সোহানের কাছে দলই সব কিছুর আগে
ডিটেকটিভ স্পোর্টস ডেস্ক
কিপিংয়ে তাকে অনেকে মনে করেন দেশের এক নম্বর। আবার অনেকের মতে, সেরাদের একজন। তার ব্যাটিং নিয়ে আছে ভালো-মন্দ অনেক মত। তবে একটি জায়গায় দল সংশ্লিষ্ট প্রায় সবাই একমত, নুরুল হাসান সোহান দল অন্তঃপ্রাণ। দলের জন্য উজার করে দেন নিজেকে। টেস্ট দলে ফেরার পর এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানের কণ্ঠেও সেই চেনা প্রত্যয়, দলের জন্য প্রস্তুত তিনি সম্ভব সব কিছু করতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর দিয়ে সাদা পোশাকের বাংলাদেশ দলে ফিরেছেন সোহান। বাংলাদেশ দলে তার সবশেষ ম্যাচ টেস্টই, গত বছরের জানুয়ারিতে। তবে তার পর থেকে রঙিন পোশাকেই তাকে বিবেচনা করা হয়েছে বেশি। খেলার সুযোগ যদিও পাননি। এবার টেস্ট দলে ফিরলেও খেলার সুযোগ পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে যথেষ্টই। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে দলে আছেন লিটন দাসও। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান সোহানের তাই একাদশে ঢোকার লড়াই অনেক কঠিন। দল তাকে কোন ভূমিকায় চাইবে, দেখার আছে সেটিও। সোহানের অবশ্য ভাবনার জগত পরিষ্কার। সেখানে সংশয় বা দ্বিধার জায়গা নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন, দলের জন্য যে কোনো ভূমিকায় ঝাঁপিয় পড়তে তিনি প্রস্তুত।
আমি সবসময় বলেছি, আমার কাছে দলই সবার আগে। দল যখন, যেখানে যেভাবে চাইবে, সেভাবেই খেলব। দলের যেটায় ভালো হবে, সবসময় চেষ্টা থাকে সেটা করার। বাংলাদেশের হয়ে যে কোনা ফরম্যাটে খেলতে পারাই বড় ব্যাপার। সবসময়ই লক্ষ্য থাকে যেখানেই খেলি, পারফর্ম যেন করতে পারি। টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছি এবার। যদি একাদশে সুযোগ পাই, লক্ষ্য থাকবে ভালো খেলার।
সবশেষ যে আন্তর্জাতিক ম্যাচটি খেলেছেন, সেটির পর সোহানের বাদ পড়াও ছিল খানিকটা বিস্ময়কর। নিউ জিল্যান্ড সফরে সেটি ছিল দ্বিতীয় টেস্ট। মুশফিকর রহিম আগের টেস্টে চোট পাওয়ায় ক্রাইস্টচার্চে অভিষেক হলো সোহানের। কঠিন কন্ডিশন ও দারণ বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে খেলেছিলেন ৪৭ রানের লড়িয়ে ইনিংস। কিন্তু এর পরও আর জায়গা হয়নি দলে। টেস্টের আগে সেবার নিউ জিল্যান্ডে দুটি ওয়ানডে খেলে করেছিলেন ২৪ ও ৪৪। এরপরও সুযোগ পাননি আর ওয়ানডেতেও। শুরুটা ভালো হওয়ার পরও আর সুযোগ না পেলে হতাশ হয়ে পড়াটা অস্বাভাবিক নয়। নেতিবাচকতা সোহানকেও কাবু করতে চেয়েছে। তবে তিনি সেসবকে দূরে ঠেলে চেষ্টা করে গেছেন নিজের মতো। অনেক সময় এসব মাথায় আসে। আমি তখন চেষ্টা করি সেসবকে পাত্তা না দিতে। যেটা আমার হাতে নেই, সেটা নিয়ে তো কিছু করার নেই। চেষ্টা থাকে যখনই সুযোগ পাই, কিছু যেন করতে পারি। মাঠে হোক বা ড্রেসিং রুমে, অনুশীলনে বা ম্যাচে, দলকে চাঙা ও প্রাণবন্ত রাখেন তিনি। দলের সবার প্রিয় চরিত্র। তবে শুধু সেসব দিয়ে তো দলে টেকা যায় না। তার কিপিং সামর্থ্য নিয়েও সংশয় নেই। দলে থিতু হতে হলে প্রয়োজন ব্যাট হাতেও দারুণ কিছু করা। সোহানও সেটা জানেন। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ৫৪.৬০ গড়ে ও ১০৬.০১ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৫৪৬ রান। জানালেন, ব্যাটিংয়ে উন্নতি করতে ঘাম ঝরিয়ে যাচ্ছেন। ব্যাটিং নিয়ে অনেক কাজ করছি। কষ্ট করছি। চেষ্টা করছি নিজের দুর্বল জায়গাগুলো নিয়ে আরও কাজ করে যেন ভালো কিছু করতে পারি।