হাসানুজ্জামান কলকাতা:
অনলাইন থেকে অফলাইন ৪ হাজার শিক্ষিত যুবতী তথা মহিলাদের স্বনির্ভর হওয়ার সংকল্প। সারা বছর হাতের কাজ করে পরিবেশ বান্ধব বস্ত্র, জুয়েলারি ও ব্যাগ তৈরি করে যেন এক টুকরো সোনাঝুরি থেকে স্বনির্ভর হওয়ার ডাক। শিক্ষিত যুবতী তথা মহিলারা সরকারি চাকরির আশায় না থেকে নিজেদের হাতের দক্ষতা ও নৈপুণ্যতার মধ্য দিয়ে স্বনির্ভর হতে অঙ্গীকারবদ্ধ হলেন। একবিংশ শতাব্দীতে ইন্টারনেটের যুগে মানুষ এখন তাদের অধিকাংশ কেনাকাটা অনলাইনেই করছেন। কিন্তু সেই অনলাইনে কেনাকাটাতে বিশেষ করে বস্ত্র বা জুয়েলারির সামগ্রী কিনতে গিয়ে অনেক সময় মানুষ বিভিন্ন রকম দ্বিধা দ্বন্দ্বের মধ্যে ভোগেন। কারণ ডিজিটাল স্ক্রিনে দেখা সামগ্রী আদৌ সঠিক আসবে কিনা বা তার গুণগতমান কিরকম হবে সেই নিয়ে যথেষ্টই চিন্তায় থাকে ক্রেতারা। তাই সেই সমস্ত দ্বিধাদ্বন্দ্ব দূর করতে এবার অনলাইনের মহিলা
শিল্পী তথা বিক্রেতারা একত্রিত হয়ে বসিরহাট টাউন হল ময়দানে সেল এক্সপ্রেস বসিরহাট নামকরণে ঘরে বাইরে চরিত্র মেলার আয়োজন করলেন। সেখানে চার দিন ব্যাপী এই মেলায় একদিকে যেমন থাকবে হাতের তৈরি পরিবেশবান্ধব জুয়েলারি থেকে শুরু করে চট ও কাপড়ের ব্যাগ। কাঠ কেটে ও মাটি ক্রাফ্ট করে রং করে তৈরি করা বিভিন্ন রকম শোপিস এমনকি বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি থেকে শুরু করে চুড়িদার ও সালোয়ার কামিজ এই মেলায় শোভা পাচ্ছে। এই মেলার ৩৯টি স্টল রয়েছে, সেই স্টল গুলিতে নিজেদের হাতের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন মহিলা শিল্পী তথা বিক্রেতারা। এই চৈত্র মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা মৌপর্ণা ঘোষ ও অর্পিতা দেরা বলেন, “সাত বছরে আমাদের এই প্রদর্শনী পদার্পণ করলো। অনলাইন বা অফলাইন দুই ক্ষেত্রেই সঠিক বিক্রির ফলে আমরা স্বাবলম্বী হতে পেরেছি। মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষদেরও আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি। যাতে তারাও নিজেদের প্রতিভা গুলোকে এখানে উন্মেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আর্থিকভাবে সাবলম্বী হতে পারে।”
মেলায় আসা এক ক্রেতা দেবশ্রী মানিক্য বলেন, “যেভাবে কুটির শিল্পের মাধ্যমে সারা বছর ধরে এরা একাধিক সামগ্রী তৈরি করে স্বাবলম্বী হতে চাইছে। তাদের সহযোগিতা করতে আমরা প্রতিবছর এদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এই মেলায় অংশগ্রহণ করি।” এক শিল্পী অন্বেষক দাঁ বলেন, “সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব সামগ্রী দিয়ে আমরা চুড়ি, ব্যাগ ও হার তৈরি করেছি। কোনোরকম কেমিক্যালের ব্যবহার এখানে করা হয়নি। এগুলি যখন ফেলেও দেওয়া হবে সেটা যেন পরিবেশের কোনো রকম ক্ষতি না করে সেই দিকটাও আমরা লক্ষ্য রেখেছি। চট ও কাপড় উপর ছবি আঁকা যেগুলি হারিয়ে যেতে বসেছিল তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি এবং ক্রেতারাও যথেষ্টই আগ্রহের সাথে এগুলি কেনাকাটা করছেন।”