ভারত আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য কোনও পরামর্শ দিলে তা এ অঞ্চলের উপকারে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘ভারত আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য কিছু বলে থাকলে তা নিশ্চয়ই এ অঞ্চলের উপকারে আসবে।’
গত ১৮ আগস্ট ভারতের সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনে শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হলে, তা ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষেই সুখকর হবে না বলে মনে করে নয়াদিল্লি। একাধিক স্তরের বৈঠকে বাইডেন প্রশাসনকে এ কথা জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
তবে আনন্দবাজারের ওই প্রতিবেদনে ভারত কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তার বা দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য নেই।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হয়ে পড়লে ভূরাজনৈতিক দিক থেকে তা ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষেই সুখকর হবে না। কারণ এতে জামায়াতে ইসলামীর মতো সংগঠনের ক্ষমতা বাড়বে। বাংলাদেশে জামায়াতের মতো সংগঠন শক্তিশালী হলে, ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা সমস্যার মুখে পড়বে।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে আলোচনা সমালোচনা।
ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে ২২ আগস্ট ঢাকা ছাড়ছেন প্রধানমন্ত্রী
আগামী ২৪ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ১৫ তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী ২২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা ছাড়ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আগামী ২২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী রওনা দেবেন। এ সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ব্রিকস সদস্য দেশগুলো ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানগণ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানগণ উক্ত সভায় অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য হবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে এবার ব্রিকসের বাংলাদেশের সদস্য পদ পাওয়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গত ২ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে অনুষ্ঠিত ফ্রেন্ডস অফ ব্রিকস পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আমি ভার্চুয়ালী যোগদান করে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেছিলাম। সেখানে আমি ব্রিকস সদস্য দেশগুলোকে তাদের ব্যয় সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশসমূহের কাছে হস্তান্তর এবং উদ্ধৃত্ত অর্থ উন্নয়নশীল দেশসমূহে বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছিলাম। এ বছর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসে যোগদানের বিষয়ে আমাদের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছি।‘
মোমেন বলেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা এবং উন্নয়নমূলক সহযোগিতার লক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়া থেকে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া হতে ইন্দোনেশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য হতে তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহারাইন, ইরান, সৌদি আরব, এবং সিরিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের এ যাবত প্রায় ২০ টিরও বেশি দেশ ব্রিকস জোটে যোগদানের আগ্রহ ব্যক্ত করেছে।
বাংলাদেশ ২০২১ সালে ব্রিকসের অর্থনৈতিক বাতায়ন নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সদস্যপদ লাভ করে বলে জানান মন্ত্রী। সম্মেলনে বেশ কয়েকজন রাষ্ট্র প্রধানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।