স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়া আর পাঠ করা এক নয়: তথ্যমন্ত্রী
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া আর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা এক বিষয় নয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ‘তারুণ্যের ভাবনায় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এক শিক্ষার্থীর করা প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার উপ-কমিটি দলটির ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিতর্কটা শুরু হয় জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর। জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো দাবি করেননি যে, তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপি যেভাবে বলে, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক, আমার মনে হয় কবরের মধ্যে যদি জিয়াউর রহমান শুনতে পেতেন, লজ্জায় উনি কাত হয়ে শুয়ে পড়তেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করা আর ঘোষণা দেয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিয়েছিলেন, সে ঘোষণা বহুজন পাঠ করেছেন। বেতারের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথম পাঠ (২৬ মার্চ) করেন তৎকালীন অবিভক্ত চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান। এরপর চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতারা সিদ্ধান্ত নেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা দিয়ে পাঠ করানোর, তখন জিয়াউর রহমানকে দিয়ে পাঠ (২৭ মার্চ) করানো হয়। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ২৬ মার্চ নিজের জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী নুরুল হক শহরের বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন। নূরুল হকের মতো আরো মানুষ সারাদেশে মাইকিং করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যারা এই বিতর্ক তৈরী করেছে তারা ইতিহাস বিকৃত করতে চায়। তবে মানুষ এখন প্রকৃত ইতিহাস জেনে গেছে। এরপর কেউ কেউ উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বলার চেষ্টা করে। নতুন প্রজন্মকে প্রকৃত ইতিহাস জানানোর জন্য ছাত্রলীগকে পাঠচক্র আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান ড. হাছান মাহমুদ।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে কারিশমাটিক লিডার বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। যেকোনো বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হস্তক্ষেপ করতে হয় এবং ক্ষমতা এককেন্দ্রিক কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে এইচ টি ইমাম এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা একজন কারিশমাটিক লিডার। শেখ হাসিনার ব্যক্তিত্ব পুরোপুরো বঙ্গবন্ধুর মতোই। পিতার সকল গুণই তিনি পেয়েছেন। কিছুক্ষেত্রে তিনি তার পিতাকেও ছাড়িয়েছেন। সবাই ভাবেন- তিনি হয়তো সব ক্ষমতার উৎস। মন্ত্রীরা নিজেরা কাজ করেন, তার অধীনস্ত বিভাগ কাজ করে। এভাবে বিকেন্দ্রীকরণ হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও দিয়ে দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন সড়ক মেরামতের অল্প কিছুদিনের মধ্যে চট্টগ্রাম ওয়াসা তা কেটে ফেলে বলে অভিযোগ করেছেন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়- সিটি করপোরেশন রাস্তা তৈরি বা মেরামত করেছে কিন্তু এর কিছুদিন পর ওয়াসা তা কেটে ফেলে। উন্নয়নকাজে সমন্বয়হীনতা কেন শিক্ষার্থীরা এমন প্রশ্ন রাখেন মেয়রের কাছে। জবাবে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সমন্বয়হীতার কথা স্বীকার করে বলেন, ওয়াসাসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থা উন্নয়নমূলক কাজ করে। সমস্যা হলো- তারা প্রকল্প নেওয়ার সময় বা বাস্তবায়নের সময় সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করেন না। আর উন্নয়ন কাজে তো আমরা বাধা দিতে পারি না। সমন্বয়হীনতা দূর করতে কাজ করছেন বলে জানান সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কক্সবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান।