ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রংপুরের সদর উপজেলার ঠাকুরবাড়ী গ্রামে হিন্দুদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে শুক্রবার নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। রাতে অনেকের পেটে কোনও দানা-পানিও পড়েনি। সকালেও নাস্তা জোটেনি অনেকের।এখানকার শত শত হিন্দু পরিবার এখন আছে নিরাপত্তাহীনতায়। আবারও হামলার আশঙ্কায় চরম আতঙ্কের মধ্যে আছেন তারা।শনিবার সকালে ঘটনাস্থল ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য দুলালী রানীর অভিযোগ, ‘বিকালে হঠাৎ অনেকে মিছিল নিয়ে এসে কোনও কারণ ছাড়াই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে গরু লুট করে নিয়ে গেছে। এমনভাবে তারা হামলা চালিয়েছে যে ঘরের মালপত্র সরানোর মতো সময় পাইনি আমরা। ঘরের আসবাবপত্রসহ হাড়ি-পাতিল সব পুড়ে গেছে। রাতে থাকার কোনও জায়গা নেই, রান্না করে খাওয়ারও কোনও উপায় নেই।’ তবে প্রসাশন সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার রাতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খিচুড়ি দেওয়া হয়েছে।
পুড়ে যাওয়া ধান
হামলার পর ভয়ে অনেকে গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন। পুলিশের আশ্বাসের পর কেউ কেউ বাড়িতে ফিরলেও আবার হামলা হতে পারে এই আশঙ্কায় অনেকে গ্রামে ফেরেনি। শনিবার সকালেও পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে।
পুড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি
শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রংপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)জিয়াউর রহমান। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ইউএনও বলেন, ‘তাদের বাড়িঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’
ধ্বংস্তূপ থেকে শনিবারও ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে
ঠাকুরবাড়ি গ্রামের ছেলে টিটু রায়ের যে ফেসবুক স্ট্যাটাসকে ঘিরে এত উত্তেজনা তা অনেকে শুনেছেন, কিন্তু দেখেননি। টিটু রায় থাকেন নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লায়। সেখানকার একটি গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করেন। তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে অথবা অন্য কোনোভাবে ওই স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার ও তদন্তের দাবি জানান গ্রামবাসী ভূপেন সরকার। একইসঙ্গে যারা উস্কানি দিয়ে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করেছে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।