October 7, 2024, 2:18 pm

সংবাদ শিরোনাম
মাতৃভূমির এক ইঞ্চি জমি ছাড় দেওয়া হবে না, পর্ব ৬ স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪) ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে গড়তে হলে সংস্কার প্রয়োজন=== বৈষম্য বিরোধী অভিভাব ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে অদ্ভুতুরে কাণ্ডকীর্তি ভোলা বোরহানউদ্দিনে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকগণের ১০ম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন শারদীয় দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষে বগুড়ায় বিএনপির মতবিনিময় সভা! লক্ষ্মীপুরে কুমিরের আতঙ্কে এলাকাবাসী

ভবনে আগুন লাগলে করনীয়

ভবনে আগুন লাগলে করনীয়

ডিটেকটিভ লাইফস্টাইল ডেস্ক

বিপদে মাথা ঠাণ্ডা রাখা যেমন দরকার তেমনি জানা থাকা চাই বিপদ থেকে বেরিয়ে আসার পন্থা।

তবে তারও আগে চাই প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা।

বাসাবাড়ি ও বহুতল ভবনে আগুন লাগার প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং আগুন লেগে গেলেও করণীয় কী সেসব বিষয় এখানে জানানো হল ‘বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডেফেন্স’ এবং ‘আন্তর্জাতিক জরুরি ব্যবস্থাপনা অ্যাক্রেডিশন প্রোগ্রাম’য়ের ওয়েবসাইট অবলম্বনে।

অগ্নি নির্বাপণে করণীয়

– দেরি না করে নিকটস্থ ফায়ার স্টেশনে সংবাদ দিন/অথবা কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষে (০২-৯৫৫৫৫৫৫/০১৭৩০৩৩৬৬৯৯) জানান।

– শুরুতেই আগুন নিভানোর চেষ্টা করুন

– বহনযোগ্য অগ্নিনির্বাপনী যন্ত্র ব্যবহার করুন

– বৈদ্যুতিক লাইনে/যন্ত্রপাতিতে আগুন ধরলে পানি ব্যবহার করবেন না। বহনযোগ্য কার্বন ডাই-অক্সাইড/ড্রাইকেমিক্যাল পাউডার এক্সটিংগুইসার ব্যবহার করুন। না পেলে শুকনো বালি ব্যবহার করুন।

– তেল-জাতীয় পদার্থের আগুনে পানি ব্যবহার বিপজ্জনক। বহনযোগ্য ফোমটাইপ ফায়ার এক্সটিংগুইসার/শুকনো বালি/ ভেজা মোটা কাপড় বা চটের বস্তা দিয়ে চাপা দিন।

গায়ে বা পরনের কাপড়ে আগুন ধরলে মাটিতে গড়াগড়ি করুন।

অগ্নি-প্রতিরোধ

– রান্নার পর চুলা সম্পূর্ণভাবে নিভিয়ে ফেলুন।

– ভেজা জামা কাপড় চুলার উপর শুকাতে দেবেন না।

– গ্যাসের চুলা জ্বালানোর কমপক্ষে ১৫ মিনিট আগে রান্নাঘরের সকল জানালা/দরজা খুলে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন।

– গ্যাসের চাবি ঘোরানোর আগে ম্যাচের কাঠি ধরাবেন।

– গ্যাসের চুলার হোজপাইপটি ফাটা/ক্ষতিগ্রস্ত হলে পরিবর্তন করুন।

– বাসাবাড়ির বৈদ্যুতিক লাইন প্রতি ৬ মাস অন্তর অন্তর নিয়মিত পরীক্ষা করুন।

– সঠিক মানের বৈদ্যুতিক তার/সরঞ্জাম ব্যবহার করুন।

– অব্যবহৃত বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম মূল লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন রাখুন।

– ক্ষতিগ্রস্ত/নিম্নমানের বৈদ্যুতিক তার/সরঞ্জাম প্রতিস্থাপন করুন।

– বাসাবাড়ি/প্রতিষ্ঠান অগ্নি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।

– অগ্নি ঝুঁকি অনুসারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র মজুদ রাখুন।

– অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের প্রয়োগ ও ব্যবহার বিধি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিন।

উঁচু ভবনে আগুন লাগলে করণীয়

‘ফায়ার অ্যালার্ম’কে কখনই অবহেলা করবেন না।

* এই সতর্ক ঘণ্টা শোনার সঙ্গে সঙ্গে প্রথম কাজ হবে আশপাশের সবাইকে সতর্ক করা এবং ঘরের চাবি, মোবাইল, মানিব্যাগ ইত্যাদি একান্ত প্রয়োজনীয় অনুসঙ্গের যা কিছু হাতের কাছে আছে তা নিয়ে ভবনের বাইরে হওয়ার উপায় খোঁজা। দ্রুত কাজ করতে হবে তবে ঠাণ্ডা মাথায়।

* বাতাসের তুলনায় ধোঁয়ার ঘনত্ব কম। তাই ধোঁয়া ওপরে উঠে যায়। এ কারণে ধোঁয়া থেকে বাঁচতে বের হওয়ার রাস্তায় ধোঁয়া কিংবা আগুন যাই থাকুক সবসময় নিচু হয়ে চলতে হবে। যদি বিছানায় শুয়ে থাকেন তবে গড়িয়ে নিচে নেমে দরজার দিকে যেতে হবে। আশপাশের কেউ যদি ঘুমিয়ে থাকেন তবে তাকে সম্ভব হলে ডেকে তুলতে হবে। মূল্যবান জিনিষপত্র নেওয়ার জন্য সময় ব্যয় করা যাবে না।

* যেকোনো দরজা খোলার আগে হাতের উল্টো পাশ দিয়ে দরজার হাতল ও ছিটকানি পরীক্ষা করুন গরম কি না। যদি গরম হয় তবে অপরপাশে আগুন থাকতে পারে।

তাই ওই দরজা খোলা যাবে না। বরং হাতের কাছে কাপড়, তোয়ালে বা খবরের কাগজ থাকলে তা দিয়ে দরজাটির চারপাশের ফাঁকা জায়গাগুলো বন্ধ করে দিতে হবে যাতে ধোঁয়া ঠুকতে না পারে।

* দরজা ঠাণ্ডা অনুভূত হলেও ধীরে খুলতে হবে, দরজার একপাশে নিচু হয়ে দাঁড়াতে হবে যাতে আগুন বা ধোঁয়ার হলকা গায়ে না লাগে। ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য জানালা খোলার আগে ঘরের অন্যান্য দরজা জানালা বন্ধ আছে কি না নিশ্চিত হতে হবে। অন্যথায় অন্যান্য খোলা জানালা দিয়ে আগুন বা ধোঁয়া প্রবেশ করতে পারে। যে ঘর থেকেই বের হবেন তার দরজা বন্ধ করে দিতে হবে যাতে আগুন ছড়ানোর আশঙ্কা কমে।

* ভবন থেকে বের হওয়ার জন্য অবশ্যই সিঁড়ি ব্যবহার করতে হবে। লিফ্ট সাধারণত ‘ফায়ার ডিটেকশন সিস্টেম’য়ের সঙ্গে জড়িত থাকে, ফলে ‘ফায়ার অ্যালার্ম’ বাজলেই লিফ্ট বন্ধ হয়ে যায়। কোনো কারণে আগুন লাগার পরও যদি ‘ফায়ার অ্যালার্ম’ বেজে না ওঠে তবে নিজেই ‘অ্যালার্ম’ চালু করে দিন। ভবন থেকে বের হতে পারলে দ্রুত ভবন, গাছ, বৈদ্যুতিক পিলার, রাস্তা থেকে দূরে খোলা স্থানে চলে যান।

কক্ষে আটকা পড়লে করনীয়

যদি ঘরের ভেতর আটকা পড়েন তবে আগুন ও আপনার মাঝখানে যতগুলো সম্ভব দরজা বন্ধ করে দিতে হবে। পাশাপাশি ফাঁক দিয়ে যাতে ধোঁয়া প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

একান্ত প্রয়োজন না পড়লে ঘরের ভেতরের দিকের জানালার কাচ ভাঙা যাবে না।

বাইরের দিকের জানালা দিয়ে উদ্ধারকর্মীদের দিকে ইশারা করুন। শ্বাস নেওয়ার জন্য অক্সিজেন পেতে যে রাস্তার দিকের জানালার কপাট সামান্য খুলে রাখুন এবং সেখানে উজ্জ্বল রংয়ের কিছু ঝুলিয়ে রাখুন যাতে উদ্ধারকর্মীরা আপনার অবস্থান বুঝতে পারে। রাত হলে হাতের কাছে টর্চলাইট থাকলে সংকেত দিতে সেটা ব্যবহার করতে পারেন।

উচ্চ ভবনে আগুনে আটকা পড়লে

– ভেজা কাপড় দিয়ে দরজার ফাঁক বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে যাতে ধোঁয়া ছড়িয়ে না যায়।

– হাতের কাছে ফোন থাকলে অবশ্যই উপরের দেওয়া জরুরি নম্বরে ফোন করুন।

– একান্তই যদি জানালা দিয়ে বের হতে হয় তবে লাফ দেওয়ার আগে দেখে নিতে হবে নিচে কী আছে এবং লাফ দিয়ে বাঁচতে পারবেন কিনা।

– লাফ দেওয়ার আগে জানালা ধরে ঝুলে পড়ে তারপর হাত ছেড়ে দিন, এতে মাটি আর আপনার দুরত্ব কিছুটা হলেও কমবে।

– জানালার কাচ হাত দিয়ে ভাঙার চেষ্টা না করে চেয়ায়, ড্রয়ার বা অন্য কোনো শক্ত কিছু ব্যবহার করতে হবে। ভাঙা কাচ এড়াতে ভাঙা জানালার চারপাশে মোটা কাপড় বা কাগজ বিছিয়ে দিতে হবে।

ধোঁয়ায় আটকা পড়লে

হামাগুড়ি দিয়ে দেয়াল ঘেঁষে এগোতে হবে। মেঝে থেকে মাথা অন্তত ৩০ থেকে ৩৬ ইঞ্চি উপরে রাখতে হবে। একেবারে শুয়ে এগোনো উচিত নয়। কারণ একদম নিচে বিষাক্ত গ্যাসের আস্তর থাকতে পারে, কিংবা ভাঙা কাচ বা অন্যান্য ধারালো কিছুতে গুরুতর আহত হতে পারেন। যতটা সম্ভব কম দম নেওয়ার চেষ্টা করুন এবং নাকে কাপড় চেপে রাখুন।

আগুনের ভেতর দিয়ে এগোতে হলে

দ্রুত দৌড়ে এগোতে হবে। চুল ও মাথা ঢেকে রাখতে হবে। মাথা নিচু রাখতে হবে এবং চোখটা যতটা সম্ভব বন্ধ রাখত হবে।

গায়ের পোশাকে আগুন লেগে গেলে হাত দিয়ে চোখ মুখ ঢেকে তৎক্ষণাত মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি দিতে হবে। বের হওয়ার পথে সামান্য আগুন দেখে তা নেভাতে যাওয়াটা সবসময় বুদ্ধিমানের কাজ নাও হতে পারে। কারণ এজন্য আপনার আগুন নেভানোর উপযুক্ত কৌশল জানা প্রয়োজন। আগুন নির্বাপক যন্ত্র সামনে থাকলেও তা ব্যবহার পদ্ধতি জানতে হবে।

আগুন থাকুক বা না থাকুক কোনো অবস্থাতেই ধোঁয়ায় ভরা কোনো ঘরে প্রবেশ করা যাবে না। আগুন নেভানোর কাজ পেশাদারদের হাতে ছেড়ে দেওয়াই উচিত।

তারপরও যদি নেভানোর চেষ্টা করেন নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। যে কোনো ঘরে ঢোকার আগে বের হওয়ার পথ মনে রাখতে হবে এবং যে কোনো মুহূর্তে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি থাকতে হবে।

অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার পদ্ধতি

প্রথমেই হাতল থেকে সুরক্ষা পিন খুলতে হবে। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের নলটি আগুনের গোড়ায় তাক করতে হবে এবং ট্রিগার চাপতে হবে। ডানে বামে ফোম ছড়িয়ে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে আগুন পুনরায় জ¦লে উঠছে কিনা। তবে এই যন্ত্র ব্যবহার করতে না জানলে বা ব্যবহারে সাচ্ছন্দ্য বোধ না করলে নিজের জীবন নিয়ে নিরাপদ দুরত্বে থাকা উচিত।

বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা

ভবনের দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা সম্পর্কে জেনে রাখুন। কোথায় ‘ফায়ার অ্যালার্ম’ ও অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র আছে সেগুলো জেনে রাখুন। জরুরি বর্হিগমন পথ চিনে রাখুন এবং সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানুন। জরুরি বর্হিগমন পথে পৌঁছাতে না পারলে বাইরে বা রাস্তার দিকে জানালা আগে এমন ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করুন।

সম্ভব হলে জানালা উপরের এবং নিচের অংশ খুলে রাখুন। হবে সতর্ক থাকতে হবে যেন খোলা জানালা দিয়ে ধোঁয়া না ঢুকে। এরকম পরিস্থিতি হলে দ্রুত জানালা বন্ধ করার জন্য তৈরি থাকতে হবে।

যে পরিস্থিতেই থাকুন না কেনো হাতের কাছে সক্রিয় মোবাইল ফোন থাকলে দমকল বাহিনীকে খবর দিন, নিজে না পারলে পরিচিত কাউকে ফোন করে তাকে আপনার অবস্থান জানিয়ে দমকল বাহিনীকে খবর দিতে বলুন।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর