। পরে মামুনুর রশিদের পরিবার থানায় অভিযোগ করলে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। ওসি নেজাম জানান, এ চক্রের সদস্যরা সম্প্রতি আরও কয়েকটি ছিনতাই করে। ২৪ আগস্ট কোতোয়ালী থানার নিউমার্কেট এলাকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মেহেদী হাসান রকিকে অজ্ঞান করে তার কাছ থেকে মোবাইল, নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
মেহেদী হাসান রকি বলেন, ২৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিউমার্কেট মোড় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠি। এ সময় এক বৃদ্ধ লোক জানালার পাশে এসে তার কাছ থেকে ডাব কেনার অনুরোধ করে। বৃদ্ধ লোকটিকে দেখে খুব অসহায় মনে হওয়ায় অনিচ্ছা সত্ত্বেও একটি ডাব কিনে খাই। পরে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।
সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মুহাম্মদ আবদুর রউফ, চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার মুহাম্মদ রাইস্লু ইসলাম, কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনসহ অভিযান পারিচালনাকারী টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।