October 11, 2024, 6:27 am

সংবাদ শিরোনাম
শ্রীমঙ্গলের রিসোর্ট থেকে অতিরিক্ত সচিবের মৃতদেহ উদ্ধার রংপুরে দলীয় পরিচয়ে নিয়োগ পাওয়া টিসিবি ডিলারদের অনেকেই পলাতক থাকায়,পণ্য বিক্রয়ে অচলাবস্থা নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা সংশোধন করিতে হবে – পর্ব ৯ আসন্ন শারদীয়া দুর্গাপূজা শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রশাসন ও জনগণের প্রীতি আহ্বান – পর্ব ৮ প্রশাসন সংস্থা ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থা চলতে পারে না-পর্ব ৭ মাতৃভূমির এক ইঞ্চি জমি ছাড় দেওয়া হবে না, পর্ব ৬ স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪)

ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল-আইবিসি এর উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন

মোহাম্মদ ইকবাল হাসান সরকারঃ

ঘোষিত বাজেটে শ্রমিকদের জন্য আবাসন, রেশনিং এবং শিক্ষাসহ গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে

বরাদ্দ না থাকায় এ বাজেট শ্রমিকদের কাছে তামাশার শামিল।সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করবেন,সালাউদ্দিন স্বপনমহাসচিব ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল-আইবিসি।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগন,
প্রথমেই ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল-আইবিসির পক্ষথেকে আপনাদেরকে শুভেচ্ছা। আপনারা সকলেই অবগত আছেন যে, গত ১৩ জুন বৃহুস্পতিবার বর্তমান সরকারের মাননীয় অর্থ মন্ত্রী ২০১৯ ও ২০ অর্থ বছরের বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন। বাজেটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক এই বাজেটে গার্মেন্টস শ্রমিকসহ গোটা শ্রমিক শ্রেনীর জন্য কোন বরাদ্দ নেই। আজ পোষাক শিল্পের শ্রমিকদের মত কেমিক্যাল, মেটাল, লেদারসহ ৪২ টি সেক্টরের শ্রমিকরাও বঞ্চিত। তাই প্রস্তাবিত বাজেটে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের প্রত্যাশার কোন প্রতিফলন ঘটেনি।
সাংবাদিক বন্ধুগন,
সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে সবসময় বলা হয় পোষাক শিল্প হলো অর্থনীতির লাইফ লাইন, তাহলে আমরা বলবো এই লাইফ লাইনের স্পন্দন হলো আমার শ্রমিক, তাহলে আমাদের প্র¯œ হলো এত বড় বাজেট ঘোষনার পরও সেই শ্রমিকের জন্য কোন বরাদ্দ নেই কেন। সরকার ও মালিকরা জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সেমিনার সিম্পোজিয়ামে শ্রমিকদের কল্যানের লম্বা ফিরিস্তি তুলে ধরে বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু বাজেটের দিকে তাকালে দেখা যায় শ্রমিক কল্যানের আসল চিত্র। ডিসেম্বরে নিম্নতম মজুরী ঘোষনা হলেও এখনো ছোট মাঝারি ধরনের অসংখ্য কারখানা উহা বাস্তবায়ন করেনি, উল্টো উক্ত মজুরীর আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শ্রমিকরা চাকুরি হারিয়ে মালিকদের করা মিথ্যা মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে এখনও রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগন,
১৯৭৩ সালে তৎকালিন আওয়ামী লীগ সরকারের জাতীয় বাজেট ছিল ৭৬০ কোটি টাকা, তারপরও শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা ছিলো, বড় শিল্প কারখানার শ্রমিকদের জন্য আবাসন বা কলোনীর ব্যবস্থা  ছিল, ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চালু ছিল। ৭৬০ কোটি টাকার বাজেট ৬৬৬ গুন আকার বৃদ্দি হয়ে বর্তমানে ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা হয়েছে, তারপরও শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থাসহ শ্রমিকদের মৌলিক সমস্যা সমাধানে কোন প্রকার বরাদ্দ না থাকায়, আমরা শ্রমিক সমাজ আজ চরম ভাবে হতাশ হয়েছি।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগন,
এই বাজেটে মালিকদের জন্য কর ছাড়, রিন সহজীকরণ, খেলাপি রিন মওকুফ, রপ্তানি প্রণোদনা, উদ্যোক্তা তহবিলসহ আরো অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয় হলেও শ্রমিকদের জন্য কিছুই নেই। শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের বিনা চিকিৎসায় সেবা পাওয়ার কোন দিক নির্দেশনা এই বাজেটে না থাকাটা হতাশাজনক, শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দাবী জাতীয় মজুরী কমিশন বাস্তবায়নের জন্য কোন প্রকার বরাদ্দ রাখা হয়নি। আজ খেলাপি ঋন এর পরিমান দাড়িয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন করছে না অথচ যাদের ঋন গ্রহনের পরিমান ১০ হাজার টাকা সেই কৃষকদের নামে সাড়া দেশে আজ প্রায় ৮০ হাজার সার্টিফিকেট মামলা ঝুলছে।
সাংবাদিক বন্ধুগন,
বর্তমান বাজেটে পোষাক রপ্তানিতে এই শিল্পের মালিকদের জন্য ১% নগত সহায়তা ঘোষনা করেছেন, এ জন্য বাজেটে অতিরিক্ত ২ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর পূর্বে মজুরী বৃদ্ধির সময়ও পোষাক শিল্পের মালিকরা ব্যাংক সুদ কমানোসহ অসংখ্য ধরনের সুযোগ সুবিদা সরকারের থেকে গ্রহন করেছেন। আমরা এর বিরোধিতা করছিনা কিন্তু শ্রমিকদের বেলায় এর ছিটে ফোটাও থাকছে কেনো। আমরা মনে করি শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদা পুরনের দাবীর প্রতি যদি বিজিএইএ ও বিকেএমইএর আন্তরিক  সমর্থন খাকে তাহলে সরকার শ্রমিকদেরকে এভাবে উপেক্ষা করতে পারতো না। কিন্তু বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ তো নিজেদের সুযোগ সুবিধা গোছাতেই সবসমই ব্যাস্ত, তাহারা শ্রমিকদের কথা ভাববেন কখন।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগন,
আমরা দীর্ঘ দিন যাবত দাবী করে আসছি যে, শ্রমিকদের সাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে শিল্প এলাকা গুলোতে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে শ্রমিকদেরকে বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া, শিল্পগন এলাকায় শ্রমিকদের জন্য পর্যায়ক্রমে ডরমেটরী তৈয়ার করে আবাসন সমস্যার সমাধান করা, পোষাক শিল্পের নারী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে আশা যাওয়ার জন্য সরকারী ভাবে পরিবহনের ব্যবস্থা করা, আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবী শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা এবং পোষাক শিল্পের শ্রমিকদের ছেলে মেয়েদের পড়ালেখার খরচ যোগাতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখার। কিন্তু বছর যায় বাজেট আসে বাজেটের পরিধিও বাড়ে কিন্তু শ্রমিকদের জন্য কিছুই আসে না।
ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল-আইবিসি আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের বিবেচনার জন্য নিম্নাক্ত  ৫ দফা দাবী উপস্থাপন করছি।

১। শিল্পগন এলাকায় শ্রমিকদের বিনামুল্যে চিকিৎসার জন্য, ৫ টি হাসপাতাল নির্মান করতে হবে। (১) সাভার+আশুলিয়ায়-১ টি, (২) বৃহত্বর গাজীপুর-২ টি, (৩) নারায়ন গঞ্জে-১ টি এবং (৪) চট্টগ্রামে-১ টি।
২। পোষাক শিল্পের সকল শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হবে।
৩। পোষাক শিল্পসহ সকল শ্রমিকদের জন্য ডরমেটরী তৈয়ার করে আবাসন সমস্যা সমাধানে বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হবে।
৪। পোষাক শিল্পসহ সকল শ্রমিকদের ছেলে মেয়েদের বিনা মুল্যে পড়ালেখার জন্য বাজেটে বিষেশ বরাদ্দ রাখতে হবে।
৫। পোষাক শিল্পের নারী শ্রমিকদের যাতায়াতের জন্য বিনামুল্যে পরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হবে।
আমরা আশা করছি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, শ্রমিকদের এই মৌলিক দাবীর বিষয় সমুহ বিবেচনায় নিয়ে বাজেট এ খাত ওয়ারি শ্রমিকদের জন্য প্রযাপ্ত বরাদ্দ রাখবেন।
সংশোধিত কর্মসুচী ঘোষনাঃ
উপরে উল্লেখিত দাবীর বিষয়ে যদি আগামী ২৪ জুন এর মধ্যে সরকার কোন কার্যকর পদক্ষেব গ্রহন না করেন তবে ২৬ জুন বুধবার সকাল ১১ ঘটিকার সময় ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল-আইবিসি, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত শেষে জাতীয় সংসদ অভিমুখে পদ যাত্রা শুরু করবে। এবং সেখানে আইবিসি নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্ন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ যৌথ ভাবে মাননীয় স্পিকারের নিকট ৫ দফা প্রস্তাবনা পেষ করবেন।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেনঃ আইবিসির: চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল হক আমিন, কেন্দ্রীয় নেতা মোঃ তৌহিদুর রহমান, কুতুব উদ্দিন আহমেদ, বাবুল আক্তার, জেড এম কামরুল আনাম, নুরুল ইসলাম, সহিদুল্যা বাদল, রাশেদুল আলম রাজু, চায়না রহমান, কামরুল হাসান, সাফিয়া পারভিন, খাদিজা আক্তার প্রমুখ।

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১৮ জুন ২০১৯/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর