September 18, 2024, 7:58 am

সংবাদ শিরোনাম

প্রাচীন রসুনের হরেক গুণ

প্রাচীন রসুনের হরেক গুণ

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

রান্নায় যে উপাদানটি কমবেশী ব্যবহার করা হয়েই থাকে সেটি হলো রসুন। রসুনের তীব্র গন্ধের জন্য অনেকেই এই প্রাকৃতিক উপাদানটিকে পছন্দ না করলেও এই উপাদানটির স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে অগণিত। রসুনকে বলা হয়ে থাকে সবচাইতে প্রাচীন ঔষধি উদ্ভিদ জাতীয় মশলা। প্রাচীন এই খাদ্য উপাদান রসুন আবিষ্কৃত হয় প্রায় ৩০০০ বছর পুর্বে। পাস্তুরিকরণের উদ্ভাবক লুই পাস্তুর ১৮৫৮ সালে রসুনের মাঝে অ্যান্টি-ব্যকটেরিয়াল গুণাবলীগুলো সম্পর্কে জানতে পারেন এবং ব্যবহার করেন।

রসুনে রয়েছে প্রয়োজনীয় বেশ কিছু মিনারেলস, যেমন: ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, আয়রন, আয়োডিন, সালফার, এবং ক্লোরিন। দারুণ স্বাস্থ্যগুন সমৃদ্ধ এই প্রাকৃতিক উপাদান রসুনের চমৎকার কিছু স্বাস্থ্যগুন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পরিপাক ক্রিয়া ত্বরান্বিত করে

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রসুন রাখলে খাদ্য পরিপাকের যেকোন সমস্যা দূর হয়ে যাবে। রসুন পরিপাকতন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে বলে প্রতিদিনের খাদ্য পরিপাক স্বাভাবিক থাকে। এমনকি গ্যাস্ট্রিক ক্যানাল এর যে কোন ধরণের সমস্যা, ফুলে যাওয়া অথবা প্রদাহ কমাতেও রসুন দারুণ উপকারী।

ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে

ডায়বেটিস কে বলা হয়ে থাকে ‘সাইলেন্ট কীলার।‘ এই একটি রোগ শরীরে নানান ধরণের বড় বড় রোগের প্রধান কারণ। হৃদযন্ত্রের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা সহ বিভিন্ন ধরণের সমস্যা উচ্চমাত্রায় ডায়বেটিস এর কারণে দেখা দেয়। রসুনের তেল ডায়বেটিস রোগীদের ডায়বেটিসের ফলে তৈরি হওয়া এই সকল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা করে থাকে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়

মানুষের শরীরে মূলত দুই ধরণের কোলেস্টেরল থাকে- এলডিএল (খউখ) এবং এইচডিএল (ঐউখ)। এই দুই ধরণের কোলেস্টেরল এর মাঝে এলডিএল শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রসুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যালিসিন। যা এলডিএল কে অক্সিডাইজ হতে বাধা প্রদান করে থাকে। রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা বেশী থাকলে নিয়মিত রসুন খেলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়।

উচ্চরক্ত চাপ কমায়

রসুন এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা উচ্চরক্ত চাপ কমায় খুব দারুনভাবে। অনেক বেশি উচ্চরক্ত চাপের সময় রসুনে থাকা অ্যালিসিন রক্ত নালিকাকে প্রশস্ত করে দেয়। যার ফলে রক্তের চাপ কমে আসে।

চোখের যত্নে

রসুনের রয়েছে সেলেনিয়াম, কোয়েরসেটিন এবং ভিটামিন-সি। এই সকল উপাদান চোখের যেকোন ধরণের ইনফেকশন অথবা প্রদাহ রোধে কাজ করে।

কানের ব্যথা ভালো করে

কানের ব্যথা ভালো করার ক্ষেত্রে রসুন বহুল প্রচলিত। কারণ রসুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-ফাংগাল এবং অ্যান্টি-বায়োটিক উপাদান। রসুন থেঁতলে এরপর এর সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে খুব সহজেই রসুনের তেল বানিয়ে নেওয়া যায়। এই তেল কানে ব্যাথার ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজে দেয়।

ঠাণ্ডার সমস্যা সারাতে

কাঁচা রসুন ঠাণ্ডা-কাশির সমস্যা সারাতে অনেক বেশী ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ঠাণ্ডার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার সাথে সাথেই কাঁচা রসুনের অন্তত পক্ষে দুইটি কোয়া থেঁতলে খেয়ে ফেলতে হবে। এতে করে ঠাণ্ডার সমস্যা কমে আসবে।

ক্ষত সারাতে সাহায্য করে

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ক্ষত সারানোর জন্য রসুন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। খুবই অল্প পরিমাণ (তিন ফোঁটা) পানির সাথে মিশিয়ে কাঁচা রসুন ক্ষতস্থানে লাগানো হয়। এতে করে ক্ষত দ্রুত সেরে ওঠে।

ব্রণ দূর করতে

পৃথিবীর সকলেই কমবেশি ব্রণের সমস্যায় ভুগে থাকেন। ব্রণের সমস্যা কমাতে এবং দূর করতে রসুনের সাথে মধু, ক্রিম এবং হলুদ গুঁড়া একসাথে মিশিয়ে ব্রণযুক্ত স্থানে লাগাতে হয়। রসুন একটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে থাকে কারণ রসুনে রয়েছে অ্যান্টি-বায়োটিক উপাদান।

শ্বাসকষ্ট কমায়

সিদ্ধ করা রসুনের কোয়া শ্বাসকষ্ট কমানোর বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে দারুণ কাজের। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধের সাথে তিনটি সিদ্ধ রসুনের কোয়া খেলে রোগীদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা অনেকখানি কমে যায়।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

প্রতিদিন রসুন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে কোলোন এবং পরিপাকতন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। রসুন কার্সিনোজেনিক উপাদান তৈরির হার কমিয়ে আনে। একইসাথে টিউমার এবং ব্রেস্ট ক্যান্সার হবার সম্ভবনাও কমিয়ে আনে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর