গাইবান্ধার সাঘাটায় চিকিৎসার নামে প্রতারণার ফাঁদ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
গাইবান্ধার সাঘাটায় চিকিৎসার নামে প্রতারণা বাড়ছে। চিকিৎসা প্রশাসনের কোন তদারকি না থাকায় উপজেলার ৮টি বাজারে মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট (স্যাকমো) সহ অন্তত ৪৫ জন ব্যক্তি সাইনবোর্ড ঝুঁলিয়ে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে সকল প্রকার রোগের ব্যবস্থাপত্র ও সার্জিক্যাল চিকিৎসা প্রদান করছে। এদের খপ্পড়ে পড়ে গত ৩ মাসে উপজেলার বুরুঙ্গি গ্রামের শিশু তন্নী, শ্যামপুর গ্রামের শিশু সুমন, বাটি গ্রামের কাশেম, একই গ্রামের উত্তরপাড়ার হাবিজার রহমান পঙ্গুপ্রায়। আর অপচিকিৎসায় রোগ জটিল হয়ে ভুগছে পল্লীর আরো অন্তত ১৫০ জন। সামান্ন সমস্যা হায়ার এ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে রোগ নিরাময়ের চেষ্টা চালিয়ে জটিল ও কঠিন করে তুলছে এসব চিকিৎসক নামধারীরা। চিকিৎসার নামে প্রতারণা ফাঁদ তৈরি করে শুধু বোনারপাড়া বাজারেই কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন কয়েকজন। উপজেলার অধিকাংশ লোকজনই নি¤œ আয়ের হওয়ায় প্রতিদিন সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগির সংখ্যা অনেক বেশি হয়। নানা অযুহাতে মেডিকেল অফিসাররা অন্যকাজে ব্যস্থ থাকায় ব্যাহত হয় চিকিৎসা সেবা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে এলাকার একশ্রেণির সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তি নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে গ্রামগঞ্জের হাট-বাজার ছাড়াও উপজেলার বোনারপাড়ায় চিকিৎসার নামে ডাক্তার চেম্বার খুলে বসেছেন। সাঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যাকমোর দায়িত্বে থাকা ২জনসহ ৫ জন মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ও একজন নিজেকে আর্মির ডাক্তার পরিচয় দিয়ে বোনারপাড়া বাজারে ভয়াবহ প্রতারণার ফাঁদ খুলেছে। একই অবস্থা সাঘাটা, জুমারবাড়ী, বারকোনা, ভরতখালীসহ ৮টি বাজারের। সম্পুর্ন অবৈধভাবে সাইনবোর্ডে নিজের নামের পুর্বে ডাক্তার লিখে সকল ধরনের রোগের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছে তারা। গত ৩ মাসে এদের খপ্পড়ে পড়ে ভুল চিকিৎসায় উপজেলার বাটি গ্রামের কাশেম, একই গ্রামের উত্তরপাড়ার হাবিজার, বুরুঙ্গি গ্রামের শিশু তন্নী ও শ্যামপুর গ্রামের শিশু সুমন পঙ্গুপ্রায় হয়েছে। অপচিকিৎসায় রোগ জটিল হয়ে ভুগেছে আরো অন্তত ১৫০ জন। এদের মধ্যে তন্নীর ডান পা এখনো ভালো হয়নি। ৩ মাস ধরে যন্ত্রণায় ভুগছে মেয়েটি। ভুল চিকিৎসার কারণে প্রায় ২ লাখ টাকা চিকিৎসায় খরচ হয়েছে বলে জানালেন, তন্নীর বাবা তুষার মিয়া। এসব ভূয়া চিকিৎসকের অপচিকিৎসায় অনেকেরই অঙ্গহানিসহ মৃত্যু হয়েছে। এদের ফাঁদে পড়া শিশু ও প্রসূতির সংখ্যাই বেশি। প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ না থাকায় দৌরাতœ বেড়েছে তাদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মেডিকেল কর্মকর্তা জানান, প্যারাসিটামল জাতীয় সাধারণ ওষুধ রোগীকে দেওয়ার নিয়ম আছে তাদের। অথচ এমন চিকিৎসক নামধারীরা এলাকায় নিজেদের নাম প্রচারের জন্য সব রোগেরই চিকিৎসা করছে। সঠিক রোগ না জেনেই অবৈধভাবে ব্যবস্থাপত্রে একাধিক হায়ার এ্যন্টিবায়োটিক ওষুধ দিচ্ছে। ফলে কোনো ওষুধেই কাজ হচ্ছেনা। এতে রোগীর ক্ষতিই হচ্ছে বেশি। এ ব্যাপারে কথা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মাসুদ পারভেজ বলেন, এদের ব্যাপারে নানা ধরনের কথাই শোনা যাচ্ছে। তবে এসব খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।