ঠাণ্ডা পানির খারাপ অথবা ভালো দিক
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ঠাণ্ডা পানি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বলে, গরম বা ঠাণ্ডা পানি হজমে প্রভাব ফেলে।
পানির অপর নাম জীবন হলেও সঠিক তাপমাত্রায় পানি পান না করলে শরীরের জন্য ভালো নাও হতে পারে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে ঠাণ্ডা পানি পানের কুফলগুলো জানানো হল।
পানি প্রাকৃতিক অনুঘটক: চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, ঠাণ্ডা পানি যকৃতে প্রভাব ফেলে। খাবারের পর ঠাণ্ডা পানি গ্রহণ করলে হজমে সমস্যার সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার ঠাণ্ডা পানি খাবার সময় গ্রহণ করলে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইটে আনতে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এই তাপমাত্রা বজায় রাখতে হজম প্রক্রিয়া থেকে রক্ত সরবারহ সরিয়ে রাখতে হয় শরীরকে। যা স্বাভাবিক হজম ব্যবস্থায় বিঘœ ঘটায়।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, ঠাণ্ডা পানি পান করলে গ্যাসট্রিক রস ও অন্যান্য অন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করার সাধারণ কার্যকারিতা বিপর্যস্ত হয়।
ঝুঁকি: ২০০১ সালের একটি গবেষণা অনুযায়ী, ঠাণ্ডা পানি পান করার সঙ্গে মাইগ্রেইনের ব্যথা হওয়া জড়িত। নিয়মিত ঠাণ্ডা পানি পান করলে ‘একালেইসিয়া’ দেখা দিতে পারে।
প্রাচীন চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসারে, গরম খাবারের সঙ্গে ঠাণ্ডা পানি পান করলে স্বাভাবিক হজম প্রক্রিয়া ভারসাম্যহীন হয়ে জটিলতা তৈরি করে।
ঠাণ্ডা পানি পানের সুফল: ব্যায়ামের সময় ঠাণ্ডা পানি পান করা শরীরে অতিরিক্ত তাপ উৎপাদন হওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীরচর্চা বেশি সফল হয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মূল কারণ হল ঠাণ্ডা পানি ভেতরের তাপমাত্রা কমায়। তবে মনে রাখতে হবে, এখানে ঠাণ্ডা পানির কথা বলা হচ্ছে, বরফ পানি নয়।
ওজন কমাতে: ধারণা করা হয়, ঠাণ্ডা পানি শরীরের বাড়তি ক্যালরি কমায়। কারণ ঠাণ্ডা পানির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে শরীরকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়।
পানি ঠাণ্ডা বা গরম যেমনই হোক, তা সব সময়ই চিনি সমৃদ্ধ পানীয় বা জুসের চেয়ে শরীরের জন্য ভালো
ঠাণ্ডা না গরম কোনটা বেশি ভালো: প্রতিটা মুদ্রার যেমন এপিঠ-ওপিঠ থাকে, ঠাণ্ডা পানিরও তেমন ভাল ও খারাপ দিক আছে।
ঠাণ্ডা পানি দ্রুত তৃষ্ণা মেটায় বলে কম গ্রহণ করা হয় ফলে শরীরে পানির চাহিদা পূরণ হয় না। ফলে দ্রুত তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
অন্যদিকে কুসুম গরম পানি পানে তুলনামূলক তৃষ্ণা কম লাগে। এজন্য পানি কম খাওয়া হয়। যা পরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি করতে পারে।
হৃদযন্ত্রের গতি কমায়: গবেষণা অনুযায়ী, ঠাণ্ডা পানি হৃদযন্ত্রের গতি কমায়। ‘টেন্থ ক্রানিয়াল নার্ভ’ বা ‘ভেগাস নার্ভ’কে উত্তেজিত করে ঠাণ্ডা পানি। এই স্নায়ূ প্রধান স্নায়ূতন্ত্রের একটি অংশ যা হৃদযন্ত্রের গতি সমন্বয় করে।
যা করা ভালো: ঠাণ্ডা, গরম বা সাধারণ- কেমন তাপমাত্রার পানি পান করবেন তা নির্ভর করে শরীরের ওপর। একেক জনের শরীরে এক এক ভাবে কাজ করে। ভারী খাবারের পরে কুসুম গরম বা সাধারণ তাপমাত্রার পানি খাওয়া উচিত।
আর শরীরচর্চার সময় ঠাণ্ডা পানি ভালো। তবে কখনই বরফ শীতল পানি খাওয়া ঠিক নয়।