রফিকুল ইসলাম, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে আগামী ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। এ সময়ে পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। আজ বৃহস্পতিবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতিবছরের মতো এবারও ইলিশের প্রজনন নির্বিঘœ করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ শিকারে যায় জেলেরা। কয়েক দফা উপকূলে লঘুচাপ নি¤œচাপ ও ঝরো হাওয়া হওয়ায় সাগর উত্তাল ছিলো । আর এ কারণে উত্তাল সমুদ্রে মাছ শিকারে থাকতে পারেনি জেলেরা। তার ওপরে প্রাকৃতিক কারণে ইলিশ মৌসুমে সাগরে মাছ কম থাকা। এতে করে জেলেরা দুর্দিন পাড় করলেও এখন সুদিন বইছে জেলে পল্লীতে। গত কয়েক দিন ধরে সাগরে ধরা পড়ছে বড় সাইজের ইলিশ। দামও পাচ্ছেন চড়া। এর ফলে দুশ্চিন্তা শেষে স্বস্তি ফিরেছে জেলে পরিবারে। কিন্তু এ দিনটিও বেশি সময়ের জন্য নয়। ইলিশের প্রজনন মৌসুম শুরু হবে সাত অক্টোবর। এরমধ্যে ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন উপকূলের জেলেরা।
আগামী কাল ৭ তারিখ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। এ সময়ে ইলিশ আহরণ, পরিবহণ,মজুদ,বাজারজাতকরণ,ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং দন্ডনীয় অপরাধ বলে ঘোষণা দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কমপক্ষে ১ থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
জেলেরা আলমগীর খান বলেম, মৌসুমের শুরুতে সাগরে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়েনি। তার ওপরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যার ফলে জেলেরা মাছ ধরায় সাগরে থাকতে পারেনি। এ জন্যই জেলেরা ঋণে জর্জড়িত হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে আশানুরূপ মাছের দেখা পেলেও ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। এতে জেলেরা ঋণের টাকা নিয়ে বিপাকে পড়বে। সে সঙ্গে পার করতে হবে অলস সময়। নিষেধাজ্ঞার অগে চাল দেয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি, আর যে পরিমান খাদ্যসহায়তা দেয়া হয় তাও অপ্রতুল বলে জানান তারা।
উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, মা ইলিশ রক্ষায় উপজেলার মৎস্যঘাটগুলোতে মাইকিং, বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যানার সাঁটানে, সকল আড়ৎ মালিকদের ইলিশ আহরণ, পরিবহণ,মজুদ,বাজারজাতকরণ,ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ চিঠি, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সচেতনতা মূলক সভা ও পথ সভা করা হয়েছে। এবং নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে ৪৪ টি অভিযান/ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। এছাড়াও মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয়ের তিন মাসের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সাগর এবং উপজেলার ৬ নদীতে ১০ মে.টন ইলিশ আহরণ করা হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল হক বাবুল বলেন, ‘ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় সকল ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে অভিযানে সহায়তা করবে পুলিশ,কোস্টগার্ড এবং নৌ-বাহিনী।