ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে বিভিন্ন দেশে ইরান আর সৌদি আরব কার্যত এক ছায়াযুদ্ধে লিপ্ত। মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতা আর প্রভাব বিস্তার নিয়ে সৌদি আরব আর ইরানের দ্বন্দ্ব চলছে গত প্রায় চল্লিশ বছর ধরে। ১৯৭৯ সালে ইরানে সংঘটিত ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই দেশটিকে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় পরিসরে শক্ত প্রতিপক্ষ বিবেচনা করে আসছে সৌদি আরব। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কুরেশি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য ও ইয়েমেনের পর লেবাননেও অস্থিরতা ছড়াতে চায় সৌদি আরব। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে চায় সৌদি আরব। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে বেশকয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে দুই পরাশক্তি ইরান ও সৌদি আরব। সিরিয়া ও ইয়েমেন তাদের মাধ্যমেই চলছে দুই দেশের ছায়াযুদ্ধ। সম্প্রতি ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহসহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে সৌদি আরব। ইতোমধ্যে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে তাদের সামরিক অভিযান অব্যহত রয়েছে। তাদের দাবি, ইরানের কারণেই মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা ছড়াচ্ছে। সম্প্রতি সৌদি সফরে গিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। অনেকের ধারণা, সৌদি চাপেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সুন্নি মুসলিমপন্থী সৌদি আরবের আশঙ্কা, শিয়াপন্থী ইরান তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। গত বুধবার লেবাননের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করায় সৌদি আরবের সমালোচনা করেছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের সঙ্গে ফোনে কথাও হয়েছে তার। মিশেল আউন জানিয়েছেন, হারিরির সঙ্গে সামনাসামনি কথা না হওয়া পর্যন্ত তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে না। রুহানি বলেছেন, ‘আপনারা যদি ভেবে থাকেন ইরান আপনাদের বন্ধু না, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রই আপনাদের বন্ধু। তবে আপনারা ভুল করছেন।’ গত শনিবার ইয়েমেন থেকে সৌদি রাজধানী রিয়াদের কিং খালিদ বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা। সৌদি আরব আকাশেই মিসাইল প্রতিহত করলেও ইরানকে দায়ী করে তারা। সৌদি কর্তৃপক্ষের দাবি, ইরানের সরবরাহকৃত মিসাইল দিয়েই হামলা চালিয়েছে বিদ্রোহীরা। একইরকম কথা বলেছেন মার্কিন বিমানবাহিনীর এক জেনারেল। তিনি বলেন, হুথি বিদ্রোহীদের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রে ‘ইরানি চিহ্ন’ ছিলো। তবে কোনও ছবি বা বিস্তারিত জানাননি তিনি।