মুরাদনগরে বখাটেদের হাতে অপহৃতার চাচা নিহত : ২ বখাটে কারাগারে
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের নোয়াখলা গ্রামে বখাটেদের হাতে অপহৃতা শাহনাজ আক্তারের চাচা ইয়াসিন মুন্সীকে (৪৮) হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উক্ত ঘটনায় জনতার হাতে আটক অপহরণকারী দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে বখাটে কাউছার আলম (৪০) ও হাসান খানের ছেলে বখাটে মনির খানকে (৩৩) পুলিশ গতকাল শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। নিহত ইয়াসিন মুন্সী একই গ্রামের মৃত লতিফ মুন্সীর ছেলে। তাকে কুমেক হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে শনিবার বিকেলে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দেবিদ্বার উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আনিছুর রহমানের মেয়ে শাহনাজ আক্তারকে (১৪) একই গ্রামের কাউছার আলমের নেতৃত্বে একটি বখাটে চক্র গত ১৮ আগস্ট অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৩০ আগস্ট কুমিল্লার আদালতে মামলা করলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট দেবিদ্বার থানা পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেয়। দেবিদ্বার থানা পুলিশ মামলাটি ৪ সেপ্টেম্বর এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করে ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে শাহনাজ আক্তারকে উদ্ধার করে। এরই মধ্যে মামলা তুলে নিতে আসামিদের হুমকি-ধমকিতে অতিষ্ঠ হয়ে শাহনাজ আক্তারের বাবা আনিছুর রহমান ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে পার্শ্ববর্তী মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের নোয়াখলা গ্রামে তার ভগ্নিপতি সফিকুল ইসলামের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এ দিকে মেয়েকে নিয়ে মামলার বাদী নোয়াখলা গ্রামে আছে জানতে পেরে অপহরণ মামলার আসামি বখাটে কাউছার আলম ও বখাটে মনির খান ওই গ্রামে এসে মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধমকি দিয়ে আনিছুর রহমানকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। তখন আনিছুর রহমান বিষয়টি শ্রীপুর গ্রামে জানালে নিহত ইয়াসিন মুন্সী, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, শাহজাহান মিয়া ও আব্দুল কাদেরসহ কতিপয় লোক নোয়াখলা গ্রামে আসে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাক-বিত-ার সৃষ্টি হলে এলাকাবাসী বিষয়টিকে শ্রীপুর গ্রামে গিয়ে সমঝোতা করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুপুর আড়াইটায় উভয় পক্ষ মিলে শ্রীপুর গ্রামে যাওয়ার পথে নোয়াখলা গ্রামের আব্দুস সালামের বাড়ির পুকুর পাড়ে গিয়ে অপহরণকারী বখাটে কাউছার আলম ও বখাটে মনির খানসহ তাদের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ইয়াছিন মুন্সীর ওপর এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার ইয়াছিন মুন্সীকে মৃত ঘোষণা করে। খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে সুরতহালপূর্বক নিহত ইয়াছিন মুন্সীর লাশ ময়না তদন্তের জন্য দেবিদ্বার থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনা শেষে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঐ এলাকার লোকজন অপহরণকারী বখাটে কাউছার আলম ও বখাটে মনির খানকে দৌড়ে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। দেবিদ্বার থানা পুলিশ আসামিদের জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে মুরাদনগর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় নিহত ইয়াছিন মুন্সীর স্ত্রী জান্নাত আক্তার বাদী হয়ে অপহরণকারী বখাটে কাউছার আলম ও বখাটে মনির খানের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতেই মুরাদনগর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করে। মুরাদনগর থানার পুলিশ পুরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, পূর্বের একটি অপহরণ মামলা থেকে ঘটনার সূত্রপাত। ধৃত আসামিরা ঐ অপহরণ মামলারও পলাতক আসামি। স্থানীয় জনগণ সহায়তা করায় আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।