জলপাই-সূর্যমুখীর তেল উপকারি বেশি
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
জলপাই (অলিভ), সূর্যমুখী (সানফ্লাওয়ার) সরিষা (ক্যানোলা), সয়াবিন নাকি ভুট্টার তেল- কোনটি স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী? বাজারে অনেক তেলের ভিড়ে অনেক সময়ই তেল পছন্দে করতে দোটানায় পড়তে হয়। তেলের স্বাদ-বৈচিত্র্যের কারণে সত্যিই তা বাছাই করা দোটানার বিষয় হয়ে ওঠে।
এ সমাধান দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়টির শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও গবেষক ড. শিখা শর্মা বলেন, স্বাদের ভিন্নতার স্বার্থে তেল পরিবর্তন ভোক্তার শরীরে প্রয়োজনীয় চর্বি দ্রাবক (ফ্যাটি অ্যাসিড) সরবরাহ করে। কোনো তেল এককভাবে প্রয়োজনীয় চর্বি দ্রাবক বা আনুপাতিক চর্বি দ্রাবক সরবরাহ করতে পারে না।
তিনি বলেন, মানুষের শরীরের জন্য দরকার একক-অপরিপৃক্ত, বহু-অপরিপৃক্ত এবং পরিপৃক্ত চর্বি দ্রাবকের মিশ্রণ। আর এটা শরীরে সরবরাহ হয় হরেক রকমের তেল ভোজনের মাধ্যমে।
সম্প্রতি ‘ভিটামিন ই’ সমৃদ্ধ সরিষা, সয়াবিন ও ভুট্টার মতো তেলে স্বাস্থ্য উপকারী উপাদান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ প্রশ্নের পক্ষে আরও জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করেছে নতুনভাবে পরিচালিত গবেষণা।
নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ‘ফিনবার্গ স্কুল অব মেডিসিন’ পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ভিটামিন ই’ সমৃদ্ধ সরিষা, সয়াবিন ও ভুট্টার তেল ভোক্তার ফুসফুসে প্রদাহজনিত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এমনকি এ ধরনের তেল শ্বাস রোগও ছড়াতে পারে ভোক্তার শরীরে।
গবেষণায় বলা হয়, ‘ভিটামিন ই’ সমৃদ্ধ এসব তেলে গামা-টোকোফেরল নামে একমন এক ধরনের উপাদান রয়েছে যেটা ভোক্তার ফুসফুসে ভয়ংকরভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অপরদিকে ‘ভিটামিন ই’ সমৃদ্ধই জলপাই ও সূর্যমুখী তেলে আলফা-টোকোফেরল নামে এমন এক ধরনের উপাদান রয়েছে যেটা ভোক্তার উপকার করে বেশি।
নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির মেডিসিন ইন অ্যালার্জি/ইমিউনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও গবেষণা প্রতিবেদনের জ্যেষ্ঠ লেখক জোয়ান কুক-মিলস বলেন, সয়াবিন, সরিষা ও ভুট্টার তেলে গামা-টোকোফেরল নামের উপাদানটি যে ফুসফুসের সংক্রমণের জন্য দায়ী এটা এবারই প্রথম জানা গেল। তবে, জলপাই ও সূর্যমুখী তেল ভোক্তার শ্বাসরোগের হার অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
কুক-মিলস দাবি করেন, সমীক্ষায় দেখা গেছে, যেসব দেশে জলপাই ও সূর্যমুখী তেলের ভোক্তা বেশি সেসব দেশে শ্বাসরোগীর হার কম। অপরদিকে যারা সয়াবিন, ভুটা ও সরিষার তেল ব্যবহার করেন, তাদের মধ্যে শ্বাসরোগীর সংখ্যা বেশি।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, আলফা-টোকোফেরল সমৃদ্ধ জলপাই ও সূর্যমুখী তেল গ্রহণের ফলে শ্বাসরোগ কমে আসে।
বার্মিংহামের আলবামা ইউনিভার্সিটির ‘কারডিয়া’ গবেষণা কেন্দ্রের ৪৫২৬ জনের ওপর গবেষণা শেষে দেখা গেছে, বেশি পরিমাণ আলফা-টোকোফেরল গ্রহণ করলে ১০ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত ফুসফুসের সংক্রমণ কমে যায়।
গবেষকরা বলেন, তেল গ্রহণের ক্ষেত্রে ভোক্তাকে অবশ্যই নিজের স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে। স্বাদের জন্য স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো তেল ব্যবহার না করাই বহুদিন বেঁচে থাকতে ইচ্ছুকদের কাজ। বয়স্ক নারীদের বেশি বেশি লিচু খেতে হবে
খুবই সুস্বাদু ও দৃষ্টিনন্দন ফল হচ্ছে লিচু। বাংলাদেশেই রয়েছে নানা প্রজাতির লিচু। অতি উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়ামের বসবাস এই ফলে। ক্যালসিয়াম এমন একটি খাদ্য উপকরণ, যা হাড়, দাঁত, চুল, ত্বক, নখের জন্য ভীষণ জরুরি। বয়স্ক নারী যাঁদের মেনোপোজ হয়ে গেছে, তাঁদের জন্য লিচু যথেষ্ট উপকারী। কারণ এসব নারীদের অতিমাত্রায় ক্যালসিয়ামের অভাব হয়। পরিণতিতে দাঁত, হাড়, চুল, ত্বক, নখ দুর্বল হয়ে যায়।
অতি উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘সি’র আশ্রয়স্থল এই ফল। ভিটামিন ‘সি’ মৌসুমি অসুখগুলো থেকে রক্ষা করে, ত্বক, চুলের পুষ্টি জোগায়। প্রচন্ড ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। এতে রয়েছে নিয়াসিন ও রিবোফ্লাভিন নামক ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স। ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স শরীরের জ্বালা পোড়া, দুর্বলতা দূর করে।
লিচুর ভিটামিন ‘এ’ রাতকানা কর্ণিয়ার অসুখ, চোখ ওঠা, চোখের কোনা ফুলে লাল হয়ে যাওয়া, জ্বরঠোসা (জ্বরের পরে ঠোটের দুই কোণাতে বা উপরে নিচে ঘা হয়), জিহ্বার ঘা, জিহ্বার চামড়া ছিলে যাওয়া এই রোগগুলো প্রতিরোধ করে। লিচু, তরমুজ, কাঁঠালÑএগুলো গরম ফল। বেশি খেলে পেট গরম হয়ে ডায়রিয়া হয়ে যাবে। তাই নিয়মিত (যত দিন লিচু পাওয়া যায়) ও পরিমিত খাওয়াই শ্রেয়। আর অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য অতিরিক্ত মিষ্টি লিচু পরিহার করাই উত্তম।